বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কোরবানী নয়, ভাবুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে

মন্তব্য প্রতিবেদন

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় প্রধান উৎসব ঈদুল আযহা সমাগত। এতে আল্লাহ তায়ালার দেওয়া নেয়ামত থেকে পশু কোরবানীর মাধ্যমে তার শোকরিয়া আদায় ও বড়ত্ব প্রকাশের মাধ্যমে বিশেষ একটি ইবাদত করা হয়। এটি মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব ইবাদত। যুগ যুগ ধরে এদেশে কোরবানী চালু আছে। এটি এখন শুধু ইবাদত নয়, ইবাদত কেন্দ্রিক উৎসব, সংস্কৃতি, সামাজিকতা, আদান প্রদান ইত্যাদি অনেক কিছু। কিন্তু ৯৩% মুসলমানের দেশে কোরবানী নিয়ে এখন অনেকেই অযাচিত অনেক মন্তব্য করে থাকেন।
বাংলাদেশে কিছু মানুষ নিজেরা ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়া সত্তে¡ও মুসলমানদের গরু খাওয়ার অধিকার সম্পর্কে সুবিচার করতে পারছেন না। ঢাকারই এক পত্রিকায় লেখা হয়েছে, গরু সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী আর যারা গরু খায় তারা সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রাণী। কত বড় ধৃষ্টতা। ৯৩% মুসলমান গরু খায়। তাদের জন্য গরু খাওয়া হালাল। গরু কোরবানী দেওয়া বিধেয়। এ সমাজে বসে কেউ যখন বলে, যারা গরু খায় তারা সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রাণী তখন সবাইকে ভাবতে হবে আমরা কোথায় আছি।
ভারতে বসে হিন্দুদের কেউ নিকৃষ্ট প্রাণী বলে বা লিখে কি পার পাবে? এ দেশেও কোনো প্রভাবশালী নেতা মন্ত্রী বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাউকে এমন গালি দিলে আইন কি তাকে ছেড়ে দেবে? কিছু বুদ্ধিজীবী নামের মানুষ তো গরু জবাইকে এমনভাবে চিত্রিত করেন যাতে মনে হয় পৃথিবীর সকল নবী-রাসূল ও ধর্মীয় ব্যক্তিরা যুগে যুগে পশু কোরবানী করে ভুল করেছেন। তারা যেন বলতে চান যে, সকল নবী-রাসূল ধর্মগুরু ও তাদের অনুসারী ইহুদী, খ্রিষ্টান, হিন্দু, মুসলমান, শিখ ইত্যাদি জাতি ক্ষেত্রবিশেষে সবাই অমানবিক। কেননা, তাদের সবাই পশু বলি কিংবা কোরবানী দেওয়ার রীতি পালন করে থাকেন।
গল্প, কবিতা, নাটক ইত্যাদিতে কিছু লোক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোরবানীকে খাটো করে দেখায়। এটাও এক ধরনের মৌলবাদী কৌশল। কিছুদিন ধরে সরকারের ভেতর লুকিয়ে থাকা কিছু ধর্মবিদ্বেষী নানা ছলে কোরবানীকে হেয়, নিরুৎসাহিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস পাচ্ছে। কারণে অকারণে কোরবানীকে খাটো করছে, গরুর হাট যেন তারা দুচোখে দেখতে পারছে না, কে বা কারা গরু জবাই করতে পারবে আর কারা পারবে না তা ঠিক করে দিচ্ছে, নাগরিকদের সুবিধাজনক স্থানে গরু জবাই নিষিদ্ধ করছে, অযৌক্তিকভাবে অসম্ভব কোনো সংকীর্ণ জায়গায় সবাইকে গরু নিয়ে গিয়ে জবাইয়ে বাধ্য করার পাঁয়তারা করছে, তারা এটা বুঝেও বোঝে না যে, কোরবানীর ঈদে গরু জবাই একটি ব্যবসায়িক জবাই নয়।
কসাই যেভাবে গরু কাটে, ঈদের জবাই ও বিলি-বণ্টন এমন নয়। এখানে গরু জবাই একটি ইবাদত। একটি উৎসব। একটি সংস্কৃতি। একটি ত্যাগপূর্ণ সওয়াবের কাজ। এখানে নিজ হাতে জবাই করা, নিয়ত করা, দোয়া পড়া, শরিকদের নাম ও অংশ নির্দিষ্ট করা, পরিবারের সদস্যদের আবেগময় উপস্থিতি, নিজের অংশ, প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনদের অংশ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অংশ নির্ধারণ ছাড়াও গোশত কাটা, রান্নার জন্য তৈরি ও এ ধরনের নানাবিধ কাজে বাড়ির নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ জরুরি হয়ে পড়ে। নির্দিষ্ট জবাইখানায় গরু কোরবানী বর্ণিত এসব বিষয়কে উপেক্ষা ছাড়া আর কিছু নয়। এ শ্রেণির কর্মকর্তা ও বুদ্ধিজীবী যদিও মুসলমান নামধারী এবং মুসলিম পরিচয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত কিন্তু তাদের চিন্তা, কথা ও আচরণ দেখে মনে হবে যেন তাদের ভেতর বসে আছে কোনো উগ্র হিন্দুত্ববাদী চিন্তার ভ‚ত।
অনেক বুদ্ধিজীবী আবার হজের সময়কার কোরবানীর কথা এখানে টেনে আনেন। এরা জ্ঞানপাপী। নতুবা সউদী আরবের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কোরবানীর কথা মাথায় রেখেই তারা কথা বলতেন। হজযাত্রীরা মুসাফির, তারা বাড়ি-ঘরের নিয়মে কোরবানী দেন না। এক জায়গায় সরকারি জবাইখানায় তাদের লাখ লাখ পশু জবাই হয়। যা কোরবানী নয়, হজ্জের ‘দমে শোকরিয়া’। একে যারা কোরবানী বলেন তাদের ধর্মীয় জ্ঞানের অভাব আছে।
পরিবেশবাদী কিছু নেতা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, মক্কা-মদীনার মতো বাংলাদেশেও কোরবানীর ব্যবস্থা করা হোক। এদের জানা থাকা উচিত, মদীনায় কোনো কোরবানী হাজিরা করেন না। মদীনাবাসী ঢাকাবাসীর মতোই কোরবানী দেন। মক্কায়ও হাজীরা কোনো কোরবানী দেন না। এই শহরেও ঢাকার মতোই কোরবানী হয়। হাজীরা লাখ লাখ পশু হজের শোকরিয়া স্বরূপ মিনায় জবাই করেন। এখানে না উপস্থিত থাকার বিষয় থাকে, না থাকে গোশত পাওয়ার, খাওয়ার বা বিলি-বণ্টনের প্রশ্ন।
এসব কোরবানী উন্নত প্রযুক্তিতে সংরক্ষণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য প্রয়োজনমতো পাঠানো হয়। এখানকার উন্নত প্রযুক্তি, পরিচ্ছন্নতা, ফ্রিজিং, প্যাকেজিং বিশ্বমানের। যা বাংলাদেশ শুধু কোরবানী কেন সরকারী অন্য কোনো ক্ষেত্রেও বাস্তবায়ন তো দূরের কথা এখনও স্বপ্ন দেখার যোগ্যও হয়নি। কিছু না জেনে বড় বড় কথা বলা এদেশের কিছু লোকের চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুঝে না ঘোড়ার ডিমও বলে মক্কা-মদীনার মতো কোরবানী দেন। সারা মধ্য প্রাচ্যের সকল আরব দেশ, মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি দেশ, অন্যান্য যেসব দেশে মুসলমান বসবাস করে সবাই শরীয়তে ওয়াজিব কোরবানী দেন চির পরিচিত সনাতন পদ্ধতিতেই।
যেসব দেশে জীবনের সবকিছুর মান উন্নত, পরিবেশ উন্নত, স্বভাবত সেখানে কোরবানী করার পদ্ধতিও উন্নত। যেখানে জীবন যেমন, কোরবানীও তেমন। শুধু কোরবানীকে আলাদা করে কেউ সমালোচনার লক্ষ্য বস্তু বানায় না। সেখানে সরকারের মন্ত্রীরা কথায় কথায় কোরবানী, কোরবানীর হাট, বর্জ্য, পরিবেশ ইত্যাদি বলে বলে মানুষের মনে আঘাত দেন না। কথিত বুদ্ধিজীবী ও পরিবেশবাদীরাও কোরবানী নিয়ে কাও মাও করে না। মিনায় হাজীদের কোরবানীর সাথে বাংলাদেশের সামাজিক কোরবানীর তুলনা বাতুলতা ছাড়া আর কিছু নয়।
সিটি কর্পোরেশন বর্জ্যরে ব্যাগ সরবরাহ করুক। মানুষকে রক্ত ও বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার এবং নির্ধারিত ডাস্টবিনে বা ময়লার গাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সচেতন করুক। ময়লা পরিষ্কারের জন্য ঈদের তিন দিন বাড়তি কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিক। কিন্তু তাই বলে, কোরবানীকে হেয় করে, গোটা ইবাদতটির মাহাত্ম্যকে আহত করে যে ধরনের ঘ্যানঘ্যানানি মিডিয়ায় শুরু হয়, সেমিনার সিম্পোজিয়াম ডাকা হয়, অনেক মন্ত্রী-আমলা-মেয়রও ওই মার্কামারা সুরে কথা বলেন তখন ৯৩% মানুষের মনে শঙ্কা জাগে এরা কি সত্যিই বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনের ভাষা বোঝেন?
দেখা যাবে কিছু চাবি দেওয়া লোক গরুর বর্জ্য পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা সুচারুরূপে না করে বরং এ নিয়ে জনমনে বিরক্তি ও বিতৃষ্ণা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। মনে হয় পারলে তারা গরু কোরবানী নিষিদ্ধ করে দেয়। সম্ভব হলে ঘরে ঘরে গরুর গোশত রান্না করাও নিষিদ্ধ করে দেয়। সুযোগ পেলে আইন করে দেয় গরু রান্না করতে হলে সরকার নির্ধারিত কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় বা জনপদ থেকে দূরে কোথাও গিয়ে করতে হবে।
বাংলাদেশে ৯৩% মুসলমান। তারা তাদের ধর্মীয় বিধান মতো গরু কোরবানী দেন। ভারত থেকে গরু আমদানির সুবিধা না থাকায় গত কয়েক বছরে দেশের চাহিদা পূরণ স্থানীয় উৎস থেকেই হচ্ছে। বিশেষ করে কোরবানীর ঈদে লাখ লাখ গরুর চাহিদা দেশীয় কৃষক, খামারী ও ব্যবসায়ীরা পূরণ করছেন। সারা বছর আমিষের চাহিদা পূরণ ও কোরবানীর পশু সরবরাহে বিদেশ-নির্ভরতা কাটিয়ে উঠে দেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ।
সীমান্তে ভারতীয় গরুর চোরাচালান বাংলাদেশীদের জীবনহানির একটি বড় কারণ। বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশীদের অধিকাংশই গরু চোরাচালানের অপবাদ পেয়ে থাকে। বর্তমানে দেখা গেছে, নির্বিচারে গুলি ও ধরে নিয়ে যাওয়ার ভয়ে মানুষ আর সীমান্ত এলাকায় বিচরণ করার সাহস পান না।
জীবিকার প্রয়োজনে সীমান্ত এলাকায় বহু মানুষ কোরবানীর গরু পালন, মোটাতাজাকরণ ইত্যাদি পেশায় নেমেছেন। কোরবানীতে তারাসহ দেশের সকল গরু ব্যবসায়ী ও কৃষক যে লাভের আশা করছেন ভারতীয় গরুর হঠাৎ আমদানি যেন সে আশাকে নস্যাৎ না করে দেয়। যারা গরু জবাই করতে দেন না তারা কেন বাংলাদেশে তা জবাই বা কোরবানীর জন্য রপ্তানি করতে চাইবেন, এ প্রশ্ন সকলের। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি বছর বাংলাদেশে কোরবানী দেওয়ার হার ৭% করে বাড়ছে। আলহামদুলিল্লাহ এটি প্রবৃদ্ধির আলামত। এ বছর সম্ভাব্য দেড় কোটি পশু কোরবানী হবে। আল্লাহর হুকুমে তার দেওয়া সকল নেয়ামত ভোগ করার পর তার দানকৃত পশু তারই নামে কোরবানী করা বড়ই সৌভাগ্যের ব্যাপার। যত কোরবানী হবে, ততই দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত, স্বচ্ছল ও সমৃদ্ধ হবে। এটিই আল্লাহর বিধান।
ঢাকাসহ দেশের বহু জায়গায় অনেক রেস্টুরেন্টে ইদানীং ‘নো-বিফ’ লেখার ফ্যাশন চালু হয়েছে। পাঁচ থেকে ছয় ভাগ মানুষ খায় না এমন একটি আইটেমকে এদেশে যেভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে তা দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এই খাবারটি ৯৩ ভাগ মানুষের জন্য হালাল এবং তারা তা পছন্দও করেন। পরিস্থিতি এমন যে, দেশের প্রায় সব মানুষ যে খাবার পছন্দ করে, এখন তাদের নিজের দেশেও তারা তা নির্বিঘেœ খেতে পারবে না।
আওয়ামী ওলামালীগ বহু আগেই এ কথা বলেছিল যে, ভারতের সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প বাংলাদেশেও ছড়িয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। হিন্দু মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক নেতারা যে ভারত বানাচ্ছেন, একশ্রেণির লোক বাংলাদেশকেও একই ধাঁচে গড়ে তুলতে চাইছেন। এ বিষয়ে সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম ও মানবাধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই।
দেশের প্রতিটি ইমাম, খতীব, আলেম, মুফতি, পীর, মাশায়েখ, শিক্ষিত চিন্তাশীল ব্যক্তি, ধর্মপ্রাণ যুবক, গৃহিনী, তরুণ, তরুণী প্রত্যেককেই আল্লাহর হুকুম কোরবানীর বিষয়ে স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে হবে। নিজ নিজ অঙ্গনে মানুষকে সচেতন করতে হবে। জুমার সময় বয়ানে এসব কথা বলতে হবে। ওয়াজ মাহফিলে বিষয়টি আলোচনা করতে হবে।
ঘরোয়া বৈঠকে, ড্রয়িং রুমে, আলাপচারিতায়, আড্ডায়, বন্ধুদের তর্কে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। কারণ এটি ঈমান আমলের প্রশ্ন। ইসলাম সকল ধর্মের মানুষের অধিকারে বিশ্বাসী। বাংলাদেশের সংবিধানেও ধর্মনিরপেক্ষতার নামে এ অধিকারের কথাই বলা হয়েছে। তা হলে ৯৩% মানুষের খাদ্য, তাদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও উৎসব-ইবাদত কৌশলে বাধাগ্রস্ত করা হবে কেন?
ড্রেন, সুয়ারেজ ও খালবিল, নদীনালা উপচে পড়ছে। মলমূত্র, পানি, কাদায় সিটি মেগাসিটি একাকার। রাজধানীসহ বড় বড় শহর নগরের রাস্তাঘাটে ডিঙ্গি নৌকা চলছে। গাড়ি-ঘোড়া চলতে গিয়ে অল্প সময়েই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। মানুষ অমানবিক কষ্ট করে পথঘাট পাড়ি দিচ্ছে। পরিবেশ বলতে সারাদেশে এক রকম ভাঙাচোরা, খানাখন্দ, আবর্জনা, কাদাপানি, বর্জ্য, দুর্গন্ধভরা একটি মনুষ্য বাসের অনুপযোগী পরিবেশ।
আর একশ্রেণির নির্লজ্জ আমলা ও বুদ্ধিজীবীর ভাষায় মনে হবে যেন দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যাই হচ্ছে ‘কোরবানীর পশুর হাট ও জবাইকৃত পশুর রক্ত-বর্জ্য।’ বলা হচ্ছে, নির্দিষ্ট লোক ছাড়া কেউ পশু জবাই করতে পারবে না। অথচ জবাইকারীদের অনেকে কালেমাও ঠিকমতো জানে না। গোসল করে পাক হয় না। পেশাব করে পানি নেয় না। এরাই নাকি কোরবানীর পশু জবাই করবে। কেন? আলেম উলামা, মাদরাসার ছাত্র, ইমাম, মুয়াজ্জিন সাহেবরা যে যুগ যুগ ধরে কোরবানীর পশু জবাই করে এসেছেন, এতে কার কি সমস্যা হয়েছে।
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার শর্ত মেনে ঘরের আঙ্গিনা, রাস্তা ও মাঠে পশু কোরবানী করলে কী এত সর্বনাশ হয়ে যায় যে, সব কোরবানী সরকারী কসাই খানায় নিয়ে করতে হবে? ক্যাডার, মাস্তান, চামড়া ছিনতাইকারী পরিবেষ্টিত নির্দিষ্ট জায়গায় করতে হবে? কোথায় এত জনবল, কোথায় যানবাহন, কোথায় নিরাপত্তা, কোথায় শরীয়তের নীতি নিয়ম? কিছুই যেখানে নেই সেখানে কেবল বেহুদা খবরদারী আর অযৌক্তিক বিধি-নিষেধ।
আসলে উচিত ছিল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিন্তা করার, কোরবানীর ওয়াজিব ইবাদত নিয়ে নয়। পর্যাপ্ত হাট বসানোর ব্যবস্থা করা উচিত ছিল, মহাসড়ক ও চলাচলের পথে কোরবানীর হাট সহ্য করা হবে না, এমন বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। মানুষ ইচ্ছা করে হাট বসিয়ে কাউকে কষ্ট দেয় না। এমন কষ্ট এদেশে মানুষ মেনে নিয়ে অভ্যস্থ।
রথযাত্রা, দূর্গাপূজা, বড়দিন, বৌদ্ধ পূর্ণিমা ইত্যাদিতে শোভাযাত্রা, মেলা, মিছিল, শব্দ, হৈ চৈ এদেশের মানুষ হাসিমুখেই মেনে নেয়। কোরবানীও তাই। পার্থক্য কেবল কোরবানী নিয়ে গলাবাজি হয় বেশি। যার দরকার নেই সেও খামাখাই আওয়াজ দিয়ে বসেন। এসব লোক আসলে কোন মানসিকতা লালন করে জনগণের সামনে আজ সেটাই প্রশ্ন।
নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা আর নজিরবিহীন দুর্নীতি ঢাকা দিতে তারা এখন বিজাতীয়দের গরুনির্ভর রাজনীতি অনুসরণে বাংলাদেশেও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প আমদানি ও কোরবানীর গরু নিয়ে নোংরা রাজনীতি করতে চাইছে। এ বিষয়ে সরকার, রাজনীতিবিদসহ সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি সোচ্চার হতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Jubaer ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১:০৪ এএম says : 0
Read the article and talk about that.
Total Reply(0)
dr javid ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১:৫১ এএম says : 0
talk about this subject pls.
Total Reply(0)
Faruk Hossain ২৫ জুলাই, ২০১৮, ৩:৫৫ এএম says : 0
ইতোপূর্বে নিজ নিজ এলাকায় পশু জবাই নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। হঠাৎ করে পরিবেশ বিনষ্টের অজুহাত কেন দেখানো হচ্ছে?
Total Reply(0)
সাব্বির ২৫ জুলাই, ২০১৮, ৩:৫৬ এএম says : 0
পরিবেশের দোহাই দিয়ে কোরবানি বন্ধের অপরিণামদর্শী কাজ থেকে বিরত থাকুন।
Total Reply(0)
Golam Robbani ২৫ জুলাই, ২০১৮, ৩:৫৭ এএম says : 0
কোরবানী নয়, ভাবুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটু সচেতন হলেই আমাদের শহরকে সুন্দর ও পরিষ্কার রাখা সম্ভব।
Total Reply(0)
মিজানুর রহমান ২৫ জুলাই, ২০১৮, ৩:৫৮ এএম says : 0
প্রতি বছর ঈদের নামাজের পর প্রতিটি এলাকায় পশু জবাই দিতে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা দেখা যায়। এখন সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানগুলোতে আগে পশু জবাইয়ের প্রতিযোগিতা হবে। চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হতে পারে। এমনকি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে।
Total Reply(0)
Jahid Mohammed ২৫ জুলাই, ২০১৮, ৪:০০ এএম says : 0
very nice and logical article . thanks to the writer and the daily inqilab
Total Reply(0)
সামদানি ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১:২৪ পিএম says : 0
উবায়দুর রহমান খান নদভী সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।খুব সুন্দর একটি লেখা। সকলে সতর্ক হলে সি আই এ মোসাদ এজেন্টরা পালাতে বাধ্য হবে। এই গ্রুপটিই বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করে থাকে ।বল্যবিবাহ না থাকার কারনেই আজ সমাজের এতো নৈতিক অবক্ষয়। বাল্যবিবাহ আইন বাতিল চেয়ে একটি লেখা চাই।
Total Reply(0)
হারুন ১২ আগস্ট, ২০১৯, ১:৫০ পিএম says : 0
শিক্ষানীয় একটি লেখা, নো বিপ যে হোটেলে লিখা আছে সেই হোটেল ১০০% হিন্দুর।যারা শহর পরিস্কার করার নামে সুনাম অর্জন করতে চায়,তাদের ও উচিৎ ওনাদের বাডীর আশেপাশে অবস্থা কি?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন