বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

হিমাগারের অতিরিক্ত ভাড়া

তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাজশাহীর তানোরে বস্তাপ্রতি হিমাগার মালিকদের অতিরিক্ত ভাড়া এবং বেপরোয়া সুদের হারে চরম দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হিমাগারে আলু রাখা চাষিরা। হিমাগার মালিকদের বেপরোয়া সিন্ডিকেটের কাছে একপ্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছেন আলুচাষিরা। মালিকদের এমন সিন্ডিকেটের কারণে লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে উচ্চ আদালত থেকে ৫০ কেজি বস্তার নির্দেশনা দেয়। সেই মোতাবেক এবারই প্রথম বারের মত হিমাগার মালিকরা ৫০ কেজি বস্তায় আলু রাখেন। যে চাষিরা হিমাগারের বস্তায় ৫০ কেজি আলু রেখেছেন বের করার সময় সে আলু ২ থেকে ৩ কেজি করে কম হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বিগত বছর গুলোতে হিমাগারে ৮৫ থেকে ৯০ কেজি করে আলু রাখা হত। ভাড়া ধরা হত ৩শ’ ৬৫ টাকা করে বস্তাপ্রতি। কিন্তু এবারে ৫০ কেজির বস্তায় ভাড়া ধরা হয়েছে ২শ’ ৬৫ টাকা করে প্রতি বস্তায়। অবশ্য প্রথম দিকে হিমাগার মালিকরা ভাড়া কমের কথা বলে আলু নেন হিমাগারে। কিন্তু আলু নেবার পর ২শ’ ৬৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে। এতেই বেকায়দায় পড়ে যান আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
একাধিক আলু চাষিরা জানান, আলু নেবার সময় হিমাগার মালিকরা বলেছিল বিগত সময়ে যে ভাড়া নেয়া হত তার আনুপাতিক হারে ভাড়া নেয়া হবে। কিন্তু হিমাগার মালিকরা চাষিদের জিম্মি করে ৫০ কেজির বস্তায় ভাড়া নিচ্ছে ২শ’ ৬৫ টাকা করে। আবার যারা হিমাগারের বস্তায় আলু রেখেছেন তাদের আলু ২ থেকে ৩ কেজি করে কম হচ্ছে। আবার অনেকের বেশির ভাগ পচা আলু বের হচ্ছে। অবস্থাটা এমন যে হিমাগারের কাছে আলু রাখা ব্যক্তিরা চরম ভাবে জিম্মি।
এদিকে অনেক চাষি নিজের নামে আলু রাখতে পারেনা অন্যের বুকিংয়ে আলু রাখেন। তারা হিমাগারে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের সাথে যোগসাজস করে আলু বিক্রি করে দিলেও যার আলু সে বুঝতেই পারেনা এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। যেন সিন্ডিকেট ছাড়া আলু কেনা বেচাই হয়না। আবার ক্রেতাদের কাছে একপ্রকার জিম্মি চাষিরা।
আবার সরকারের নীতিমালা লঙ্ঘন করে অধিক সুদে হিমাগার মালিকরা দিয়ে থাকেন ঋণ। নীতিমালায় ৯% এর ঊর্ধ্বে সুদ নেয়া যাবেনা উল্লেখ থাকলেও হিমাগার মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ১৮% থেকে ২২% পর্যন্ত সুদ আদায় করছেন ।
লছিরামপুর গ্রামের এনামুল রহমান হিমাগারে আলু রেখেছেন ২ হাজার বস্তা। আকচা গ্রামের মিরাজ আমান হিমাগারে আলু রেখেছেন ২শ’ ৫০ বস্তার মত। শুধু এরা না যারাই আলু রেখেছেন তানোর উপজেলার ৫টি হিমাগারে ভাড়া ও অতিরিক্ত সুদের হারে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন আলু রাখা একাধিক চাষিরা।
তারা আরো বলেন, এক বিঘা জমিতে আলু রোপন থেকে শুরু করে উত্তোলন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে খরচ হয়। কৃষকের রক্তঘামের ফসল নিয়ে ছিনিমিনি হলেও কৃষি বিভাগের বা প্রশাসনের কোন ধরনের নজরদারি নেই। কৃষকের রক্তঘামের ফসল নিয়ে শিল্পপতিরা হচ্ছেন কোটিপতি । আর যে কৃষক ঋণ মহাজন করে ফসল উৎপাদন করলেন তাদেরকে বসতে হচ্ছে পথে।
এনিয়ে রহমান হিমাগারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হিমাগার এসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী বলেন, এসব বিষয়ে কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন