স্টাফ রিপোর্টার : গৃহপালিত বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, উনি (স্ত্রী রওশন) চাইলে আমি উইল করে যাব, আমার মৃত্যুর পর রওশন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হবেন। গতকাল বনানী কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কোনো দলই জাতীয় পার্টির প্রতি সুবিচার করেনি। ’৯৬ সালে ব্যারিস্টার আনিস এবং কাজী ফিরোজের মাধ্যমে বিএনপিকে সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব এলো। আমি তা প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করি। বিনিময়ে তারা (আওয়ামী লীগ) আমার দল ভাঙল, নির্বাচনে অযোগ্য করা হলো আমাকে। পরবর্তীতে মহাজোট সরকার গঠনের সময়ও ওয়াদা বরখেলাপ করলো এই আওয়ামী লীগ।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহŸায়ক গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় অন্যান্যের মধ্যে পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান ট্যাপা, অধ্যাপিকা মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, হাবিবুর রহমান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আজম খান, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব দেওয়ান আলী, আরিফুর রহমান, বাহাউদ্দিন আহম্মেদ বাবুল, নুরুল ইসলাম নুরু, কেন্দ্রীয় নেতা মেজর খালেদ আখতার (অব.), জসীম উদ্দিন ভ‚ইয়া, ফখরুল ইসলাম ভ‚ইয়া লিটন, আহাদ চৌধূরী শাহীন, আখতারুজ্জামান খান, মশিউর রহমান খান, মনোয়ারা তাহের মানু, মাহমুদা রহমান মুন্নি, এনাম জয়নাল আবেদীন, এ্যাড. ফাইকুজ্জামান ফিরোজ, নির্মল চন্দ্র দাশ, আসাদুজ্জামান খান, অনন্যা হুসেইন মৌসুমী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এরশাদ বলেন, ওয়ান-ইলেভেন এল কেন? আমাদের কারণে। আন্দোলন হলো- নো এরশাদ, নো ইলেকশন। ইলেকশন হলো না। ওয়ান-ইলেভেনের পরে ২০০৮ সালে নির্বাচন হলো। নির্বাচনে আমাকে প্রেসিডেন্ট, আনুপাতিক হারে মন্ত্রী দেওয়ার চুক্তি ছিল, কিন্তু ক্ষমতায় এসে তারা ভুলে গেল। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির আমার সন্তান। মৃত্যুর আগে আমি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি দেখে যেতে চাই। এ পার্টির জন্য তোমরা সবাই ত্যাগ স্বীকার করেছ, কিন্তু আমিই একমাত্র লাগাতার ৬ বছর কারাগারে বন্দী জীবন-যাপন করেছি। বন্দী করা হয়েছিল আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকেও। তিনি আরো বলেন, মনে অনেক কষ্ট। তোমাদের (দলীয় নেতা) কাছে এগুলো বলে একটু হালকা হতে চাই। দলে মহাসচিব পরিবর্তনের গুঞ্জন প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, বর্তমান মহাসচিব পরিবর্তন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। রওশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, উনি চাইলে আমি উইল করে যাবো, আমার মৃত্যুর পর রওশন দলের চেয়ারম্যান হবেন। জাতীয় পার্টির কাউন্সিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ১৪ মে যে কোন কিছুর বিনিময়ে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলকে সামনে রেখে ৪০টি জেলায় আমি নিজে গিয়ে সম্মেলন করেছি। বিএনপি বা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধানরাও এত জেলা সম্মেলনে যান নাই।
এরশাদ বলেন, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ স্পষ্টভাষী লোক। তাকে আমি খুব পছন্দ করি। তাকে আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়েছিলাম এবং সে যথেষ্ট সফলতা দেখিয়েছে। জিয়াউদ্দিন বাবলুকে তরুণ বয়সে মন্ত্রী বানিয়েছিলাম। সেও সফলতা দেখিয়েছে। কিন্তু সে আমাকে চ্যালেঞ্জ করে রওশনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলো। এতে আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন