গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক প্রকৌশলীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ সময় অন্তত দুইজন দগ্ধ ও আগুন নিভাতে এসে আরো পাঁচজন আহত হয়। খবর পেয়ে গাজীপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর ঢাকা-কাপাসিয়া-মনোহরদী সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, গাজীপুরের কাপাসিয়ার তরগাঁও ঋষিপাড়া মোড় এলাকার কফিলউদ্দিনের দ্বিতল বাড়ির নিচ তলার দোকানে সিগারেট ধরানোর সময় পাশে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দ্বিতল বাড়িটি ব্যাপকভাবে ভস্মীভূত হয়। এ সময় চা খেতে আসা সড়ক উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিই কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলী মাসুদ রানা পারভেজ (৩০) আগুনে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। সে পাবনা জেলার আমীনপুর থানার যদুপুর গ্রামের জাকের সরদারের পুত্র। ভবন মালিক কফিল উদ্দিন (৫৫) ও তার কর্মচারী আলমগীর (১৯) আহত হয়েছে। আহতদের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রহমান জানান, আহতরা ১৫ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। কিন্তু আশঙ্কাজনক নয়, তাদের চিকিৎসা চলছে। মৃত ব্যক্তির লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর
জন্য কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দোকানটিতে মুদি মনোহরী-চা, গ্যাস সিলিন্ডার, কেরোসিন, পেট্টোল ও ডিজেল বিক্রয় করা হতো। মাগরিবের নামাজের সময় ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ সময় দোকানে বেশ কয়েকজন ক্রেতা ছিল। কেউ হয়তো সিগারেট ধরানোর সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মাঝে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, এ সময় প্রকৌশলী দোকানের ভিতরে আটকা পড়ে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান। বিস্ফোরণে দোকান ঘরের একটি ওয়াল ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উল্লেখ, উপজেলা সদর রোডসহ যত্রতত্র বিভিন্ন দোকানে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অন্যান্য মালামালের সাথে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় করে। প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা দেদারছে দাহ্য পদার্থ ক্রয়-বিক্রয় করলেও তা দেখবালের কেউ নেই। ভবিষ্যতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দোকানের ইলেকট্রিক সর্টসার্কিট থেকে দোকানে বিক্রির জন্য রক্ষিত পেট্রোল, ডিজেল ও কেরোসিনে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন