বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হানিফ ফ্লাইওভারে বাস স্টপেজের পর টেম্পু স্ট্যান্ড

সৃষ্টি হচ্ছে যানজট যাত্রীদের হয়রানী

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : এবার টেম্পু স্ট্যান্ড বানানো হয়েছে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার ঠিক উপরে যেখানে ইতোমধ্যে বাস দাঁড়ানোর স্থায়ী ব্যবস্থা করা হয়েছে তার পাশেই রাস্তার উপর টেম্পু দাঁড়ায়। চলমান টেম্পু নয়, এখান থেকে যাত্রী তুলে টেম্পুগুলো নিউমার্কেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। টেম্পুগুলো ধোলাইপাড় থেকে ফ্লাইওভারের উপরে উঠে যাত্রীর জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। ফ্লাইওভার প্রজেক্টের একজন কর্মচারী জানান, টেম্পুগুলো রাস্তার এক পাশে দাঁড়ানো থাকে। তাতে অন্যান্য যানবাহন চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে স্বীকার করে ওই কর্মচারী বলেন, বাস দাঁড়ানোর কারণে এখানে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি। মাঝ বরাবর বলে এখানে সব যানবাহনই দ্রুত গতিতে চলে। বাস দাঁড়িয়ে যাওয়ায় বা থেমে থাকায় সেগুলোকে হঠাৎ করে ব্রেক করতে হয়। তিনি বলেন, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এবং যাত্রী পারাপারের জন্য এখানে লাল পতাকা হাতে কয়েকজন ডিউটি করে। তারা গাড়িগুলোকে ধীরে চলা এবং প্রয়োজনে থামানোর সংকেত দেয়। যাত্রী পারাপারে সহায়তা করে। ফ্লাইওভারের উপরে এভাবে গাড়ি দাঁড়ানো এবং টেম্পু স্ট্যান্ড বানানোতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলাচলকারী গাড়ির চালক ও যাত্রীরা। বেসরকারী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন সকালে ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে মতিঝিল অফিসে যাই। ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যাই যানজটমুক্ত পরিবেশে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে দেখছি ফ্লাইওভারের মাঝখানে বাস দাঁড়িয়ে থাকে। চলমান গাড়িগুলোকে ওই স্থানে দাঁড়াতে হয়। এতে করে সবারই সময় নষ্ট হচ্ছে। এমনতো হওয়ার কথা ছিল না। হঠাৎ করে ফ্লাইওভারের উপরে বাস স্টপেজ বানালো কীভাবে? এটা দেখার কি কেউ নেই? জুরাইনের অধিবাসী এক ব্যবসায়ী বলেন, ধোলাইপাড় থেকে ফ্লাইওভারে ওঠার পর যাত্রীদের ভিড়ে গাড়ি চলতে পারে না। একদিকে গাড়ি চলাচলের জন্য কিছু জায়গা খালি রেখে যাত্রী চলাচলের জন্য পৃথক লেন বানানো হয়েছে। উপরে উঠতে গেলেই যাত্রীদের বাধার মুখে পড়ে গাড়িগুলো। এরপর সামনে একদিকে বাস আরেক দিকে টেম্পু দাঁড়ানো থাকে। থাকে শত শত যাত্রী। এসব ভিড় ঠেলে গাড়িগুলোকে চলতে হয়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, হঠাৎ করে ফ্লাইওভারের উপরে বাস স্টপেজ বা টেম্পু স্ট্যান্ড কেন বানানো হলো বুঝলাম না। এগুলো কি দেখার কেউ নেই? পিপিপি’র আওতায় তৈরী বলে কি এর উপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই? এটা যদি করতেই হবে তবে টোল কমিয়ে দেয়া হোক। আমরা এতোগুলো টাকা দিয়ে ঝামেলা পোহাবো কেন? বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ফ্লাইওভারের মালিক কিন্তু অবশ্যই সরকার। যারা এটি নির্মাণ করেছে তারা কোনোভাবেই এর একচ্ছত্র মালিক হতে পারে না। সুতরাং এটার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন যা কিছু প্রয়োজন তার জন্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করবে। এরপর সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অনুমোদন দেয়া হবে। এখানে ডিএসসিসির মেয়র কিছুই জানেন না এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। হতে পারে বর্তমান মেয়র সাহেব নতুন এসেছেন। কিন্তু তাই বলে তাকে না জানিয়ে ফ্লাইওভারের উপরের ডিজাইনে এভাবে পরিবর্তন করা হবে এটা হতে পারে না। কারণ ফ্লাইওভার নির্মাণের আগে সরকারের সাথে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের যে চুক্তি হয়েছে তাতে সব নিয়মই দলিল আকারে নথিভুক্ত আছে।
২০১৩ সালের অক্টোবরে চালু হওয়া ১১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে গুলিস্তান থেকে শনিরআখড়া ও ধোলাইপাড় পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। চার লেনের ফ্লাইওভারে উঠতে ছয়টি এবং বের হতে সাতটি পথ রয়েছে। শুরুর পর থেকে ফ্লাইওভারের ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশেষজ্ঞগণ। তাােদর মতে, এই জয়েন্টে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ফাঁক থাকায় তা দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুইজারল্যান্ডের ম্যাগেবা নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ভারতীয় কারখানা থেকে এই এক্সপ্যানশন জয়েন্টগুলো তৈরি করা। গত তিন বছরে ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৫জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Ashraful Alam Bablu ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:১৮ এএম says : 0
হায়রে বাংলাদেশ সবই সম্ভব এদেশে!উন্নত দেশে ফ্লাইওভার হলো সংরক্ষিত রাস্তা যেখানে কোন বাসষ্টপতো নেইই এমনকি ফ্লাইওভার দিয়ে কোন সাইকেল এবং মানুষ চলাচল সম্পূর্নই নিষিদ্ধ
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন