শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নিকলীতে পর্যটন কেন্দ্র চান দর্শনার্থীরা

নিকলী (কিশোরগঞ্জ) থেকে মো. হেলাল উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

হাওরের একেবারে কুল ঘেঁষে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার অবস্থান মূল রাস্তা কুর্শা থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ প্রতিরক্ষা দেয়াল। এখন বর্ষা হাওরের বিশাল ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার দৃশ্য আর অবিরাম মুক্ত হাওয়া অবলোকনের জন্য প্রতিদিন নিকলীতে আসছে, আশপাশের উপজেলাসহ দূরদূরান্ত থেকে শত শত ভ্রমণপিপাসু মানুষ। আবার কেউ চাঁদনি রাতে বেড়িবাঁধে বসে কেউবা নৌকায় চড়ে হাওরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন। বর্ষার শুরুতেই স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও দর্শনার্থীরা এ স্থানে আসছেন। বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে যতদূর দেখা যায় শুধুই পানি আর পানি। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি ভেদ করে ভোরের সূর্যোদয়ের দৃশ্য অনেকটা কক্সবাজারের বা কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকতেরি প্রতিরূপ বলে মনে হয়। বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের ভিবিন্ন জেলাসহ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, কটিয়াদি, কুলিয়ারচর, ভৈরব, বাজিতপুর করিমগঞ্জসহ অনেক উপজেলার লোকজন এখনে পিকনিক করতে বেড়িবাঁধে আসছেন। দিন দিন বেড়িবাঁধের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে, দর্শনার্থীদের মধ্যে যারা দূর থেকে গাড়ি নিয়ে আসেন, তাদের কিছু সমস্যার মুখমুখি হতে হয়। কারণ বেড়িবাঁধে পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা না থাকায় গাড়ি পার্কিং সুবিধা নেই এমন কি দর্শনার্থীদের সেবা প্রদানের জন্য কোনো অবকাটামোগত ব্যবস্থা এখনো গড়ে উঠনি। যে কারণে পর্যটক-দর্শনার্থীরা ইচ্ছে থাকা সত্তে¡ও নিকলীতে রাত্রী যাপন করতে পারছেন না। ১৮২৩ সালে থানা এবং ১৯৮৩ সালে উপজেলা উন্নীত করা হয়।
এখানে হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, সরকারি-বেসরকারি নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। হাওরসমৃদ্ধ কিশোরগঞ্জ জেলার কেন্দ্রস্থল ও হাওরের সেরা প্রবেশ পথ বলা হয় নিকলীকে। উপজেলার শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঘোড়াউত্রা নদী আর এ নদী পথে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার মালামাল নদীপথে পরিবহন করে থাকে। সর্বোপরি দেশে শতকরা ৮০ ভাগ ধান ও মৎস্য সম্পদ এ হাওর অঞ্চল থেকে আহরিত হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তা সরবরাহ করা হয়। এ জেলার প্রাচীন ও ঐতিহাসিক নিদর্শনাদির মধ্যে নিকলীর গুরুই শাহী মসজিদ, পাহাড় খার ভিটা, হজরত শাহ গুন (র.) মাজার, ছেত্রার আখড়া (বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থান) ষাটদ্বার লালগোম্বীর আখড়া, চন্দ্রনাথ গোম্বীর আখড়া, হাওড়ের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সড়ক, ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ, যে খানে কয়েক লাখ লোকের সমাবেশ ঘটে। তা ছাড়া হাওরে মাছ ধরা, সাঁতার কাটা নৌকা ভ্রমণ ইত্যাদি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় বিষয়। সরেজমিন পরির্দশনে দেখা যায়, জেলা সদরের সাথে সড়ক পথের যোগাযোগ বর্তমান সময়ে অনেক ভালো। এ ছাড়াও অন্যান্য জেলার সাথে নৌ-পথের যোগাযোগ যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক উন্নত।
হাওর অঞ্চলের প্রাচীন ওঐতিহাসিক নিদর্শনাবলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিষয় যথাযথভাবে প্রচার না হয়ায় এখন পর্যন্ত এ এলাকায় কোনো ধরনের পর্যটক কেন্দ্র গড়ে উঠেনি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারকে হাওর অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং হাওরের বিচিত্র পর্যটন আকর্ষণ বিপণনের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন যাবত বেড়িবাঁধ এলাকায় এক টি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য নিকলীর আলোকিত মানুষ সকলের শ্রদ্ধাভাজন সাবেক সচিব কারার মাহমুদুল হাসান চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমজনতার প্রাণের দাবি, এ এলাকায় একটি পর্যটক কেন্দ্র নির্মাণ করে দর্শনার্থীদের কষ্ট লাগবে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন