গরমের দিন; আনন্দের দিন, খেলাধুলার দিন, পাকা জামের শাখায় উঠে মুখ রঙিন করার দিন। বসন্ত ঋতু বিদায় নেবার পর রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া উপভোগ করার জন্য শ্রেষ্ট সময় এটি। শিশুদের জন্য এ সময়ে বাড়তি আনন্দ যোগ করে ‘স্কুল ছুটি’। গরমের ছুটির সময় শিশুরা বাইরে খেলাধুলা করতে পছন্দ করে এবং ছুটির প্রত্যেকটি মূহুর্ত শিশুরা ভালোবাসে। এই মজার সময়টিই আবার শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হইয়ে উঠতে পারে। যদি বাবা মা হিসেবে একটু সাবধানী হোন তবে সবচেয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনটিও আপনার শিশুর জন্য সবচেয়ে উপভোগ্য হতে পারে।
সাধারণত এপ্রিল এর মাঝামাঝি সময় থেকে এবং জুন-জুলাই মাস জুড়ে বাংলাদেশে উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে। এই সময়ে আবহাওয়া অনেক গরম এবং আর্দ্র থাকে। এপ্রিল মাসকে সবচেয়ে গরম বলে ধরা হয় এবং দেশের পূর্বাঞ্চলে যখন তাপমাত্রা পূর্ব থেকে দক্ষিণ দিকে ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে দেশের মধ্যভাগ এবং পশ্চিমাঞ্চলে ৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। যদিওবা গরমের উপস্থিতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই পাওয়া যায়। এই দুঃসহ তাপমাত্রা শিশুকে কিছু সাধারণ রোগ যেমন কফ, গলাব্যথা, ঠান্ডা এবং জ্বরে আক্রান্ত করে। এ ছাড়াও অন্যান্য রোগ আছে যা খুব খারাপভাবে যে কাউকে আক্রান্ত করতে পারে বিশেষকরে শিশুদেরকে।
এই সময় উচ্চ তাপমাত্রার দাবদাহে বাইরে খেলাধুলার সময় শিশুদের সানস্ট্রোক কিংবা হিটস্ট্রোক এ আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে। সানস্ট্রোক অথবা হিটস্ট্রোক এ আক্রান্ত হলে শিশুদের মাথা-ব্যথা, দুর্বলতা, বমির প্রাদুর্ভাব, হৃদ¯পন্দন বেড়ে যাওয়া, শ্বাসপ্রশ্বাস কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। সানস্ট্রোক এর কারণে পানি স্বল্পতা হয়ে থাকে, শিশুরা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করে তাহলে সানস্ট্রোক হবার আশংকা বেশী থাকে, সানস্ট্রোক ছাড়াও অন্যান্য রোগও হতে পারে যার কারণে অনেকদিন ভুগতে হতে পারে।
হঠাৎ সূর্যের এমন তীব্র তাপমাত্রায় শিশুদের শরীরে ফুসকুড়ি বা ফোসকা উঠতে পারে যা শিশুদের জন্য সত্যিই অনেক কষ্টকর। তবে আপনার সন্তানের যদি টীকা দেওয়া থাকে তাহলে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অতিরিক্ত সূর্যরশ্মির কারণে তাদের শরীরে ঘাম হয় যার কারণে শরীরে ফুসকুড়ি বা ফোসকা হতে দেখা যায়। ঘামে ভেজা কাপড় বেশী সময় ধরে পরে থাকলে শরীরে ঘামাচি এবং ফুসকুড়ি বা ফোসকা হয়।
যেহেতু এই সময়টাতে শিশুদের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাই তাদের প্রতি উপযুক্ত খেয়াল রাখলে তাদের নিরাপদ রাখা যাবে। প্রথমেই তাদেরকে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার, মশলাদার খাবার দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনার শিশুকে সবসময় ঘরে তৈরী সতেজ ও নিরাপদ, বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়া খাবার খেতে উৎসাহ দিতে হবে। অভিভাবক হিসেবে স্বাস্থ্যকর খাবার, পরিবেশ স¤পর্কে সন্তানকে সচেতন করার দায়িত্ব/কর্তব্য আপনার। বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা স¤পর্কে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে ডেটল অন্যতম। ডেটল এর প্রতিনিধি দল বিভিন্ন বিদ্যালয়ে যাচ্ছে এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শিখানো হচ্ছে কি করে সঠিক পদ্ধতিতে হাত ধুতে হয়, কিভাবে নিজেকে পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যবান রাখা যায়। ছাত্র ছাত্রীদের সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার গুরুত্ব এবং তার পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব স¤পর্কে জ্ঞান দেয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক শুদ্ধতা যেন শৈশব থেকে গড়ে তোলা যায় সেই লক্ষ্যেই ডেটল কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, এ সময় সন্তানদেরকে সুতির কাপড় পরার জন্য উৎসাহ দিন, দিনে-দুপুরে বাইরে গেলে তারা যেনো মাথায় ক্যাপ পরে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। সবশেষে এটি মাথায় রাখা জরুরী যে, একজন আদর্শ পিতা-মাতা হিসেবে উষ্ণ তাপমাত্রার প্রচন্ড দাবদাহে আপনার সন্তানদেরকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে পাঠাবেন না, কারণ এই সময়ে মাথার উপরে সূর্য থাকে, যা আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন