শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

পারমাণবিক শক্তি নিরাপত্তায় বিশেষ উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে পারমাণবিক যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। এজন্য পারমাণবিক শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে রিঅ্যাক্টর ফ্যাসিলিটির সেফটি সিস্টেম আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এজন্য ‘সাভার পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন গবেষণা রিঅ্যাক্টর ফ্যাসিলিটির সেফটি সিস্টেমের সমন্বয়সাধন, আধুনিকীকরণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও বর্ধিতকরণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৭৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রিঅ্যাক্টর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সিস্টেমের এজিং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যমান রিঅ্যাক্টরের জীবনকাল প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর বৃদ্ধি করা, নিরাপদভাবে রিঅ্যাক্টর চালনার মাধ্যমে পারমানবিক গবেষণা, রেডিও আইসোটোপ উৎপাদন, জনশক্তি উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ, সেবা প্রদান এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলমান রাখা, সায়েন্টিফিক ভিজিট ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্পেন্ট ফুয়েল স্টোরেজ ফ্যাসিলিটির ডিজাইন এবং রিঅ্যাক্টরের স্ট্রাকচার, সিস্টেম ও কম্পোনেন্টর স্ট্রেস বিষয়ে জ্ঞানার্জন করা এবং রিঅ্যাক্টর চালনা ও বিকিরণ নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যেই প্রস্তাবিত প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতিও চূড়ান্ত। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু করে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন (বাপশক)।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এজন্য বাংলাদেশ এ সম্পর্কিত সকল আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রটোকল ইত্যাদিতে সম্মতি প্রকাশ করে স্বাক্ষর করছে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন-ট্রিগা রিসার্স রিঅ্যাক্টর (বিটিআরআর) ফ্যাসিলিটি জনশক্তি প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, আইসোটোপ উৎপাদন ও বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিটিআরআর এর সেন্টার ফর রিসার্চ রিঅ্যাক্টর (সিআরআর) রিঅ্যাক্টরটি সুষ্ঠুভাবে চালনা, রক্ষণাবেক্ষণসহ এ সম্পর্কিত যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে এবং নিউক্লিয়ার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে মানবসম্পদ তৈরি ও উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেয়া, রিঅ্যাক্টর অপারেটরদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, বিএইসির বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ব্যবহারিক ক্লাস, গবেষণা ও পরীক্ষা এই রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। দেশে বিদ্যমান নিউক্লিয়ার সম্পর্কিত সকল কার্যক্রমের মূল হিসেবে বিটিআরআর ১৯৮৬ সাল থেকে (প্রায় ৩১ বছর) কাজ করে চলছে। রিসার্স রিঅ্যাক্টটির ডিজাইন লাইফ টাইম প্রায় ৩০ বছর হলেও প্রয়োজনীয় স্পেয়ার পার্টস প্রতিস্থাপন, নতুন সিস্টেম সংযোজন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে রিঅ্যাক্টরের কার্যকাল আরও ১৫ থেকে ২০ বছর বৃদ্ধি করা সম্ভব। নিউক্লিয়ার গবেষণা ও অন্যান্য সকল কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য রিসার্স রিঅ্যাক্টর ফ্যাসিলিটিতে নতুন কিছু সিস্টেমের সংযোজন, কিছু সিস্টেমের আধুনিকায়ন,বিভিন্ন সিস্টেমের সংস্কার ও প্রতিস্থাপন, রিঅ্যাক্টর ডিজিটাল কনসোলের আপগ্রেডেশন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে রিঅ্যাক্টরের কার্যকাল ১৫ থেকে ২০ বছর বৃদ্ধির জন্য এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ১ হাজার ৮০০ বর্গমিটার ৬ তলা ভবন নির্মাণ, ১১৫ বর্গমিটার ১ তলা ডিমিনারালাইজড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ, ১৮০ বর্গমিটার স্পেন্ট ফুয়েল স্টোরেজ ভবন, ৪৫ বর্গ মিটার এক তলা ইলেকট্রিক্যাল সাব-স্ট্রেশন, ৪০ বর্গমিটার ২৫০ কেভিএ ডিজেল জেনারেটর ভবন, ৪০ বর্গ মিটার ভেহিক্যাল ও পার্সোনাল পোর্টাল তৈরি, ২৯৭টি বৈদেশিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ২০৬টি স্থানীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ২৮৩টি ফার্নিচার সংগ্রহ এবং বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পারমাণবিক শিক্ষা ও গবেষণা, রেডিও আইসোটোপ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়বে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন