বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আখের বাম্পার ফলন

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) থেকে মো. রিয়াজ : | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম


ভোলার বোরহানউদ্দিনে আখের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষি অফিসের তথ্যমতে ১ শত ৩০ হেক্টর জমিতে ৪৫ মেট্রিক টন আখ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া অনুকূল আবহাওয়া, রোগ-বালাই কম থাকা ও সঠিক পরিচর্চার কারণে আশানুরুপ ফল পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের সরেজমিন বিভাগ চিবিয়ে খাওয়া আখ চাষের উপর চাষীদের স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ সরবারহ করেছে।
আখের বাজার মূল্য কিছুটা চড়া থাকলেও পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই খুশি। এ বছরের বাম্পার ফলনের ফলে এখন থেকেই অনেক কৃষককে আখ চাষের প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। উপজেলার সব এলাকায় আখ চাষ হলেও এর সিংহভাগ বড়মানিকা ও কুতুবা ইউনিয়নের উৎপাদন হয়। বড়মানিকা ইউনিয়নের তিন নাম্বার ওয়ার্ডের বর্গা আখ চাষী ইসহাক, মো. রাশেদ, খোরশেদ আলম, আব্দুল মালেক ও কামাল হোসেন জানান, বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের সরেজমিন বিভাগ গত বছরের পৌষ মাসে রং বিলাস ও অমৃত জাতের বীজ আখ সরবরাহ করেছে। কিন্তু ওই সময় অসময়ের ভারী বৃষ্টিতে প্রায় সব আখ বীজ পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা নিজেরা সংগ্রহ করে সিও-২০৮ জাতের আখ চাষ করেছেন।
আখ চাষী মো. ইসহাক জানান, ৪৪ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে তার ৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুরো ক্ষেত তিনি ঠিকা ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে ফেলেছেন। মো. রাশেদের ৪০ শতাংশে আখ চাষ করে খরচ হয়েছে ৩৮ হাজার টাকা। বিক্রি করেছেন ৮০ হাজার টাকা। ৩২ শতাংশ চাষ করে আব্দুল মালেক ও কামাল হোসেন উভয়ের খরচ পড়েছে ৩৫ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন ৯০ হাজার টাকা।
কুতুবা ইউনিয়নের ছয় নাম্বার ওয়ার্ডের ছোটমানিকা গ্রামের আখ চাষী জামাল দালাল ৪৮ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে খরচ পড়েছে ৪০ হাজার টাকা, বিক্রি নেমেছে ৮৫ হাজার টাকা। ৪০ শতাংশে আখ চাষ করে ৪৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে হাবিব ফরাজীর, বিক্রি নেমেছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। পাশ^বর্তী নিরব মোল্লাা ও হোসেন মোল্লাার আখ চাষের খরচের দ্বিগুণ টাকা উঠে এসেছে।
আখ চাষীরা জানান, যথাসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় তাদের সেচের টাকা বেঁচে গেছে। তবে গত বছরের তুলনায় ঔষধের খরচ বেশী হয়েছে। বড়মানিকা ইউনিয়নের ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, কৃষি অফিসের লোকজন তাদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন। তবে কুতুবা ইউনিয়নের আখ চাষীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পুরো মৌসুমে তারা কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তার দেখা পাননি। কৃষকরা আরো জানান, আখ বিক্রি ছাড়াও প্রতি ৮ শত আখ ক্ষেত থেকে পরিবহনে তুলে দিলে ২ হাজার টাকা করে বাড়তি আয় হয়।
বড়মানিকা ইউনিয়ন অংশের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন জানান, আখ চাষীদের পাশে থেকে সব সহায়তা করা হয়েছে। তবে কুতুবা ইউনিয়ন অংশের অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসিরউদ্দিন ওই এলাকায় না যাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, নিজের বল্কের দ্বায়িত্ব পালন করে সময়ের অভাবে কুতুবা ইউনিয়নের ওই চাষীদের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, আখচাষে ঝুঁকি কম, মূলধন কম কিন্তু লাভ বেশি। এছাড়া একটা পর্যায় পর্যন্ত এর সাথে একাধিক ফসল করা যায়। বর্তমানে চিবিয়ে খাওয়া জাতের আখ চাষকে জনপ্রিয় করতে উদ্ধুদ্ধকরণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরো জানান, কুতুবা ইউনিয়নের কুতুবা ইউনিয়নের ছয় নাম্বার ওয়ার্ডের ছোটমানিকা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন