শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

হারিয়ে যাচ্ছে নয়নাভিরাম ছাতরা বিল

প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এমএ ছালাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে ঃ পর্যটনে অপার সম্ভাবনাময় এলাকা নওগাঁর মহাদেবপুরের নয়নাভিরাম ছাতরা বিল হারাতে বসেছে তার জৌলুস। প্রতি ঈদসহ সারা বছর শত শত নারী-পুরুষ সেখানে ভিড় জমাতেন ভ্রমণ পিপাসা মেটানোর জন্য। হাতের নাগালের মধ্যে কোলাহলমুক্ত ও নিরাপদ স্থানে অপরূপ সাজে দাঁড়িয়ে থাকা নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। বিলের চারপাশের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা যেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে রেখেছিল। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা নারী-পুরুষ ও শিশুরা মেতে উঠতেন নির্মল আনন্দ-উল্লাসে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফুটে তোলা অপরূপ সৌন্দর্যময় এ বিল নওগাঁ জেলা সদর থেকে ৩৫ কিঃ মিঃ এবং মহাদেবপুর উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিঃমিঃ পশ্চিম দিকে অবস্থিত। এ বিলের পশ্চিম প্রান্তের মাঝামাঝি স্থান থেকে শুরু হয়েছে নিয়ামতপুর উপজেলা। যোগাযোগ ব্যবস্থা চমৎকার। নিকটবর্তী নওগাঁ, জয়পুরহাট, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঠিক মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত এ বিল এলাকায় যাতায়াত করা যায় সহজেই। এ কারণে ঈদ ছাড়াও বছরের অন্যান্য দিনগুলোতেও ছাতরা বিল এলাকা সরগরম হয়ে থাকতো ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায়। তারা ঈদসহ বছরের অবসর সময়ে আনন্দ নিতে এ বিল এলাকায় ছুটে আসতেন বেড়াতে। বিলের উত্তর এবং দক্ষিণ দিকে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়েই রয়েছে জলাভূমি। বিলের মাঝ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে কয়েক কিলোমিটার লম্বা পাকা সড়ক। সড়কের মধ্যে রয়েছে পর পর দু’টি ব্রিজ। দেখে মনে হবে যেন বিশাল কোন সমুদ্র-সৈকত এলাকা। বিলের চারপাশেই গড়ে উঠেছে অনেক নিভৃত পল্লী এবং গ্রামীণ হাটবাজার। এসবের মধ্যেই প্রকৃতির অপরূপ সাজ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এ বিল। বিলের পানিতে মনের আনন্দে ডিঙ্গী নৌকা ভ্রমণে মেতে উঠতেন দর্শনার্থীরা। কিন্তুু সেই বিলে এখন আর নেই প্রাণের কোন স্পন্দন। ভ্রমণ পিপাসুদের তেমন আর দেখাই মেলে না। এখন যেন খাঁ খাঁ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে এক সময় সরগরম থাকা সেই বিল এলাকা। যে বিলকে ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা গড়ে উঠেছিল, সেই বিল এখন মরে গেছে। যে বিলে সারাবছর পানি থৈ-থৈ করতো, সেই বিলে এখন পানি নেই। পানি শুকিয়ে এখন পরিণত হয়েছে মরাখালে। পানি থৈ থৈ করার কারণেই ফুটে ওঠে এ বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। পানি অভাবে মরাখালে পরিণত হওয়া শুকনো এ বিল দেখতে ছুটে আসেন না কোন দর্শনার্থী। প্রতিবেশী দেশ ঘেঁষা এসব এলাকায় পানির চরম টান পড়েছে দেশটির পানি আগ্রাসনের কারণে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিপুল সম্ভাবনাময় এ এলাকাকে পর্যটক আকৃষ্ট করতে হলে স্থায়ীভাবে পানি ধারণ করে রাখার মত টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য সরকারী উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। এতে এ স্থান হবে সত্যিকারের দর্শনীয় জায়গা, যেখান থেকে দর্শনার্থীরা দেখতে পান সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের অপরূপ মুহূর্ত। এ রকম নয়নাভিরাম পরিবেশে আসতে সকলের মন নাড়া দেয় সবসময়ই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন