বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ শনিবার দুপুরে ঘনীভূত হয়ে মৌসুমি নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের চর, উপকূল ও দ্বীপাঞ্চলে ২ থেকে ৩ ফুট উঁচু মৃদু আকারের জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সেই সঙ্গে খরার দহন কেটে দেশের অনেক জায়গায় হতে পারে বৃষ্টিপাত। সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানা গেছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যা উপকূলে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে মৌসুমি নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে এবং একই এলাকায় (২১.০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল।
নি¤œচাপটি আজ দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২০৫ কিলোমিটার পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২০২ কিমি পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯৬৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৪০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা কিংবা রাতের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যা বরাবর উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
মৌসুমি নিন্মচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিন্মচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ ন¤œর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
নিন্মচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নি¤œাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অনতিবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলসহ রংপুর ও সিলেট বিভাগ ওপর চলমান মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ কমে আসতে পারে। সারাদেশে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। আগামী ৩ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্ষার মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর এখন সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোরালো অবস্থায় রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন