শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ওলি যাচ্ছেন : চীনের কাছে কী প্রত্যাশা নেপালের?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আজ বেইজিং সফরে যাচ্ছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী খাদগা প্রাসাদ ওলি। ভারতের সাথে সম্পর্কটা স্থিতিশীল পর্যায়ে আসার কারণে চীনের সাথে দেন দরকার করাটা তার জন্য সহজ হবে। চীনের সাথে এক সময় যে সম্পর্কটা অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিল, সেটাতেই স¤প্রতি কিছুটা ভাটা পড়েছে।
নয়াদিল্লী সফরের কয়েক মাস পরে চীন সফরে যাচ্ছেন ওলি। এর মাঝে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উচ্চ পর্যায়ের নেপাল সফর সাফল্যের সাথে শেষ করেছেন। এতে করে নেপাল-ভারত সম্পর্কটা আবার আগের গতি ফিরে পেয়েছে। নেপালের সংবিধান দিবস হলো ১৯ সেপ্টেম্বর। এর আগেই সেখানে ভারতের বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদি। নেপালের সংবিধানের প্রতি ভারতের এটা পরোক্ষ সমর্থন। অথচ ভারত এক সময় এই সংবিধান কার্যকরের প্রক্রিয়াটাই ব্যাহত করতে চেয়েছিল।
নেপালের সংবিধান সংশোধন প্রচেষ্টা ঠেকাতে ২০১৫ সালে অর্থনৈতিক অবরোধ চাপিয়ে দিয়েছিল ভারত। ভারতের এই আচরণ নেপালে প্রবল ভারত-বিদ্বেষী মনোভাবের জন্ম দেয়। আর এই মনোভাবকে সফলভাবে কাজে লাগিয়েই ক্ষমতায় আবারও ফিরে আসেন ওলি। ভারত যখন অবরোধ আরোপ করেছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ওলি। নেপালবাসী তাকে দেখেছে ভারতের বিরুদ্ধে শক্তি নিয়ে দাঁড়াতে। একইসাথে উত্তরের প্রতিবেশী চীনের সাথে দূরত্বও কমিয়ে এনেছিলেন তিনি। চীন সে সময় নেপালকে তাদের সমুদ্র এবং ভূমি ব্যবহার করতে দেয়। ফলে স্থলবেষ্টিত দেশটি ভারতের উপরে যে অতিমাত্রায় নির্ভরশীল ছিল, সেটা অনেকটাই কমে যায়। প্রবল ভারত-বিরোধী অবস্থানের কারণেই নেপালের ক্ষমতায় আবারও ফিরে এসেছেন ওলি। সবাই ভেবেছিল নেপাল-চীন সম্পর্ক এবার অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কিন্তু স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী ঘটনা ঘটেনি। বেশ কতগুলো বাধা ছিল এখানে। বিশেষ করে চীন কর্তৃক গৃহীত পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো হোচট খেয়েছে। নেপালের অর্থমন্ত্রী যুবজার খাতিওয়াদা গত মাসে পার্লামেন্টে বলেছেন, “আমরা নেপালের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহ করে ওয়েস্ট সেটি পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করবো”। এই প্রকল্পটি নেপালের ইলেক্ট্রিসিটি অথরিটির সহায়তায় ২০১৯ সালের মধ্যে নির্মাণ করার কথা চীনের থ্রি গর্জেস কর্পোরেশানের। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পের শর্ত নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতভেদ রয়েছে এবং চীন অভিযোগ করেছে যে, এখানে কাজের যথাযথ পরিবেশের অভাব রয়েছে”।
চীন সফরে ড্যাম প্রকল্প নিয়ে কিভাবে অগ্রসর হন ওলি, সেদিকে নজর থাকবে পর্যবেক্ষকদের। পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মানের ক্ষেত্রে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর বিকল্প হিসেবে চীনা কোম্পানিগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ে নেপাল। কারণ ভারতীয় কোম্পানিগুলোর এর আগের কাজের রেকর্ড সন্তোষজনক নয়। এই নিরীক্ষার অংশ হিসেবেই ওয়েস্ট সেটি প্রকল্পটি প্রথম চীনের কাছে দেয়া হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিয়াওয়ালির মতে, ওলির বেইজিং সফরের সময় পাওয়ার ট্রেডিং এগ্রিমেন্টকে একটা চুড়ান্ত রূপ দেবে নেপাল ও চীন। তার কথায় ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে এ খাতে চীনের অংশগ্রহণ বাড়বে।
সম্পদ-বঞ্চিত নেপাল আগামী ১০ বছরের মধ্যে ১৫,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উচ্চাকাক্সক্ষী পরিকল্পনা নিয়েছে। শের বাহাদুর দেউবার নেতৃত্বাধীন নেপালি কংগ্রেসের আগের সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত ও চীন উভয়ের সহায়তায় ১০,৮০০ মেগাওয়াট কার্নালি-চিসাপানি পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মাণ করা হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন অগ্রগতি হয়নি।
নেপালের এক সিনিয়র মন্ত্রী জানিয়েছেন, উন্নয়নের ব্যাপারে ওলির যে ব্যাগ্রতা, সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য তিনি অপেক্ষা করবেন না। তাই তিনি চীনকে আরও বেশি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করবেন। চীন নেপালে ১৫টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে চারটি পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প, পোখারায় নির্মিতব্য দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং আরও ১৪টি অন্যান্য প্রকল্প। সূত্র : এসএএম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন