রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এমপিকরণের দাবিতে টানা ১১ দিনের মতো জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশে অবস্থান করছেন নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীরা। বুধবার সকাল থেকেই এখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। আন্দোলনে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা (স্কুল-কলেজ-মাদরাসা) যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। আন্দোলন থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘এমপিও না দিলে বাড়ি ফিরে যাবো না’; ‘একদফা দফা এক দাবি এমপিওভুক্তিকরণ চাই’; ইত্যাদি বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লেকার্ড হাতে শ্লোগানে প্রেস ক্লাব এলাকা জুড়ে উত্তাল হয়ে উঠে।
বুধবার বিকেলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ডা. বিনয় ভুলণ রায়। ২১ জুন জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার, ডেপুটি-স্পীকার ও মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য বরাবর স্বারক লিপি প্রদান, ২২ তারিখ প্রেসিডেন্ট বরাবর স্বারক লিপি প্রাদান, ২৩ তারিখ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিকী অনশন, ২৪ তারিখ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২৫ থেকে আমরণ অনশনে যাবেন শিক্ষকরা।
বিনয় ভুষণ রায় বলেন, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রুতি দিলেন, সেখানে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ তা বাস্তবায়ন না করে শিক্ষকদের হয়রানি করার জন্য একটা অযৌক্তিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। এমপিভুক্তির শর্তই হলো স্বীকৃতি যা আমরা ১৫ থেকে ২০ বছর পূর্বেই পেয়েছি। অথচ এখনও পর্যন্ত আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেননি। আগে সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করুন তারপর অন্য বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি দৃঢ়কণ্ঠে ঘোষণা করেন, মরতে হয় মরবো তবুও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি না করে রাজপথ ছাড়বো না।
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা ১১ দিন ধরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন