স্টাফ রিপোর্টার : রিমান্ডে থাকা সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সঙ্গে নিয়ে তার ইস্কাটন গার্ডেন রোডের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে ডিবি পুলিশ এ অভিযান চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রহমান। এ সময় ডিবির সদস্যরা তার বাসার শয়নকক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি করে বেশ কিছু কাগজপত্র ও শফিক রেহমানের ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে গেছে।
বাসায় তল্লাশি অভিযান শেষে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, শফিক রেহমানের নিজের হেফাজতে রাখা সজীব ওয়াজেদ জয় সংক্রান্ত গোপনীয় কিছু নথিপত্র পাওয়া গেছে। তিনি এসব সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। গোয়েন্দারা তা জব্দ করেছে।
তিনি বলেন, শফিক রেহমান রিমান্ডে স্বীকার করেছেন, তার কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি নিজে না গেলে বাসা থেকে তা উদ্ধার করা যাবে না। সেজন্যে তাকে সঙ্গে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ কনফেডেনশিয়াল নথিপত্র উদ্ধার করে তা জব্দ করেছে।
এদিকে শফিক রেহমানের বাসায় তল্লাশির ঘণ্টাখানেক পর রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, রিমান্ডে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে এফবিআইয়ের কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় দ-িতদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন শফিক রেহমান। জয়কে অপহরণের মাধ্যমে হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে শফিক রেহমান সম্পৃক্ত ছিলেন। বিএনপি নেতা সিজার এফবিআই সদস্যের মাধ্যমে জয় কোথায় থাকত, তার গাড়ি নম্বর, গাড়ির ধরন ও কোথায় কোথায় যেত তা সংগ্রহ করে বাংলাদেশে থাকা ফেডারেল এক্্রপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাহমুদুর রহমানের কাছে পাঠান। ঘটনাস্থল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই অধিকতর তদন্তের জন্য সেখানে গিয়ে তদন্ত করলে আরও বিস্তারিত কিছু পাওয়া যাবে। হত্যা পরিকল্পনার এজাহারে বিএনপির হাইকমান্ড পর্যায়ে কেউ জড়িত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই হাইকমান্ড নেতা তারেক রহমান কি না জানতে চাইলে মনিরুল বলেন, হাইকমান্ড বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে, তা তদন্ত করে বের করা হবে। তারেকের সঙ্গে সিজার অথবা দ-প্রাপ্ত অন্য কারও যোগাযোগ ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের আর কেউ জড়িত আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে ডিবির টিম
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, মামলার তদন্তের জন্য ডিবির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিবির উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ। অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত। ঘটনার সঙ্গে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম। এই ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত কি না, তা মাহমুদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। গত শনিবার ইস্কাটনের বাসা থেকে গ্রেফতার হন যায়যায়দিন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান। এরপর তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি রিমান্ডে আছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন