শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কলমাকান্দায় কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণের পর হত্যা, ঘাতক গ্রেফতার

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৮:৫২ পিএম

অবশেষে তথ্য প্রযুক্তি বদৌলতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে নিখোঁজের তিন মাস পর কিশোরী পারভীন আক্তারের (১৬) নিখোঁজ হওয়ার রহস্যের জট খুলতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
নিখোঁজ পারভীনের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে কলমাকান্দা থানা পুলিশ গত বুধবার রাতে জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির শেখকে (৩৫) ঢাকার রামপুরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তাকে নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ কালে এক পর্যায়ে পারভীন নিখোঁজ হওয়ার প্রকৃত রহস্য পুলিশের সামনে খুলে বলেন।
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত দুর্গাপুর উপজেলার চারিগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে জহিরুল ইসলাম জানান, কলমাকান্দা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলীর মেয়ে পারভীন আক্তারের সাথে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে রং নাম্বারে ফোন কলের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। তারপর ফোনের মাধ্যমেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারভীন আক্তারকে বিয়ের কথা বলে গত জুন মাসের প্রথম দিকে জহিরুল তাকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাসায় রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে। পারভীন বিয়ের জন্য চাপ দিলে সুচতুর জহিরুল নানা টালবাহানায় সময় ক্ষেপন করতে থাকে। এক পর্যায়ে পারভীন জহিরুলের আগের বিয়ে এবং তাদের সংসারে একটি সন্তানের বিষয়টি জানতে পারে। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে প্রচন্ড বাক বিতন্ডা ও অশান্তি শুরু হয়। জহিরুল রোজা ঈদের তিন দিন পর আগের বউকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করবে বলে আশ^াস দিয়ে পারভীনকে ঢাকা থেকে রাতে আধারে তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে পারভনিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর পারভীনের ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ করে দেয়। হত্যার পর গুমের উদ্দেশ্যে তাদের গ্রামের সামনে একটি নিচু জমিতে লাশ মাটির নিচে পুতে রাখে। এর পর দিনই জহিরুল আবার ঢাকায় চলে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পরও পারভীনকে কোথাও না পেয়ে তার সহজ সরল বাবা ওয়াহেদ গত ৩০ জুলাই কলমাকান্দা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ঘটনার প্রায় তিন মাস পর ৪/৫ দিন পূর্বে জহিরুল পারভীনের বন্ধ ফোনটি চালু করলে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান সনাক্ত করে গত বুধবার রাতে ঢাকার রামরপুরা থেকে ফোনসহ জহিরুলকে গ্রেফতার করে। গত বৃহস্পতিবার কলমাকান্দা থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জহিরুল লোম হর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের চারিগাঁও থেকে মাটি খুড়ে ওই কিশোরীর ব্যবহৃত পোশাক ও মাথার চুল উদ্ধার করে। কিন্তু দেহাবশেষ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের ধারণা মাটি খুড়ে ওই কিশোরীর লাশটি শিয়াল কুকুরে খেয়ে ফেলতে পারে।
কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মাজহারুল করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে নিহতের বাবা ওয়াহেদ বাদী হয়ে শুক্রবার দুপুরে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত জহিরুল শুক্রবার নেত্রকোনা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি প্রদান করেন।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন