রোজাদার ভুল করে কিছু ভক্ষণ করলে বা পান করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায় না। এমতাবস্থায় রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে, রোজাটি ভেঙ্গে ফেলা ঠিক নয়। কারণ সে ইচ্ছাকৃতভাবে বা রোজার বিধান লংঘন করবার উদ্দেশ্যে নিয়ে পানাহার করেনি। মূলত : যে ভুল করে পান বা আহার করেছে। হাদীস শরীফে এই ধরনের খাওয়া ও পান করাকে আল্লাহ পাকের দেয়া রিজিক বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : “সে ব্যক্তি ভুল করে কিছু খেল বা পান করল, সে যেন রোজা না ভাঙ্গে। কেননা, সে যা কিছু খেয়েছে বা পান করেছে, উহা এমন এক রিজিক যা আল্লাহ তায়ালা তাকে দিয়েছেন। ভুলক্রমে পানাহারকারী ব্যক্তির জন্য নির্দেশ
হলো এই যে, সে রোজা ভাঙ্গবে না। বরং সে রোজা পূর্ণ করবে। সহীহ বুখারী শরীফে সংকলিত অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, তার রোজা যেন সে পূর্ণ করে। উপরোক্ত হাদিসে ভুলবশত: পানাহারকারীকে রোজাদার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং রোজাদার তার রোজা পূর্ণ করবে এমনটিই স্বাভাবিক ব্যাপার। হাদীস শরীফে উম্মে ইসহাক (রা:) যুল ইয়াদাইন (রা:)-এর একিট ঘটনা এবাবে বিবৃত হয়েছে সে তারা একদিন রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর খেদমতে উপস্থিত ছিলেন। তখন একপাত্র সরীদ (এক ধরনের খাবার) উপস্থিত করা হলো। তখন তিনিও রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর সাথে উহা ভক্ষণ করলেন। তার পর উম্মেন ইসহাকের মনে পড়ল যে সে রোজাদার। যুল ইয়াদাইন ব্যাপারটি জানতে পেরে তাকে লক্ষ্য করে বললেন, ভক্ষণ করে পরিতৃপ্ত হওয়ার পর এখন তোমার মনে পড়েছে যে, তুমি রোজাদার? মূল ঘটনাটি জানতে পেরে রাসূলুল্লাহ (সা:) উম্মে ইসহাককে লক্ষ্য করে বললেন : তুমি তোমার রোজা পূর্ণ কর। কেননা, তুমি যা ভক্ষণ করেছ উহা তো একটি রিজিক মাত্র, যা আল্লাহপাক তোমার পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। এতে সুস্পষ্ট বুঝা যায় যে, ভুলক্রমে পানাহার করলে রোজা নষ্ট হয় না। বরং সে রোজাকে পরিপূর্ণ করাই সমীচীন। এই লক্ষ্য মাত্রাকে সামনে রেখেই ইমাম আবু হানীফা (রহ:), ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ:) ইমাম শাফেঈ (রাহ:), ইমাম সুফিয়ান সওরী (রাহ:) এক বাক্যে বলেছেন যে, সে ব্যক্তি ভুল বশত : কিছু খায় বা পান করে, তবে সে যেন তার রোজা পূর্ণ করে। এ রোজা তাকে কাজা করতে হবে না এবং এর জন্য কোন কাফফারা ও দিতে হবে না। চাই ভক্ষণকৃত বস্তুর পরিমাণ কম হোক অথবা বেশী হোক, এতে কোনই তারতম্য দেখা দিবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন