শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

এট্রোপিক রাইনাইটিস বা নাকের ক্ষয়রোগ

অধ্যাপক ডাঃ এম আলমগীর চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

এট্রোপিক রাইনাইটিস এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষয়রোগ যাতে নাকের ঝিল্লী, ঝিল্লীর নিচের অংশ বা তার আশেপাশের হাড় ক্ষয় হয়ে যায়।
এ ক্ষয়রোগের কারণ হলো নাকের রক্তনালী এবং তার আশেপাশের নালীর প্রদাহ যা রক্তসরবরাহে বাধা দেয়। এটি একটি বিশেষ ধরণের রোগ যা বিলম্বে নির্ণয় হয় কারণ এটা একটা ব্যতিক্রমী রোগ এবং রোগী প্রথমে এই সমস্যা নিয়ে জেনারেল ফিজিসিয়ানের কাছে যায়।
কাদের বেশী হয়?
এই রোগটি সাধারণত মহিলাদের বেশী হয়।
কারণসমূহঃ
১। বংশগত
২। অপুষ্টি এবং পুষ্টিহীনতা
৩। নাক এবং সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ
৪। রক্তনালী প্রদাহ
৫। হরমোনজনিত
৬। নাকের হাড়ের অসামঞ্জস্য
৭। ইমিউনোলজিকাল
উপসর্গ এবং চিহ্নসমূহঃ
১। নাক দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না কিন্তু তার আশেপাশের লোকজন দুর্গন্ধ পায়।
২। নাক বন্ধ থাকে যা নাকের একদিকে বা দু’দিকেই হতে পারে এবং এক ধরণের সবুজ, দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসরণ করে।
৩। মাঝে মাঝে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে।
৪। মাথা ব্যথা, নাক ও গলা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
৫। নাকের পরীক্ষায় দেখা যায়, নাকের গহŸর বেশ বড় এবং নাকের ভিতরে সবুজ আস্তরন বা অনেক ক্রাস্ট এ পরিপূর্ণ।
৬। এছাড়া নাকের আশেপাশের মাংসগুলো শুকিয়ে ছোট বা ক্ষয় হয়ে যায়।
৭। নাক দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় বলে রোগীর বিভিন্ন ধরণের সামাজিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ
১। নাক ও সাইনাসের এক্স-রে
২। রক্ত পরীক্ষা সমুহ - রক্তের রুটিন পরীক্ষা ঠউজখ (ভি, ডি, আর, এল)
ঞচঐঅ (টি, পি, এইচ, এ)
রক্তের গøুকোজ
এবং অন্যান্য
৩। এইচ, আই, ভি
৪। নাক ও সাইনাসের সিটি স্ক্যান, নাকের নিঃসৃত রসের কালচার ও সেনসিভিটি পরীক্ষাগুলো উন্নত দেশে নিয়মিত করা হয় কিন্তু আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পরীক্ষাগুলো নিয়মিত ভিত্তিতে করা হয় না।
চিকিৎসাঃ
প্রধানত ঔষধের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা হয়, মাঝে মাঝে এ রোগের জন্য অপারেশনেরও প্রয়োজন হতে পারে যদি তা ঔষধের মাধ্যমে না সারে।
ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসাঃ
১। গিøসারিনের সাথে শতকরা ২৫ ভাগ গøুকোজের মিশ্রণ প্রতিদিন চার ফোঁটা করে দুইনাকের ছিদ্রে দিনে ৩-৪ বার করে দীর্ঘমেয়াদে দেয়া হয়।
২। অ্যালকালাইন দ্রবণ দিয়ে নাকের গহŸর নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়।
৩। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে যখন ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়।
৪। এছাড়া পরিপূরক হিসেবে ভিটামিন দেয়া যেতে পারে।
৫। উপরোক্ত চিকিৎসা ছাড়া ও অন্যান্য চিকিৎসা রয়েছে।
অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমে চিকিৎসাঃ
১। ইয়াংগস অপারেশন (ণড়ঁহম’ং ঙঢ়বৎধঃরড়হ)
২। আরো অন্যান্য সার্জারী আছে।
রোগের পরিনতিঃ
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা পুরোপুরি সারে না, রোগী মানসিক হতাশায় ভোগে। এজন্য রোগীকে এ রোগের বিস্তারিত বোঝাতে হবে। কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় । এবং রোগী স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হলো গিøসারিনে শতকরা ২৫ ভাগ গøুকোজের সারা বছর ব্যবহার করা এতে রোগটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। একজন নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞের অধীনে নিয়মিত চেকআপে থাকলে ভাল হয়।

নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন
বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি বিভাগ
আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
রোড ৮, ধানমন্ডি, ঢাকা, ০১৯১৯ ২২২ ১৮২
ই-মেইলঃ alamgir.chowdhury07@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন