অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস একটি মিশ্র গ্রন্থি। আমাদের পেটের ভেতরে লিভারের পাশেই এর অবস্থান। অগ্ন্যাশয় থেকে হরমোন এবং এনজাইম দুই’ই বের হয়। অগ্ন্যাশয়ে থাকে ‘আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস’। আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যানস-এ বিভিন্ন কোষ থাকে। আলফা, বিটা, ডেল্টা এবং পিপি কোষ। এসব কোষ থেকে বিভিন্ন হরমোন বের হয়ে বিভিন্ন কাজ করে। বিটা কোষ থেকে বের হয় ইনসুলিন। ইনসুলিন রক্তের গøুকোজকে শরীরের বিভিন্ন কোষের কাজে লাগাতে প্রয়োজন হয়, ফলে রক্তে গøুকোজের পরিমান কমে নিয়ন্ত্রনের মধ্যে থাকে। আর তাই ইনসুলিনের অভাবে রক্তের গøুকোজ খরচ না হয়ে তা বেড়ে গেলে হয় ডায়াবেটিস।
ডায়াবেটিস প্রধানত ২ ধরনের। টাইপ ১ এবং টাইপ ২। টাইপ ১ এ সব বিটা কোষ নষ্ট হয়ে যায়। টাইপ ২ এর শেষের দিকেও বিটা কোষ নিঃশেষ হয়ে যায়। তখন ইনসুলিন ছাড়া আর কোন সুযোগ থাকেনা। মুখে খাবার ওষুধ এসময় কাজ করেনা।
বর্তমানে তাই উন্নত দেশে আইলেট ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। মৃত ব্যক্তির অগ্ন্যাশয় থেকে আইলেট সংগ্রহ করা হয়। তারপর তা পোর্টাল ভেইন বা শিরায় ইনজেকশন করে দেয়া হয়। ফলে কোষগুলো পোর্টাল ভেইন দিয়ে লিভারে চলে যায়। তখন সেখান থেকে ইনসুলিন উৎপাদন শুরু হয়। রোগীকে আর বাইরে থেকে ইনসুলিন দেবার প্রয়োজন পড়ে না।
আইলেট ট্রান্সপ্লান্ট এর কিছু সমস্যা আছে। এটি যেহেতু অন্য ব্যক্তির কাছ থেকে নেয়া হয় তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিদ্রোহ করে বসে। নতুন আইলেটকে ধ্বংশ করে দিতে চায় তারা। তাই বিদ্রোহ দমন করার জন্য কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। এসব ওষুধ বেশ দামী এবং পার্শ্বপ্রতিক্রয়া অনেক।
বাইরের দেশে আইলেট ট্রান্সপ্লান্ট হচ্ছে। আশা করা যায় আমাদের দেশেও একসময় নিয়মিত এ ধরনের অপারেশন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন