শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

যশোরকে বাণিজ্যিক নগরী গড়ে তোলার নেই উদ্যোগ

যশোর থেকে রেবা রহমান : | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেশের তৃতীয় বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে গড়ে উঠতে পারে অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোর। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে জেলাটিতে। বেশ আগে থেকেই এখানে সৃষ্টি হয়েছে কৃষি ও শিল্পপণ্য উৎপাদনে রেকর্ড। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার মধ্যবর্তী স্থান যশোরে বাণিজ্যিক নগরী গড়ে তুললে গোটা অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে বলে সংশ্লি­ষ্টদের অভিমত। সেই সাথে সাধিত হবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কিন্তু সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই। শুধুমাত্র সরকারি উদ্যোগের অভাবেই যশোর বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে গড়ে ওঠছে না। গত ২০১০ সালের ডিসেম্বরে যশোর সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেনÑ যশোরে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুধী সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, যশোরের মাটি উর্বর। এখানে খেজুরের গুড়, মাছের রেণু পোনা, সবজি, তুলা ও ফুল উৎপাদনের রেকর্ড রয়েছে। রয়েছে সার্বিক কৃষি ও শিল্পের সম্ভাবনা। এসব কারণেই যশোরকে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা হবে।
সেদিন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় যশোরবাসী দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণে আশান্বিত হয়ে ওঠে। কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারি যেমন উদ্যোগ নেই, সংশ্লিষ্ট বিভাগরও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তেমনি যশোরের জনপ্রতিনিধিরাও এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করেননি বলে অভিযোগ। বিশেষ করে যশোরের এমপিরা এক জোট হয়ে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে কোনো আবেদন-নিবেদন ও ভ‚মিকা রেখেছেন এমন রেকর্ড নেই। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন হলে খুব সহজেই দেশের তৃতীয় বাণিজ্যিক নগরী গড়ে উঠত।
যশোরের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধিদের কথা, অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়িত হলে শুধু যশোর অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে না, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিদেশে রফতানির মাধামে সমৃদ্ধ হবে বৈদেশিক মুদ্রাভাÐার। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্ভাবনাগুলোকে প্রকৃতভাবে কাজে লাগাতে পারবেন। শুধু কৃষি ও শিল্পপণ্য উৎপাদনে রেকর্ড নয়, দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল ও শিল্পশহর নওয়াপাড়ায় রয়েছে নদীবন্দর, যশোরের পাশেই রয়েছে আরো দু’টি স্থলবন্দর ভোমরা ও দর্শনা, এসব কারণেও বাণিজ্যিক গুরুত্ব রয়েছে। তা ছাড়া রয়েছে যশোরের অতীত ঐতিহ্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভ‚মিকা।
দেশের মোট চাহিদার বেশির ভাগ সবজি, রজনীগন্ধা, মাছের রেণু পোনা, খেঁজুরের গুড় ও পাটালি, পাটজাত ও হস্তশিল্পপণ্য এবং নারিকেলের ছোবড়া থেকে সাদা আঁশ তৈরি হয় যশোরে। এ ছাড়া বাউকুল, কলা, পান-সুপারি, নারিকেল, কাঁচা তুলা ও ছফেদাসহ অনেক কৃষিপণ্য উৎপাদনেও এসেছে অনেক সাফল্য। অযতœ ও অবহেলায় উৎপাদন হয় প্রচুর পরিমাণে ‘লোকাট’ বা আঁশ ফল।
এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পার্শ্ববর্তী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর হওয়ায় গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য বেনাপোলকেন্দ্রীক। সেখান থেকে সরকার প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে। কিন্তু বেনাপোল ও যশোরের উন্নয়নে ওই টাকা কখনো ব্যয় হয় না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন