তিন সিটিতে হঠাৎ অস্থিতিশীল পরিবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নাটক করাই বিএনপির চরিত্র এবং নিজেরা অপরাধ করে আওয়ামী লীগের ওপর দ্বোষ চাপিয়ে নাটক কর জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে দলটির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। ভোটের মাঠে জনগণের কাছে সাড়া না পেয়ে ‘ব্লেইম গেইম’ শুরু করেছে বিএনপি। সবখানে তারা একটা নাটক করে আর্ন্তজাতিকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। এটা তাদের চরিত্র।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসবে নানামুখী খেলাও তখন শুরু হয়ে যাবে। এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে আমরা জনগণের জন্য কাজ করছি, কবে যাবো।
গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সভাপতির সুচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিষয় এবং আগামী নির্বাচনি ইসতেহারের প্রস্ততি নিয়ে আলোচনা হবে বলে বক্তব্যের শুরুতে জানান দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা। রাত আটটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে।
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিন সিটিতে শান্তিপূর্নভাবে নির্বাচনি প্রচার চলছিল। হঠাৎ দেখা গেলো, রাজশাহীতে বিএনপির মিছিলে ককটেল ফুটলো, আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাথে সাথে নির্দেশ দিলাম; এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল- তাদের (বিএনপি) নিজেদের ভাষায় বেরিয়ে এলো এটা তারা নিজেরাই করেছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে দ্বোষারোপ করার জন্য। তারা যখন নির্বাচনে জনগণের কাছে যেয়ে সাড়া পাচ্ছে না তখন তারা বেøম গেইম একটা খেলা শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের ওপর দ্বোষারোপ করে সেটাকেই আর্ন্তজাতিক পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া- এটা তাদের পুরোনো অভ্যাস। তারা নিজেরাই বোমা মারে, নিজেরাই গাড়ি ভাঙে এরপর আমাদের ওপর দোষ চাপায়। এই অভ্যাসটা তাদের আছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আর খালেদা জিয়া জেলখানায় খায়-দায়-শুয়ে থাকে আর যেই মামলার তারিখ আসে সেই অসুস্থ হয়ে যায়। যখনি আদালতে হাজিরার তারিখ পড়ে তখনি অসুস্থ হয়ে যায়। আদালতে হাজিরা এড়াতে খালেদা জিয়াও নাটুকেপনা করছেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাইকো দুর্নীতি মামলা, এফবিআই বসে আছে স্বাক্ষ্য দেওয়ার জন্য। খালেদা জিয়া জানে যে কোর্টে গেলেই ধরা খাবে। তাই আদালতের হাজিরার তারিখ আসলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে আর হাজিরার তারিখ চলে গেলে আবার ভালো হয়ে যায়।
কারাগারে খালেদা জিয়া সব ধরণের সুবিধা পাচ্ছেন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কোনো কিছুর কমতি নেই খালেদা জিয়ার কারাগারে। যা যা চাচ্ছে তাই পাচ্ছে, এরকম আয়েস করে তো আর কেউ পায়েস খেতে পারে নাই। সেও তো জেলে রেখেছিল, আমাদের সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান জামালউদ্দীন সাহেবকে নিয়ে দুইটা কম্বল দিয়ে ফেলে রেখেছিল।
বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ড. আবদুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, পীযুষ কান্তি ভট্রাচার্য, নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ কার্যনির্বাহী সংসদের অধিকাংশ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আগস্ট মাসব্যাপী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসার জন্মদিন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা দিবস, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস, ২৪ আগস্ট আইভী রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাসব্যাপী মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ড, আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্টেয় রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়েও কথা হয় বৈঠকে। এছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষে ইশতেহারে কী থাকবে সে বিষয়েও আলোচনা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন