শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইরানের সাথে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবে চীন

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সৃষ্ট অনুকূল পরিস্থিতিতে শি জিন পিংয়ের আশাবাদ

প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : তেহরান সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং গত শনিবার বলেছেন যে, তার দেশ ইরানের সাথে সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় উন্মুক্ত করতে চায়। এ ব্যাপারে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার প্রেক্ষিতে ইরানের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ার পর চীন ও ইরানের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। তনি বলেন, বর্তমান অনুকূল সময়ের সদ্ব্যবহার করে ইরানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অধিকতর উন্নত স্তরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে চীন প্রস্তুত রয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদসংস্থার সূত্রে জানানো হয়েছে, নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন ও ইরান। মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে বর্তমানে ইরানে অবস্থান করছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। ১৯ জানুয়ারি এ সফর শুরু করেন জিন পিং। এরই মধ্যে তিনি সউদি আরব ও মিশর সফর করেছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানায়, শনিবার দুই দেশের মধ্যে ১৭টি চুক্তি সাক্ষর হয়। যার মধ্যে অতীতের সিল্ক রোড ট্রেড রুট পুনরায় শুরু করা এবং শান্তিপূর্ণ কাজে পারমানবিক শক্তি ব্যবহারে পরস্পরকে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তিও রয়েছে। দিন শেষে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গেও প্রেসিডেন্ট জিন পিং দেখা করবেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্ব ছয় শক্তির সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্স) পরমাণু চুক্তির পর ১৬ জানুয়ারি ইরানের উপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়া হয়। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর বিশ্বনেতাদের মধ্যে জিন পিংই প্রথম ইরান সফরে গেলেন। দীর্ঘ ১৪ বছর পর চীনের কোনো প্রেসিডেন্টের এটা প্রথম ইরান সফর। টেলিভিশনে সরাসরি প্রচারিত দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট শি ইরান সফরে আসায় আমরা খুব খুশি। চীন এবং ইরান আগামী ১০ বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছয়শ’ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই দেশ কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে একমত হয়েছে। এছাড়া ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান ও ইয়েমেনের সন্ত্রাসী ও চরমপন্থিদের নির্মূলে দুই দেশ ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করতে রাজি হয়েছে।
অপর এক খবরে বলা হয়, চীনের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক জোরদারকে স্বাগত জানিয়ে তেহরান বলেছে, আগামী এক দশকে বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ ৬শ’ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বলে গত শনিবার জানানো হয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক খবরে। এদিকে, এক প্রতিবেদনে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ২০১৪ সালে তেহরান ও বেইজিংয়ের মধ্যে ৫২ বিলিয়ন (৫ হাজার ২শ’ কোটি) ডলারের বাণিজ্য হলেও বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য কমে যাওয়ায় ২০১৫ সালে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য কমেছে। এর আগে একদিনের সফরে গত শুক্রবার ইরানের রাজধানী তেহরানে পৌঁছান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। ১৪ বছর পর এবারই প্রথম তেহরানের মাটিতে কোনো চীনা প্রেসিডেন্টের পা পড়লো। একই দিন ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয় জাপান। তেহরান পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো পুরোপুরি মেনে চলছে বলে গত ১৬ জানুয়ারি নিশ্চিত করে জাতিসংঘের আনবিক শক্তি সংস্থা। এরপর থেকেই ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। এপি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন