রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

উন্মুক্ত বিলে হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নওগাঁয় উন্মুক্ত বিলে হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন এক বেকার যুবক। সম্রাট নামের আত্মপ্রত্যয়ী এই যুবক তাঁর সংসার থেকে অভাবের কালোছায়া দুর করে এনেছেন সুখ আর স্বাচ্ছন্দ। অনেকেই তার এই উদ্যোগকে অনুসরন করে তার মত স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর।
নওগাঁ সদর উপজেলার ভর অঞ্চল বলে পরিচিত সরিজপুর গ্রামে ছোট কাল থেকে বাবার অক্ষমতার কষ্টের বিবর্ণ মুখ তাকে ব্যথিত করেছে। তাই সর্বক্ষন চিন্তা কিভাবে কি করে তাদের সংসারের অভাব দূর করা যায়।
এক পর্যায় এখন থেকে পাঁচ বছর আগে বাড়ির পাশের বিলেই মাত্র ২শ হাঁসের বাচ্চা দিয়ে উন্মুক্তভাবে শুরু করেন হাঁস চাষ্। সকাল থেকে হাঁসগুলো বিলে নিয়ে যাওয়া হয়। সারাদিন কখনও পানিতে কখনও ডাঙ্গায় হাঁস চড়তে থাকে। সম্রাটের সাথে দিনভর হাঁস দেখাশুনা করেন তার বাবা। সন্ধ্যা নেমে আসার সাথে সাথে বিলের এক পাশে জাল দিয়ে ঘেরা এক জায়গায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে হাঁসগুলোর রাত্রিবাসের ব্যবস্থা। সকাল হলে আবার বিলে নেয়া হয়। এভাবেই দিন যায়।
বর্তমানে সম্রাটের এই উন্মুক্ত হাঁস খামারে তিনটি পর্যায়ে হাঁস রয়েছে। এক ধাপে রয়েছে বাচ্চা হাঁস ১ হাজারটি। এখন ডিম দিচ্ছে এমন হাঁস রয়েছে একটি পর্যায়ে ৮শ এবং আরেকটি পর্যায়ে ২শ। প্রতিদিন ডিম উৎপাদিত হচ্ছে কমপক্ষে ৮শ। তার এই হাঁসখামাড়ে মোট ৫জন লোক নিয়মিত কাজ করে। তাদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এখানে। তারা প্রতিমাসে আয় করে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। খাওয়া খামাড় মালিকের। যেহেতু বিলে চড়ানো হচ্ছে বলে হাঁসেদের খাওয়ার ব্যাপারে তেমন কোন খরচ নেই। কেবলমাত্র একদিন বয়সের বাচ্চা কেনা, ঔষধপত্র, লোকবলের খরচ। কাজেই তার এই খামাড় অত্যন্ত লাভজনক।
তার খামাড়ের ডিম নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন। আবার খামাড় থেকেও পাইকাররা এসে ডিম কিনে নিয়ে যান। সম্রাট গড়ে প্রতিটি ডিম বিক্রি করেন ৭ টাকায়। প্রতিদিন ৮শ ডিম বিক্রি হয় ৫ হাজার ৬শ টাকায়। সেই হিসেবে মাসে ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। বছরে ২০ লাখ ১৬ হাজার টাকা। অপরদিকে বছরে কমপক্ষে ১ হাজারটি হাঁস বিক্রি করেন। প্রতিটি ৩শ টাকা হিসেবে সেখান থেকে আসে ৩ লাখ টাকা। সম্রাট জানান বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে তাঁর নীট লভ্যাংশ থাকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ উত্তম কুমার জানিয়েছেন বর্তমান সরকার বেকারত্ব দুর করার জন্য নানামুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুবকদের উৎসাহিত করছে। সে ক্ষেত্রে সরিজপুর গ্রামের সম্রাটের হাঁস খামাড় একটি অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। কেবল সরকারী চাকুরীর আশায় না ঘুরে এভাবে আত্মপ্রত্যয়ী অনেকেই কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন