শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অভিবাসী নিয়ে ভূমধ্যসাগরে ফের নৌকাডুবি

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভূমধ্যসাগরে ৪টি নৌকাডুবিতে কয়েকশ’ অভিবাসন প্রত্যাশী সাগরে ডুবে মারা গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইটালির প্রেসিডেন্ট সার্জিও ম্যাট্টারেলা বলেছেন, ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী ট্রাজেডি ঘটেছে। অসমর্থিত খবরে বলা হয়েছে এসব নৌযানে অধিকাংশই ছিল সোমালিয়ান তারা মিসর থেকে ইউরোপ আসতে সাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছিল।
রাজধানী রোমে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় ম্যাট্টারেলা বলেন, ইউরোপকে ভূমধ্যসাগরে আরেকটি ট্রাজেডি ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এতে কয়েকশ’ অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছরের ১৮ এপ্রিল লিবিয়া ও ইটালির ল্যামপেদুসা দ্বীপের মাঝামাঝি সাগরে মাছ ধরার একটি জাহাজ ডুবে গেলে ৮শ’র মতো অভিবাসন প্রত্যাশী ও উদ্বাস্তুু প্রাণ হারিয়েছিল। মাছ ধরার জাহাজটি ছিল জনাকীর্ণ। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে জাহাজটি সাগরে ডুবে গিয়েছিল। ম্যাট্টারেলা সর্বশেষ ৪টি নৌযানডুবি সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি এবং মিসরীয় বা গ্রীক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এই বিরাট বিপর্যয়ের রিপোর্ট সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। ইটালিয়ান কোস্টগার্ড বলেছে, তারা এই দুর্ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না। অবশ্য তারা গতরাতে আধাডুবন্ত রাবারের একটি ডিঙ্গি নৌকা থেকে ১০৮ জন অভিবাসীকে উদ্ধারের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই ঘটনায় ৬ জন পানিতে ডুবে মারা যায়।
ইটালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো জেন্টিলোনি বলেছেন, আমরা আরো বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছি। তবে এটা নিশ্চিত যে, ভূমধ্যসাগরে আবার একটি ট্রাজেডি ঘটেছে। ভূমধ্যসাগর ট্রাজেডির ঠিক এক বছর পর আবার এর পুনরাবৃত্তি ঘটলো। তিনি আরো বলেন, ইউরোপে প্রাচীর নির্মাণ নয় কিন্তু অভিবাসন বিশেষ করে আফ্রিকা সম্পর্কে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকার জোরালো করতে ইউরোপের জন্য এটি আরেকটি শক্তিশালী কারণ।
মানবাধিকার কর্মীরা যখন ভূমধ্যসাগরে অনুসন্ধান কার্যক্রম ও উদ্ধার মিশন কমিয়ে আনার মাধ্যমে ‘অবহেলাজনিত হত্যার’ জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি নির্ধারকদের অভিযুক্ত করছেন তখন ফের ভূমধ্যসাগরে শত শত মানুষের প্রাণহানির এই খবর আসলো।
ইটালির নেতৃত্বাধীন উদ্ধার মিশন ম্যারি নোসট্রুম ২০১৪ সালের অক্টোবরে ভেঙ্গে দেয়া হয়। তার জায়গায় চালু করা হয় ট্রাইটন মিশন। এতে গুটি কয়েক জাহাজ মোতায়েন করা হয় এবং উদ্ধার অপারেশনের চেয়ে অভিবাসীদের বাধা দেয়াকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
উদ্ধার মিশন নিয়ে নীতিগত পরিবর্তনের পর থেকে সাগরে প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। দেড় হাজারের বেশী অভিবাসন প্রত্যাশীকে জীবন দিয়ে এই পরিবর্তনের মূল্য দিতে হয়েছে। ‘ডেথ বাই রেসকিউ : দ্য লেথাল ইফেক্টস অব দ্য ইইউ’স পলিসি অব নন-এসিসট্যান্স অ্যাট সি’ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
আশ্রয়ের মর্যাদা লাভে যারা ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সম্পর্কে একটি ইইউ চুক্তি হওয়া সত্তেও সাগর পাড়ি দেয়ার বিপদজনক যাত্রার মাধ্যমে ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আগমন সংখ্যা নাও কমতে পারে বলে একটি মানবিক সংগঠন সতর্ক করে দিয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের কমিউনিকেশন হেড সারাহ টেলর বলেন, আগমন সংখ্যা বন্ধ হবেনা কারণ চেষ্টা চালানো ও ইউরোপে পৌঁছুনো ছাড়া তাদের আর কোন উপায় নেই। তিনি বলেন, তারা পেছনে যা ফেলে আসছেন সেটা কোন জীবন নয়। সেখানে ভালোভাবে বেঁচে থাকার কোন উপায়ই নেই। টেলর বলেন, অনেক শিশুই আমাকে একথা বলেছে। তাই অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিরাপদ আগমণ পথ নিশ্চিত করতে হবে এবং সাগরে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। -সূত্র : স্কাই নিউজ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন