বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সামনে বড় চ্যালেঞ্জ : ভালই ব্যাট করেছে পিটিআই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:৩৮ এএম

এখন পর্যন্ত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল না পাওয়া গেলেও ৯৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষে প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী বলা যায়, সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খানই হচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। বলা যায় বিশাল নির্বাচনী মাঠে পিটিআই ভালই ব্যাট করেছে। তবে পিটিআই-এর নেতৃত্বাধীন সরকারকে পাকিস্তানে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হতে পারে। নতুন সরকারকে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি উভয় ক্ষেত্রেই বন্ধুর পথ সুষম করে এগুতে হবে। শুরুটা হতে হবে অবশ্যই দেশের অর্থনৈতিক শক্তি ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়ে। রুপির অবমূল্যায়ন এবং বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ সঙ্কট ঠেকাতে হবে। রিজার্ভের পরিমাণ কমে এরইমধ্যে ৯৬০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। কোন রকমে এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব এই অর্থ দিয়ে।
পাকিস্তানকে সম্ভবত আবারও সহায়তার জন্য আইএমএফের কাছে যেতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় ইমরান খান দুর্নীতি আর আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু দেশকে দেউলিয়াত্ব থেকে বাঁচানোর জন্য তাকেও সেই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছেই যেতে পারে।
চীনের বহু বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এবং সাম্প্রতিক এক বিলিয়ন ডলার ঋণ সত্বেও পরবর্তী সরকারকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সঙ্কটের মুখে পড়তে হতে পারে। বিষয়টা কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে না। কারণ, এখানে পররাষ্ট্র নীতির বিষয়টিও জড়িত।
একদিকে, আইএমএফের ঋণের সাথে এমন কিছু শর্ত দেয়া হতে পারে, যেগুলোর জন্য আমেরিকার সাথে সম্পর্কের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। ইতিহাসের দিকে যদি তাকানো যয়, ১৯৯৯ সালে পারভেজ মুশাররফ যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তখন এখনকার চেয়ে খুব একটা ভালো ছিল না। তার সরকার যখন ঋণের জন্য আইএমএফের কাছে গিয়েছিল, তখন ঋণ পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সরকারকে বেশ কিছু কঠিন শর্ত দেয়া হয়েছিল।
পাকিস্তান এখন এফএটিএফ গ্রে-লিস্টে তালিকাভুক্ত রয়েছে। পিটিআই সরকার গঠন করতে চলেছে। ইমরান খান তার মার্কিন-বিরোধী মনোভাবের জন্য সুপরিচিত। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা এখানে খুবই কম। সব মিলিয়ে আগামী সরকারের জন্য ঋণের জন্য আইএমএফের দ্বারস্থ হওয়াটা খুবই কঠিন হতে পারে।
আগামী সরকারের জন্য এটা একটা চ্যালেঞ্জ হবে সন্দেহ নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও আইএমএফের ব্যাপারে পিটিআই সরকারকে হয়তো বিকল্প পন্থা বের করতে হতে পারে।
বাস্তবতা হলো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে সেটা করতে হবে আফগানিস্তানের মাধ্যমে। ইমরান খান আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করলেও তালেবানদের সাথে সংলাপের ব্যাপারে তিনিও সোচ্চার। পাকিস্তান-ভিত্তিক হোক বা আফগানিস্তান-ভিত্তিক হোক, আলোচনার পক্ষে তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এখন আফগান তালেবানদের সাথে সরাসরি আলোচনায় আগ্রহী এবং পাকিস্তানকেও সঙ্গে রাখতে চায়। সে ক্ষেত্রে ইমরান খান হয়তো আফগানিস্তানে বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে দরকষাকষির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করতে পারেন এবং এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারেন।
তাই এই আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতির জন্য সক্রিয় ভূমিকা রাখা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্কের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটা একইসাথে পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের দুয়ার খুলে দিতে পারে এবং খুলে যেতে পারে পশ্চিমা বাজারও, যেটার কারণে পাকিস্তানের রফতানি আরও বাড়বে। বাড়তি সুবিধা যেটা হবে, সেটা হলো পাকিস্তানকে যে নিরাপত্তা সহায়তা দিতো যুক্তরাষ্ট্র, সেই স্থগিত সহায়তা আবার চালু হতে পারে।সূত্র ঃ এসএএম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন