আমাদের মধ্যে বাত-ব্যথা নিয়ে কিছু ভুল ধারণা আছে, যেমন - শরীরের যে কোন জয়েন্টে বা মাংশপেশীতে ব্যথা হলেই সেটাকে বাতের ব্যথা বলে মনে করে, শুধু তাই নয় এর জন্য নিজেই ফার্মেসী থেকে কিছু ব্যথানাশক ওষুধ নিয়ে সেবন করতে থাকে। যখন ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করে তখন ব্যথা কম থাকে এবং ওষুধের কার্যকারীতা শেষ হয়, তখন আবার ব্যথা অনুভ’ত হয়। এভাবে অনেকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করে চলেছেন, এখানেই শেষ নয় অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়ায় স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও দীর্ঘদিন যাবত সেবন করছে, যার ফলে আক্রান্ত ব্যাক্তি কিডনী, লিভার ও হরমোনজনিত বিভিন্ন প্রকার অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে, এমনকি কিডনী ফেইলর বা লিভার ফেইলর এর মত মারাত্মক রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে, আবার অনেকে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে ক্রমান্বয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছেন।
করণীয়ঃ যে কোন ব্যথা-বেদনাকে অবহেলা না করে দ্রæত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে হবে। অনেকগুলি কারনে এই ধরনের ব্যথা হতে পারে তাই চিকিৎসক রোগীর রোগের বর্ণনা, ক্লিনিক্যাল এক্সামিনেশনের পাশাপাশি কিছু প্যাথলজিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। একই ধরনের উপসর্গ থাকলেও রোগ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে যেমন – রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, গাউটি আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস, অ্যানকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস ইত্যাদি রোগের উপসর্গ কাছাকছি কিন্তু চিকিৎসা ভিন্ন। তাছাড়ও অনেকক্ষেত্রে রেফার্ড পেইন ও হতে পারে যেমন- কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর সমস্যা ঘাড়ে কিন্তু রোগী অসুবিধা বোধ করছে হাতে তেমনী কিছু ক্ষেত্রে রোগীর সমস্যা কোমরে কিন্তু রোগী অসুবিধা বোধ করছে পায়ে, তাই রোগ নির্ণয় করা খুবই জরুরী, সঠিক রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিলে রোগী দ্রæত আরোগ্য লাভ করে এবং অনেকক্ষেত্রে ব্যথানাশক ওষুধ ছাড়াও আধুনিক ফিজিওথেরপি চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যথা ভাল হয়ে যায়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন নয়। নিজেকে ভালবাসুন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযাযী ওষুধ সেবন করুন, সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপন করুন।
ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ
কনসালটেন্ড ও বিভাগীয় প্রধান
প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকের কলেজ ও হাসপাতাল,
চীফ- কনসালটেন্ড, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল
ধানমন্ডি, ঢাকা। মোবাঃ ০১৭৮৭১০৬৭০২
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন