শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ব্লগারদের আমেরিকা মিশন

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩২ পিএম, ১৮ এপ্রিল, ২০১৬

স্টালিন সরকার : ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মুক্ত চিন্তার নামে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া বিকৃত ও নোংরা রুচির পরিচয়। একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে, ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লিখলেই তারা হয়ে যান মুক্তচিন্তার’। পহেলা বৈশাখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তি জোকের মুখে নুনের (লবন) ছিঁটার নামান্তর। শাহবাগী এবং তথাকথিত প্রগতিশীল সংস্কৃতিসেবীদের প্রত্যাশা ছিল পহেরা বৈশাখে ‘পান্তা ইলিশ আমাদের সংস্কৃতি নয়’ বলে যারা উক্তি-কথাবার্তা বলছেন সংস্কৃতিমনা প্রধানমন্ত্রী তাদের ‘এক হাত’ নেবেন। কিন্তু গণমানুষের নেত্রী হিসেবে তিনি এ দেশের মাটি ও মানুষের মানসিকতা হৃদয়াঙ্গম করে মুক্তমতের নামে ব্লগে লেখা ইসলামবিদ্বেষীদের সতর্ক করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য সর্বমহলে প্রশংসিত হলেও ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের মত প্রকাশের নামে কুকর্ম-অপকর্ম থেমে নেই। তাদের মধ্যে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়। আমেরিকা সরকার এদেশের ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের আশ্রয় দেয়ার চিন্তা-ভাবনার কথা প্রচার করেছে। এতে আরো বেশি বেশি বিতর্কিত লেখা লিখে নিজেদের ব্লগার হিসেবে পরিচিত করে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্নে বিভোগ হয়ে গেছে ইসলামবিদ্বেষী কিছু ব্লগার।
কবি, সাহিত্যিক প্রতিভা। অধ্যাপনা, সাংবাদিকতা পেশা। ব্লগার কোনো পেশা নয়; প্রতিভাও নয়। অথচ বিজ্ঞানের বিপ্লবের সুবিধা নিয়ে ব্লগে মুক্তমত চর্চার নামে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ লেখালেখির মাধ্যমে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার হচ্ছে ব্লগার পেশা। ব্যক্তিকে ব্লগার হিসেবে পরিচিত করে তোলা হচ্ছে। ওই ব্লগাররা মুসলিম জাহানকে দাবিয়ে রাখতে ইঙ্গ-মার্কিনিদের ‘নীতি-কৌশল’ ‘ইসলামবিদ্বেষী’ মন্ত্র চর্চার খপ্পড়ে পড়ে মহানবী (সা.), পীর-মশায়েখ, আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে। আমেরিকা ও ইউরোপে নাগরিকত্বের লোভে ব্লগাররা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরছে। বাংলাদেশকে ভয়ঙ্কর দেশ হিসেবে চিত্রায়িত করছে। একান্ত ব্যক্তি স্বার্থে ‘বাংলাদেশ নিরাপদ নয়’ অপপ্রচার চালিয়ে বিভিন্ন উন্নত দেশের ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছে। ‘ব্লগার’ হওয়াই যেন তাদের এনে দিয়েছে স্বপ্নের দেশ আমেরিকা যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। ‘বাংলাদেশে জীবন হুমকির মুখে’ অপপ্রচার চালিয়ে যারা আমেরিকা-ইউরোপের ভিসার তদবির করছে তারা কি দেশপ্রেমী? এক সময় এনজিওগুলো বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ‘গরিবানা’ চিত্র তুলে ধরে ডলার এনে অধিকাংশ অর্থ নিজেদের ভোগবিলাসে ব্যয় করেছে। এখন ব্যক্তি স্বার্থে ইসলামবিদ্বেষী কিছু ক্লগার ‘বাংলাদেশ জঙ্গিরাষ্ট্র, আইএস মৌলবাদে ভরে গেছে দেশ, ব্লগারদের জীবন ঝুঁকির মুখে’ ইত্যাদি অপপ্রচার চালিয়ে প্রভাবশালী দেশগুলোর ভিসা পাওয়ার চেষ্টা-তদবির করছে। স্বঘোষিত ইসলামবিদ্বেষীদের নানাভাবে সহায়তা করছেন দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়া। দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার কি দেশপ্রেম?
বাংলাদেশের অনেক তরুণ-যুবক স্বপ্নের জীবন গড়তে আমেরিকা যেতে চান। বাস্তবতা হলো ৩০/৩৫ লাখ টাকা খরচ করে দালালদের মাধ্যমে মাসের পর মাস বছরের পর বছর মরুভূমি, বনজঙ্গল, পাহাড়-পর্বত, সাত সমুদ্র- তের নদী পাড়ি দিয়ে তাদের আমেরিকায় পৌঁছাতে হয়। তারপরও সেখানে ভাগ্য প্রসন্ন না হলে কারাভোগের পর দেশে ফিরতে হয়। গত ৬ এপ্রিল অবৈধভাবে আমেরিকায় যাওয়া ২৭ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়। মিয়ামী ইন্টারন্যাশনালের একটি বিশেষ ফ্লাইট তাদেরকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়। এই বাংলাদেশিরা এতটাই অসহায় হয়ে ফিরেছেন যে ঢাকা থেকে স্বজনের কাছে পৌঁছানোর খরচটুকুও ছিল না তাদের কাছে। এমনকি তারা দেশে ফিরে এসেছেন তাও জানে না স্বজনরা। ‘ভালোবাসি বাংলাদেশ’ নামে একটি সংস্থা তাদের হালকা খাবার-পানীয় এবং বাড়িতে যাওয়ার ভাড়া সরবরাহ করে। স্বপ্নের দেশ থেকে ফেরত আসা তরুণরা বিমানবন্দরে নেমে ভয়াবহ নানা অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। এই ২৭ জনের একজন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার কামাল হোসেন। তিনি অবৈধভাবে টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে আমেরিকা প্রবেশ করে ৩ মাস জেলবাস করে দেশে ফিরেছেন। কামাল হোসেনের গল্প হলো-অবৈধভাবে আমেরিকা যাওয়ার জন্য ১২ লাখ টাকা দেন সোনাইমুড়ি উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের এক ব্যক্তির কাছে। ওই ব্যক্তি তার মুখচেনা। ২০১৪ সালের ১ আগস্ট টুরিস্ট ভিসা নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বলিভিয়া যান। সেখান থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের এক দালাললের সহায়তায় সড়কপথে ব্রাজিল। ওই দালালকে দেন ৮ লাখ টাকা। এভাবে ভেনিজুয়েলা হয়ে মোট ২১টি দেশ পাড়ি দিয়ে আমেরিকা পৌঁছান। আর প্রত্যেক দেশের সীমানা অতিক্রম করতে তাকে অর্থ ব্যয়ে দালালের সহযোগিতা নিতে হয়েছে। বাড়ি থেকেই এই টাকা বিভিন্ন সময় পাঠানো হয়। আমেরিকায় পৌঁছানোর পর সেখানে বসবাসের বৈধতা পেতে আইনজীবীকে দিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। সব মিলে তার ৪০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। কিন্তু এই খরচ করেও তিনি শেষ রক্ষা পাননি। অবৈধ প্রবেশের দায়ে তাকে ১৭ মাস জেলে কাটাতে হয়। সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার দুভাগ উত্তর প্রামের যুবক রাসেল আহমেদ। সউদী প্রবাসী ভাইয়ের মাধ্যমে আমেরিকা পাঠানোর দালালের সন্ধান পান। ওই দালালের সঙ্গে তিনি ২০ লাখ টাকায় আমেরিকা পৌঁছানোর চুক্তি করেন। তাকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট টুরিস্ট ভিসা নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পেরু যান। সেখানে ইকবাল নামে এক বাংলাদেশি দালাল তাকে গ্রহণ করে মেক্সিকান এক দালালের হাতে তুলে দেয়। এরপর ওই দালাল তাদের ইকুয়েডর-কলম্বিয়া হয়ে পানামা নিয়ে যায়। পানামা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে টানা ৪ দিন হাটার পর তারা ক্যাম্পে গিয়ে পানামা পুলিশের কাছে ধরা দেন। পুলিশ ক্যাম্পে ৬ দিন আটকে রেখে পানামা সিটির একটি হোটেলে রেখে আসে। সেখান থেকে নিকারাগুয়ার এক দালাল তাদের গ্রহণ করে এলসালভাদর নিয়ে যায়। ওই দেশ থেকে সাগরপথ দিয়ে ৫ ঘণ্টায় গুয়াতিমালায় পৌঁছায়। সেখানে আরেক দালাল তাদের নিয়ে মেক্সিকোতে পৌঁছে দেয়। তিনি ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ধরা দেয়। পুলিশ তাকে ২০ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার আউট পাস দেয়। এই ডকুমেন্ট দিয়ে বিমানে করে মেক্সিকোর সানচিত্র সীমান্তে যান। সীমান্তে আমেরিকান পুলিশের কাছে ধরা দেন। পুলিশ তার সাক্ষাৎকার নিয়ে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রিফিউজি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ক্যাম্পের কর্মকর্তা জানায়, তারা আদৌ দেশে থাকতে পারবে কি না তা কোর্ট নির্ধারণ করবে। তাকে ক্যালিফোর্নিয়ার সানদিয়াগো কোর্টে হাজির করে। সেখানে ২০ হাজার ডলার দিয়ে এক আইনজীবীর শরণাপন্ন হন রাসেল। সেখান থেকে তাকে দেশে পাঠানোর জন্য কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি অস্বীকৃতি জানান। পরে ওই ক্যাম্পেই ১১ মাস কাটে তার। তাকে স্পন্সর জোগাড় করতে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় স্পন্সর পেলে ছেড়ে দেওয়া হবে। আমেরিকা প্রবাসী তার এক আত্মীয়ের যাবতীয় ডকুমেন্ট জমা দেন। তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর শিকাগো নিয়ে যায়। বিমানের সামনে এনে তাকে ধাক্কা দিয়ে দেশে চলে যেতে বলে। কিন্তু তিনি আবারও দেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানান। কান্নাকাটি করেন। পরে তাকে আলবামা নামে শহরের একটি জেলে রাখে। সেখানে তাকে ৪ মাস রাখা হয়। আরো কয়েকটি জেলে ঘুরিয়ে চলতি বছরের ৩ মার্চ রাত ১০টার দিকে হাত-পা বেঁধে রাসেল আহমদকে এয়ারপোর্টে নিয়ে বিমানে তোলা হয়। ৩ দিন পর সেই অবস্থায়ই তারা শাহজালালে পৌঁছান। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশের যে ২৭ জন তরুণ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এ মাসে দেশে ফেরেন তাদের সবার গল্প এই কামাল হোসেন ও রাশেদ আহমেদের মতো। কত কষ্ট করে স্বপ্নের দেশ আমেরিকা যেতে হয়। সেই আমেরিকা ‘বাংলাদেশের ব্লগারদের জীবন নিরাপদ নয়; আমেরিকা তাদের আশ্রয়ের চিন্তা-ভাবনা করছে’ এমন ঘোষণা দেওয়ার পর ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের স্বপ্ন আকাশে ডানা মেলে দিয়েছে। ব্লগে ইসলামবিদ্বেষী কিছু লিখলেই ক্লগারের খাতায় নাম উঠবে। ব্লগার হলেই আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। পাল্টে যাবে জীবনমান। আহা! কত না মধুর জীবন!!
আমেরিকা ও ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্নে বাংলাদেশ বিদ্বেষী প্রচারণা শুরু করেছে ব্লগারদের অনেকেই। তারা বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ, সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে বোঝাতে চাইছে বাংলাদেশ মুক্তমনা ব্লগারদের জন্য নিরাপদ নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্লগারদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এমনকি ইসলামী অ্যাক্টিভিস্টদের কারণে তারা মুক্তমত প্রকাশ করতে পারছেন না। দেশে প্রতিদিনই মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এসব নিয়ে ব্লগারদের মাথাব্যথা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে কোন ব্লগার কখন খুন হয়েছে, তার খুনের পর মিডিয়ায় কীভাবে খবর প্রচার হয়েছে সে সব ক্লিপিং করে, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিদেশিদের বোঝানো হচ্ছে বাংলাদেশে ব্লগারদের তালিকা করা হয়েছে। ইসলামী অ্যাক্টিভিস্টরা সেই তালিকা ধরে ব্লগার হত্যা করছে। পাশাপাশি ব্লগে চলছে এ নিয়ে লেখালেখি। উদ্দেশ্য বাংলাদেশে জীবন হুমকির মুখে বুঝাতে পারলেই আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া যাবে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে ইতোমধ্যেই ইসলামবিদ্বেষী প্রায় ৩০ জন ব্লগার বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে জীবন হুমকিতে এমন প্রচার করে বিদেশে চলে গেছেন। ইসলামবিদ্বেষী লেখক অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের (বই মেলায় ছুরিকাঘাতে আহত এবং জার্মানিতে অতিরিক্ত মদ্যপানে নিহত) ছেলে অনন্য আজাদ দেশ ছাড়েন ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই। সে এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেনটাইন ডে’তে প্রেমিক-প্রেমিকার প্রকাশে চুমোচুমির ঘোষণা দেন এবং মেয়েদের স্তন খুলে প্রকাশে নাচানাচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করার আহ্বান জানান।
খবরে প্রকাশ ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের মধ্যে ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন শাম্মী হক, মশিউর রহমান বিপ্লব, রাসেল পারভেজ, আসিফ মহিউদ্দিন, ওমর ফারুক লুক্স, অনন্য আজাদ, সৈকত চৌধুরী, সুব্রত শুভ, ক্যামেলিয়া কামাল, রতন (সন্ন্যাসী), সবাক, কৌশিক, পারভেজ আলম, অমি রহমান পিয়াল, শামীমা মিতু, আজম খান, মাহমুদুল হক মুন্সি ওরফে বাঁধন, তন্ময় প্রমুখ। এরা সবাই গত দুই বছর বিদেশে চলে গেছেন। ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ভিসা পেতে বাংলাদেশ বিদ্বেষী অপপ্রচার চালান। তারা বিদেশিদের বুঝাতে সক্ষম হন বাংলাদেশ তাদের জন্য নিরাপদ নয়। জীবন নাশের হুমকিতে রয়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সহায়তা করছে না ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অপপ্রচারে ওই সব দেশ বিশ্বাস করে তাদের ভিসা দেয়। জাতিগত কারণে ওই সব দেশ ইসলামবিদ্বেষী হওয়ায় বাংলাদেশের ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের রক্ষা করা তারা নিজেদের নৈতিক দায়িত্ব মনে করেন। ব্লগাররা আমেরিকা ছাড়াও জার্মানি, ফ্রান্স, সুইজারল্যা-, নেদারল্যা-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যান।
ব্লগ শব্দটি ইংরেজ, যা এক ধরনের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ইংরেজি ব্লগ শব্দটি আবার ওয়েবলগ-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। অনলাইনে ওয়েবলগ শব্দটি ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম ব্যবহার করেন জোম বার্গার। শব্দটার ছোট্ট সংস্করণ ‘ব্লগ’ চালু করেন পিটার মেরহোলজ। ব্লগে যে কেউ মতামত দিতে পারেন। কিন্তু কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ডাক্তারদের মতো ব্লগার কোনো পরিচিত নয়। ব্লগার মানেই ইসলামবিদ্বেষী এমন নয়। সত্যিকার যারা ব্লগার তারা কখনও কারো ধমীয় অনুভূতিতে আঘাত বা কোনো ব্যক্তির সম্মান নষ্ট হয় এই রকম লেখা পোস্ট করেন না। ব্লগারদের ভাষায় যারা ইসলামবিদ্বেষী লিখেন তারা এক ধরনের মানসিক রোগী বা মস্তিষ্ক বিকৃত। তারা লাইম লাইটে আসার জন্য ইসলামবিদ্বেষী হন। কবি-সাহিত্যিকের মতো প্রতিভার অধিকারী না হলেও ব্লগার এক ধরনের লেখক। তারা পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী লেখা লিখতে না পারায় নিজেদের মত প্রকাশ করেন ব্লগে। কিন্তু এই ব্লগাররা আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্নে বিভোগ হয়ে নিজেদের ব্লগার হিসেবে পরিচিত করে তুলতে দেশবিদ্বেষী প্রচারণা শুরু করেছে। সংস্কৃতিসেবী প্রবীণ বুদ্ধিজীবীরা কী এসব দেখছেন না? নাকি ‘দেশ উচ্ছনে যাক; দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হোক, তবুও ব্লগাররা আমেরিকায় যাক’ এমন চিন্তা-ভাবনায় মদমত্ত হয়েছেন?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন