বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মামলাকে প্রভাবিত করতেই শেখ হাসিনা বক্তব্য দিচ্ছেন সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চলমান মামলাগুলোকে প্রভাবিত করতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন-‘খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বাহানা। মামলার তারিখ পড়লেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন’। শেখ হাসিনার এই বক্তব্য অমানবিক ও চরম প্রতিহিংসার বহি:প্রকাশ। যেখানে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে রিপোর্ট করেছে বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তাই তাঁকে আদালতে হাজির করা যায়নি। সরকারী-বেসরকারী এবং বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক’রা বলছেন তিনি অসুস্থ। তাহলে দেশনেত্রীর অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনা সেটাকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারেন? গতকাল (বুধবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা যখন কারাগারে ছিলেন তখন প্রতিদিন শুনতাম তিনি কানে শোনেন না, চোখেও দেখেন না, আরও কত কি। দিব্যি বেসরকারী হাসপাতাল স্কয়ারে নিজের পছন্দের চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য বিবেকবর্জিত ও বিনা চিকিৎসায় তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে দিতে চান।
মাহমুদুর রহমানকে বহুদিন ধরেই সরকার টার্গেট করছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বহুদিন ধরেই সরকারের টার্গেট। মিথ্যা মামলা, দীর্ঘদিন কারাগারে আটক, রিমান্ডে নির্যাতন তিনি সহ্য করেছেন। কিন্তু গত রোববার তাঁকে শারীরিকভাবে আক্রমণ সামগ্রিক সরকারী সন্ত্রাসের প্যারাডাইম শিফট। এই রক্তাক্ত ঘটনায় প্রতিবাদী কলাম লেখক, বুদ্ধিজীবীদের শুধু মামলা ও কারাভোগই নয়, তাঁদের জীবনকেও সংকটাপন্ন করার বার্তা দেয়া হলো।
মাহমুদুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এর প্রমাণ হচ্ছে- মাহমুদুর রহমান অবরুদ্ধ থাকার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি দেখছি বলে এড়িয়ে যান। কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সকল বিচারক বৈঠক করে তাঁর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেন। তাঁরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন-মাহমুদুর রহমানকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। কিন্তু বিচারকদের নির্দেশ পালিত হয়নি। বিকেল সাড়ে ৪টার পর আদালতে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাহমুদুর রহমানকে ছাত্রলীগের হাতে তুলে দেয়।
তিনি বলেন, ১২টার মধ্যে জামিন হওয়ার পর থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সারা দুনিয়ায় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ এগিয়ে আসেনি। মাহমুদুর রহমানকে নিরাপত্তা দিতে ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশ স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রকাশ্যে অমান্য করে। এসব ঘটনায় সম্পূর্ণভাবে পরিস্কার-মাহমুদুর রহমানের ওপর নৃশংস আঘাত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিএনপির পক্ষ থেকে মাহমুদুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও তাঁকে রক্তাক্ত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে দুস্কৃতিকারিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে তিন সিটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার-প্রচারণায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনে এসব অভিযোগ দেয়ার পরেও তারা সরকারের মুখ চেয়েই কাজ করছে। বর্তমানে ইলেকশন-গেট কেলেঙ্কারীর মূল হোতা আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন। তিনি তিন সিটিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারেরও নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন