এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে পরিবারে মাথাব্যথা নেই। ইন্টারন্যাশনাল হেডেক সোসাইটি ও সার্ভিকোজেনিক হেডেক সোসাইটির বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ১৮ শতাংশ লোক মাথাব্যথায় ভুগে থাকেন। রোগীরা এই মাথাব্যথা বিভিন্নভাবে চিকিৎসকের কাছে বর্ণনা বা উপস্থাপন করেন। তরুণ-তরুণী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত সবাই মাথাব্যথায় ভুগে থাকেন। আপনারা অবশ্যই জানেন, যুগ যুগ ধরে মানুষ মাথাব্যথায় ভুগে আসছেন। মাথাব্যথা মেডিক্যাল কন্ডিশনের একটি অন্যতম অসুস্থতা। এই মাথাব্যথা থেকে আমরা সবাই মুক্তি পেতে চাই।
বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ প্রায় ৩০০ ধরনের মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। এসবের মধ্যে মানসিক চাপ বা উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তাজনিত মাথাব্যথার ঘটনাই বেশি। এ ছাড়া চোখ, নাক, দাঁত, কান, সাইনাস ও আশপাশের অংশে বিভিন্ন সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা, জ্বর ও সংক্রমণ হতে পারে। তবে কখনো কখনো মাথাব্যথা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকে। মস্তিস্কে সংক্রমণ, রক্তক্ষরণ, টিউমার, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি কারণে মাথাব্যথা হলে অবশ্যই তা গুরুতর সমস্যা বলে গণ্য করতে হবে। অনেকেই আছেন যাদের ব্যথা প্রতিষেধক ওষুধ খেতে খেতে অনীহা ধরে গেছে। তাছাড়া অতিরিক্ত ওষুধ সেবনও শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপায়ে মাথাব্যথা দূর করার কিছু চমকপ্রদ উপায় চলুন জেনে নেই- প্রথমে যতটা সহ্য করা যায় ততটা গরম পানির বালতিতে ২ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। ২ মিনিট পরেই আবার কনকনে ঠান্ডা পানিতে পা ডোবান। এতে করে ত্বকে রক্ত সরবরাহের গতি বাড়বে। শরীরের দরকারি জায়গায় দ্রæত পুষ্টিকর উপাদান পৌঁছাবে, অন্যদিকে দূর হবে দূষিত পদার্থ। এভাবে চলবে বিশ মিনিট। মাথায় সরাসরি বরফ লাগাবেন না, আইসব্যাগে বরফ ভরে মাথাকে বরফ শীতল করা যেতে পারে। পাশাপাশি ঘাড়ে দিতে হবে গরম পানির ভাপ। এক চা চামচ আদাবাটা দিয়ে চা বানিয়ে খেয়ে নিন গরম গরম। মাথা ব্যথা সেরে যাবে নিমিষেই । মাথা ব্যথায় লেবু চা যথেষ্ট উপকারী। এক্ষেত্রে লেবুর চায়ের মাঝে লেবুর চামড়াও কুচি করে মিশিয়ে দিলে উপকার পাবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শরীরে পানির অভাবে মাথা ব্যথা হয়। ব্যথার ভাব দেখা গেলে ঝটপট দুই গøাস ঠান্ডা পানি পান করুন। আর দিনে অন্তত ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পানের অভ্যাস থাকা বালো। তাতে শরীরও ভালো থাকবে আর মাথাও ঠান্ডা থাকবে। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ শাক-সবজিতে রয়েছে অ্যান্টি-স্পাজমোডিক ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (ব্যথানাশক) উপাদান । তাই মাথাব্যথা কমাতে বেশি করে ব্রকলি, পুঁই শাক, পালং শাক, শিম, সয়া দুধ, বাদাম খান। সবশেষে এ সত্যটি মনে রাখুন-মাথা ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাথা ব্যথার মূল কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা করা উচিত।
চিকিৎসক-কলামিস্ট
মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন