ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস অভিযোগ করে বলেছে, ফ্রান্স থেকে রাফায়েল যুদ্ধবিমান ক্রয়ে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল (রোববার) কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী ওই অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিগত ইউপিএ সরকার ওইসব যুদ্ধবিমান ক্রয়ের জন্য যে মূল্য নির্ধারণ করেছিল তার তিন গুণেরও বেশি দামে ওই চুক্তি করে এই সরকার দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার ওইসব যুদ্ধবিমান ক্রয়ে অনিল আম্বানিকে বরাত দিয়ে তাদের মুনাফা দেয়ার কাজ করেছে। আগামী ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে মানুষ অবশ্যই এসব ঘটনার জবাব দেবে মোদি সরকারকে। নির্বাচনে মোদি সরকারের দুর্নীতি, দুর্বল অর্থনীতি, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, উপার্জন হ্রাস ইত্যাদি বিষয় উত্থাপন করা হবে।’
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির ক্ষেত্রে দীর্ঘ ৭৮ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের পরিবর্তে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও অনিল আম্বানির সংস্থাকে বরাত দেয়া হল কেন সেই প্রশ্নও উথাপন করেছে কংগ্রেস।
রাফায়েল যুদ্ধবিমান
কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা কপিল সিব্বল বলেছেন, ‘তিনগুণ দামে যুদ্ধবিমান কিনে প্রধানমন্ত্রী ঠিক কী ধরনের জাতীয় স্বার্থ পূরণ করছেন?’
কংগ্রেসের দাবি, ২০১২ সালের মূল্য অনুযায়ী ৩৬টি বিমানের দাম হওয়া উচিত ১৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার যে মূল্যে ৩৬টি বিমান কেনার কথা ঘোষণা করেন সেজন্য সরকারকে অতিরিক্ত ৪১ হাজার ২০৫ কোটি টাকা দিতে হবে। এই বিপুল অঙ্কের অতিরিক্ত অর্থ কেন দিতে হবে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
রাফায়েল ইস্যুতে কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী কেন্দ্রীয় সরকারকে টার্গেট সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আসলে প্রধানমন্ত্রী ওই চুক্তি করেছেন কেবল অনিল আম্বানিকে সুবিধা করে দেয়ার জন্য।’কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য রাফায়েল ক্রয় চুক্তিতে কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে সাফাই দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার কালিয়াচক কলেজের প্রিন্সিপ্যাল ড. নাজিবর রহমান আজ (সোমবার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনটি সাধারণ জিনিস এরসঙ্গে যুক্ত আছে, তা হল দেশের সাধারণ মানুষের অর্থ, জনগণের নিরাপত্তা ও বিভিন্ন সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা। এই তিনটা বিষয়ের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা অবশ্যই দেখতে পাব যে, নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের অর্থ উপযুক্তভাবে ব্যয় করার স্বার্থে এবং আমাদের সংস্থাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে এই বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়া দরকার। সত্যিকারের কী হয়েছে এবং কী হওয়া উচিত ছিল। এবং এটা জনগণের মধ্যে অবশ্যই একটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে ফলে আমরাও সাধারণ জনগণ হিসেবে আমরা চাই ওই বিষয়গুলো আমাদের সামনে স্পষ্টভাবে আসুক যা ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য এবং দেশের আপামর জনসাধারণের জন্য এটা ভালো দিক হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন