গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মেঘডুমুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার (ল্যাট্রিন) নির্মাণ কাজে লিন্টেলের ৪টি রডের মধ্যে ঢালাইয়ের সময়ে রডের পরিবর্তে এমএস এঙ্গেল একটি ও বাঁশের টুকরা একটি ও দুটি রড ব্যবহার করা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি, শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি ও দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার অনুসন্ধান ও পৃথক পৃথক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত সোমবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এএসএম আরিফ বিল্লাহ ডাকুয়া ও ঠিকাদার আব্দুল খালেক মৃধার বিরুদ্ধে রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. জাকারিয়া কর্তৃক বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৯ এপ্রিল স্থানীয় জনগণের কাছে ওই বিদ্যালয়ে নির্মাণ কাজের অনিয়ম ধরা পড়ে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে নির্মিত শৌচাগারের (ল্যাট্রিন) ছাদ এবং সেপটিক ট্যাংকের আংশিক ভেঙে ফেলা হয়। লিন্টেল ভেঙে ফেলা হলে ২টি রড, একটি এসএম এঙ্গেল ও একটি বাঁশের টুকরা পাওয়া যায়। কিন্তু শৌচাগারের ছাদে ঢালাই ও রড জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল হতে সরবরাহকৃত ডিজাইন ও নকশা মোতাবেক পাওয়া যায়। এ নির্মাণ কাজে সাড়ে ৩ ফুট এঙ্গেল ও সাড়ে ৩ ফুট বাঁশের টুকরা ব্যবহার করায় তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়। অভিযোগটি কয়েকটি টিম তদন্ত করে। এ ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এদিকে এই নির্মাণ কাজে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার শীর্ষক প্রকাশিত ঘটনাটি মূলত পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে গাইবান্ধা জেলার সর্বস্তরের ঠিকাদাররা এই ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত ঠিকাদার এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। এদিকে ঠিকাদাররা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ওই ল্যাট্রিন নির্মাণ কাজ পিডিইপি-৩ প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভিন্ন জেলায় সম্পন্ন করে চলেছে। এ ছাড়া সিডিউল ও বিধিমালা মোতাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী, কার্য-সহকারী এবং অন্যান্য উচ্চ পদস্থ প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে যথাযথ কাজের গুণগতমান রক্ষা করেই সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি ওই স্কুলে কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারকে নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। স্থানীয়ভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পার্শ্ববর্তী কিছু ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। স্থানীয় দুটি গ্রুপের ঝগড়া-বিবাদের জের স্বরূপ কতিপয় লোকজন বিরোধী গ্রুপকে অসুবিধায় ফেলার জন্য কর্মরত একজন মিস্ত্রির সাথে যোগসাজশে ল্যাট্রিন নির্মাণ কাজের কাঁটা লিন্টেলে এক টুকরা বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করে সহকারী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের অজ্ঞাতসারে রাতে লিন্টেলটির ঢালাই কাজটি সম্পন্ন করা হয়। উল্লেখ্য, কাজটি কাঁটা লিন্টেলে সিডিউল অনুযায়ী ১০ এমএম ৩ সুতা করে ৪টি র্৩-র্৬র্ লম্বা রড যার ওজন মাত্র ৪ কেজি রডের প্রয়োজন হয় এবং এর মূল্য ১৪৪ টাকা। ওই ১৪৪ টাকার রডের পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করা কোনো ঠিকাদার বা প্রকৌশলীর পক্ষে কতটুকু বাস্তবসম্মত তা প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই দেখা দিয়েছে বলেই ঠিকাদাররা উল্লেখ করেন। গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০ জন ঠিকাদার স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যটি পাঠ করে খন্দকার ওমর ফারুক সেলু।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন