শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ - মহামারী রূপ ধারণ করেছে ডায়াবেটিস

প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ (বৃহস্পতিবার)। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ভালো থাকুন, ডায়বেটিসকে পরাজিত করুন’। বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস মহামারী রূপ ধারণ করায় এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
গত বছরের নভেম্বরে ডায়াবেটিসকে ‘বৈশ্বিক মহামারী’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের ভাষ্য মতে, এ রোগে প্রতি সেকেন্ডে বিশ্বে একজনের মৃত্যু হয়। সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বছরে এ রোগের প্রকোপে ২০১৫ সালে ৫০ লাখ মানুষ মারা যায়। পৃথিবীতে সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের অধিকাংশই আমাদের মতো গরিব এশিয়ান ও আফ্রিকান দেশের।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, বিশ্বের বহু দেশে এখন ডায়াবেটিস মহামারী রূপ নিয়েছে। এটা প্রতিরোধ করা খুবই জরুরি।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে মহামারী আকারে ডায়াবেটিস ছড়িয়ে পড়ছে। দেশে এ মুহূর্তে ৮০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে ঠিক কত লোক এ রোগে আক্রান্ত সে পরিসংখ্যান কারো কাছে নেই। সতর্ক না হলে এই সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী আমাদের হার্ট, কিডনি, চোখ, দাঁত, নার্ভ সিস্টেমসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস হতে পারে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে। শিশুদের অতিরিক্ত কম্পিউটারনির্ভরতা, শারীরিক খেলাধুলার প্রতি অনীহা, ফাস্ট ফুডের প্রতি ঝোঁক শিশুদের ডায়াবেটিস ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। একজন মা যখন বেশি ওজনের সন্তান গর্ভে ধারণ করেন তখন তার ডায়বেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান বলেন, স্বাস্থ্যসেবার দিক থেকে ডায়াবেটিক সমিতি পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ একটি মঞ্চ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্ব^লিতে বাংলাদেশ জাতীয় একটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ নীতিমালা করার অঙ্গীকার করেছিল। নীতিমালাটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। দেশের প্রকৃত ডায়াবেটিসের চিত্র তুলে ধরতে ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে দেশব্যাপী আক্রান্ত রোগীদের নাম নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ডায়াবেটিস যে হারে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে করে এ সম্পর্কে সচেতন করতে পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় সংযোজন করা প্রয়োজন। এতে ছাত্রছাত্রীরা সুস্থ জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারবে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, কোনো রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে তার চিকিৎসা ডায়াবেটিসমুক্ত রোগীর তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি ব্যয়বহুল। ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস, কায়িক পরিশ্রম কমে যাওয়া এবং শহরাঞ্চলে খেলাধুলার সুযোগ সংক্ষিপ্ত হওয়ায় শিশু-কিশোররাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিসমুক্ত থাকার জন্য ফাস্ট ফুড, জাঙ্কফুড পরিহারে পরামর্শ দেন তারা। এছাড়া এ মহামারী এড়ানোর জন্য শৃঙ্খলিত জীবনযাপনে সবাইকে আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে প্রগতিশীল চিকিৎসক ইউনিয়নের সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার সাধারণের জীবন রক্ষার্থে ডায়বেটিস প্রতিরোধে সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সচেতনতামূলক কর্মকা- হিসেবে ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয় জাতীয় খাবারের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা, এ সংক্রান্ত নিবন্ধ পাঠ্যপুস্তকে রাখা, ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয় জাতীয় খাবারের মোড়কের গায়ে চর্বির পরিমাণ ও ক্যালরি ভ্যালু উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ৮টায় শাহবাগ থেকে ওসমানী মিলনায়তন পর্যন্ত পদযাত্রা। সকাল ৮টা থেকে ওসমানী মিলনায়তন সংলগ্ন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির স্টলে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয় এবং সকাল ৯টায় বারডেম মিলনায়তনে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন