শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সান্তাহারে বিনোদন স্পর্টে মিলনমেলা

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে সান্তাহারের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এখন দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। ঈদের আনন্দকে স্মরণীয় করে রাখতে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আনন্দের জোয়াড়ে মেতে উঠেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বগুড়ার সান্তাহার পৌর এলাকার বশিপুরে গড়ে উঠা অত্যাধুনিক ও দৃষ্টি নন্দন বিনোদন পার্ক শখের পল্লীতে ঈদ উপলক্ষে এখন দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। ছোট থেকে বড় সাবই যেন মেতে উঠেছে ঈদ উচ্ছ্বাসে। সান্তাহার জনগুরুত্বপূর্ণ শহরে তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় বৃহত্তর এই রেলওয়ে জংশন শহর অন্যান্য শহরের চেয়ে অকেটা পিছিয়ে ছিল। বিনোদন পিপাসীদের যেতে হতো রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরসহ দূর দূরান্তে। তাই আধূনিক ও দৃষ্টি নন্দন এই বিনোদনের ক্ষেত্র তৈরী হওয়ার বৃহত্তম জংশন ও পৌর শহরের সাথে যোগ হলো আরো এক নতুন মাত্রা। সরকারীভাবে এখানে কোনো বিনোদন পার্ক গড়ে না উঠলেও এই সখের পল্লীতে আসা দর্শনার্থীরা এখন বিনোদনের আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় বিনোদন পার্ক শখের পল্লী। ঈদ উপলক্ষে আধুনিক সব রাইডসে বাচ্চাদের চরানোর পাশাপাশি মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে স্ব-পরিবারে সময় কাটাতে পার্কে আসছে হাজারো বিনোদন পিয়াসীরা। জানা যায়, এলাকাবাসীকে সুস্থ, সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে আনন্দ-বিনোদনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২০ই ফেব্রুয়ারী থেকে শখের পল্লী পার্কের কার্যক্রম শুরু হয়। সান্তাহার পৌরসভা এলাকায় বশিপুর গ্রামে প্রায় ৪৫ বিঘা জমিতে নির্মিত পার্কটিতে রয়েছে মিনি চিরিয়াখানা সেখানে দেখা মিলে বানোর, খরগোশ, অষ্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, কাকাতুয়া, লাভবার্ড, বাজুরিকাসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি। এছাড়া আরো রয়েছে সুইমিং পুল, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক কর্নার ও ক্যাবল কার। বাচ্চাদের খেলার জন্য দোলনা, সুপার চেয়ার, পিচ্ছিল, মই, স্পিড বোডে, প্যাডেল বোর্ড, জলপরির ভাস্কর্য, মিনি ট্রেনলাইন যা বাচ্চাদের কাছে অতি জনপ্রিয় সেখানে স্টেশনটির নাম দেয়া আছে ষাটবাড়ী স্টেশন। ভাস্কর্যের মধ্যে বিশালাকারের ঈগল, জলপরি, মৎসকন্যা, পেঙ্গুঈন, হাতি, হরিণ, বাঘ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, জিরাফ, বকসহ ইত্যাদি। দেয়ালে লিখনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ধ্রুবতারা ও শুকতারা নামের কটেজ যা গেষ্টহাউজ হিসেবে ব্যাবহার হয়ে থাকে। এই গেষ্ট হাউজে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে থাকতে পারবেন। পার্শ্বেয় রয়েছে ওয়াক্তিয়া মসজিদ নামাজের সময় হলে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও দর্শনার্থীরাও এখানে নামাজ আদায় করে থাকেন। খাবারের জন্য রয়েছে রেস্টুরেন্ট সহ কনফেকশনারী দোকান। শখের পল্লীর প্রধান আকর্ষণ ‘সুইমিং পুল’। ঈদ উপলক্ষে সুইমিং পুলে প্রচন্ড ভিড় লক্ষ করা গেছে। বগুড়ার কাহালু থেকে আসা উজ্জল হোসেনের সাথে কথা। তিনি জানান, পরিবার নিয়ে এসে মফস্বল শহরের নির্জন পরিবেশ ভিন্ন সাধ ও অত্যাধুনিক রাইডে চড়ে ঈদের আনন্দদের সাথে এই আনন্দ তাই আরো বেশী ভালো লাগছে। তবে কিছু কিছু রাইড আছে যা আমাদের মধ্যবিত্তদের সাধ্যের বাহিরে। যদি কিছু কিছু রাইডসের ফি কম হত তাহলে ভাল হত। তারপরও পরিবারকে নিয়ে এক সাথে ঘুরতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে। কথা হয় রংপুর থেকে আসা মোমেনুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, ঈদের ছুটি পেয়ে পরিবারে সকলে শখের পল্লী পার্ক দেখতে এসেছি। অনেকের কাছে শুনেছিলাম সখের পল্লী খুব সুন্দর পার্ক তাই পরিবারের সবাই ঈদে এখানে এসে আনন্দ উপভোগ করলাম। এখন এখানে অনেক মানুষ এসেছে তাই পরিবারকে নিয়ে এক সাথে ঘুরা অন্য রকম মজা লাগছে। পার্কটি আমাদের কাছে খুবই ভাল লেগেছে। আগামীতে আবার আসব।
‘শখের পল্লী’র সত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম বলেন বাণিজ্যিক ভাবে মুনাফা অর্জন করা আমার লক্ষ নয়। শিশুদের নির্মল আনন্দ দেয়ার জন্যই এই পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। আমি চেষ্টা করছি এই শখের পল্লী পার্ককে আন্তর্জাতিক মানের পার্ক করার চিন্তিা আমার রয়েছে। বিভিন্ন রকমের রাইডের ব্যবস্থার পাশাপাশি দর্শনার্থীর জন্য একটু প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরঘুরির জন্য পার্কের পরিসর বৃদ্ধি করেছি। আমি আশা করি কোনো দর্শনার্থী এখানে এসে নিরাশ হবে না। আমি সাধ্য মত চেষ্টা করছি দর্শনার্থীরা এসে সকল কিছু যেন এক সাথে পায়।
এছারাও ঈদ উপলক্ষে সান্তাহার সাইলো সড়কে ফারিস্তা পার্ক, খামার বাড়ি, কদমা মৎস খামার, রক্তদহ বিল পাড় এলাকাগুলোতেও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পরার মত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন