বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মধুপুরে পঞ্চম শ্রেণীর শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৮, ৭:৩৯ পিএম

আবারও ধর্ষণ নামক কালো থাবার কবলে পড়লো টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার নিবিড় শান্ত পাহাড়ি বুনো এলাকা। চলন্ত বাসে রূপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রেশ কাটতে না কাটতেই পঞ্চম শ্রেণীর শিশু লিজা খাতুনকে (১১) নির্মম, নির্দয়ভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। এতেই ক্ষান্ত হয়নি পাষণ্ড ধর্ষক নরপশুরা। ধর্ষণের পর শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত করে আলামত নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার চেষ্টাও চালায় তারা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের গাছাবাড়ী এলাকায়।
স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে লিজা তার মাকে বলে গোসল করতে যাবে। বরাবরের মতো মা’ও তার কথায় সায় দেয়। দুরন্ত, চঞ্চল শিশু লিজা ছুটে চলে গোসলের উদ্দেশ্যে। বাড়ির অদূরেই জলাভূমি। সেখানেই গোসল করবে লিজা। ক্ষণে ক্ষণে কয়েক ঘণ্টা পেড়িয়ে যায়। লিজা আর বাড়ি ফেরেনা। অজানা আশঙ্কায় কেপে উঠে লিজার মায়ের মন। দিক-বিদিক খুঁজতে থাকে লিজাকে। কোথাও লিজার ছায়া দেখতে পায়না তার মা। এ বাড়ি ও বাড়ি করে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে লিজাকে খুঁজে না পাওয়ার খবর। রাতে লিজার নিষ্পাপ মুখের নি®প্রাণ দেহ খুঁজে পাওয়া যায় বাড়ির কাছের বাঁশ ঝাড়ে। হিংস্র হায়েনারা তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে শিশু লিজাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তার বিকৃত দেহকে এখানেই ফেলে রাখে। মুহূর্তেই মধুপুর বনের নীরব নিস্তব্ধ এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে স্বজনদের আর্তচিৎকারে। প্রলাপ বকতে থাকে লিজার পিতা-মাতা। অতি আদরের লিজাকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তারা। আগত অতিথি ও সুহৃদরাও বার বার তাদের অশ্রুসিক্ত নয়ন মুছে যাচ্ছেন নিজের অজান্তে।
লিজার চাচা আব্দুল মজিদ বলেন, আমার ভাই মিজানুর রহমানের মেয়ে লিজা সবার আদরের ছিল। সে গাছাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। পড়ালেখায় ভাল থাকায় আদরের মাত্রাও ছিল বেশি। সারাদিন তাকে খুঁজে না পেয়ে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। রাত ৯টার দিকে লিজাকে পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এমন নির্দয়ভাবে যারা লিজাকে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিয়ে মধুপুর গড় এলাকাকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবি জানান লিজার চাচাসহ এলাকাবাসী।
মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, সমাজে এধরণের অপরাধ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আইনের দুর্বলতা ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে না চলার কারণে এ ধরণের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটে থাকে। প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করলে এ ধরণের অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল হক বলেন, লিজার লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে দুর্বৃত্তরা ধর্ষণের পর লিজাকে হত্যা করে এখানে ফেলে রাখে। ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন