দেশ-বিদেশে মা-বোনরা রান্না করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই আগুনে দগ্ধ হন। এ ছাড়াও কাপড় আয়রন করতে গিয়ে বা গরম পানিতে পুড়েও দগ্ধ হচ্ছেন বাড়ির অন্যান্যরা।
অসচেতনতায় হোক বা অসাবধানে হোক আগুনের নীল ছোবলে প্রাণহানীসহ সর্বস্বান্ত হচ্ছে মানুষ। আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে মানুষ আগুনে দগ্ধ হন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানেন না পুড়ে গেলে কী করতে হবে। আর কি করলে আরাম মিলবে। অধিকাংশ সময় বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারনার কারণে এটা ওটা করে পোড়ার ক্ষত আরও বাড়িয়ে ফেলেন অনেকে।
সাধারণত শীতকালে আগুনে পোড়া রোগী বেশি দেখা যায়। আসলে এই দুর্ঘটনা শীতকাল বাদেও বছরের অন্যান্য সময়ও হয়। তবে শীতের সময় একটু বেশি রোগী আসে। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের দেশের অনেক মানুষ এখনও শীতার্ত থাকেন। যাদের পর্যাপ্ত পরিমানের শীতের কাপড় থাকে না। এছাড়াও গ্রামের ও শহরের কিছু গরীব মানুষদের মধ্যে একটা অভ্যাস আছে তারা আগুন জ্বালিয়ে তাপ নেয়। এ কারণেও অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শুধু আগুনে পোড়া রোগীই যে আসছে তা কিন্তু নয়, গরম পানিতে দগ্ধ রোগীও আসে। এ সময়টাতে রান্না ঘরে বা গরম পানিতে দগ্ধ রোগীর সংখ্যাটাই বেশি। কারণ অনেকেই আছেন যারা পানি গরম করে গোসল করেন। চুলায় পানি গরম করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ ধরনের রোগী অনেক কষ্ট ভোগ করেন। কষ্টের যন্ত্রনায় রাতের আরামের ঘুম হারাম হয়ে যায়।
এই অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়ে দেশে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হচ্ছেন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন।
ব্যাপক গণসচেতনতামূলক প্রচারণা, যথাযথ নিয়মনীতি অনুসরণ করে সচেতনা বৃদ্ধি করতে পারলে অগ্নিকান্ড কমানো যেতে পারে। গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজে মাইকিং ও নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি করণীয় অগ্নিকান্ড প্রতিরোধে নিয়মিত প্রচার করা জরুরি।
১। গ্রামে-গঞ্জে মাটির চুলা সমতল ভূমিতে করা হয়। রান্না শেষে মা সরে গেলে শিশু এসে খেলারছলে চুলায় হাত দিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়। মাটির চুলাকে
উঁচুস্থানে করতে হবে, যাতে শিশু নাগাল না পায়। অথবা চুলা ভালোভাবে নেভাতে হবে।
২। রান্না ঘরের বাউন্ডারী দেয়াল দিতে হতে। বাউন্ডারী থাকলে দরজা লাগাতে হবে, যাতে শিশু চুলার কাছে যেতে না পারে।
৩। রান্নাকরা গরম খাবার শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে। যাতে সে হাত দিয়ে আক্রান্ত না হয়।
৪। রান্নাঘরে বসে রান্নার সময় মহিলাদের শরীরে কাপড় সাবধানে রাখতে হবে, যাতে আগুনের কোন স্পর্শ না লাগে।
৫। শীতকালে সাবধানে আগুন পোহাতে হবে, শেষে ভালোভাবে আগুন নেভাতে হবে, যাতে শিশুরা খেলতে গিয়ে দগ্ধ না হয়।
৬। রাতের বেলা ঘরে মোমবাতি, মশার কয়েল ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। এ থেকেও অগুনের সূত্রাপাত হতে পারে।
৭। আমাদের অনেকেরই গরম পানিতে গোসলের অভ্যাস আছে। গরম পানি বহনের সময় পাতিলে বহন না করে বালতিতে বহন করতে হবে।
৮। চুলা থেকে পাতিল নামানোর সময় শাড়ি বা ওড়নার আচঁল ব্যাবহার না করে ভিন্ন মোটো কাপড় ব্যাবহার করা নিরাপদ।
৯। বিদ্যুতের তারের লোড পরীক্ষা না করে অতিরিক্ত কানেকশন না দেয়া। এতে করে তার গরম হয়ে আগুনের সূত্রাপাত হতে পারে।
১০। বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ হতে বিরত থাকা। দক্ষ বিদ্যুত কর্মী ছাড়া সংযোগ না দেয়া।
১১। প্রতিটি বাড়িতে, এপার্টমেন্টে, অফিসে, কারখানায় বিশেষকরে পোশাক তৈরীর কারখানাতে আগুন নিভানো ও আগুন নিয়ন্ত্রণমূলক প্রস্তুতি অবশ্যই থাকতে হবে।
১২। নারী ও শিশু শ্রমিকদের আগুন প্রতিরোধের ধারণামূলক প্রশিক্ষক কর্মশালা আয়োজন করতে হবে।
১৩। আগুন লাগার সাথে সাথে শ্রমিকদের কারখানা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য সকল দরজা/গেট খুলে দিতে হবে।
১৪। শরীরে আগুন লেগে গেলে মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি দিতে হবে।
১৫। শরীরের অগুন নেভাতে মোটা কাপড় বা কম্বল দিয়ে জড়িয়ে ধরতে হবে। এরপরও জখম হয়ে গেলে চিকিৎসকের সেবা নিতে হবে অপ্রয়োজনীয় তরল, ডিম, পেষ্ট ইত্যদি লাগিয়ে ক্ষতকে আরও বাড়িয়ে তুলবেন না।।
এ ধরনের রোগীকে বিনা পয়সায় নীচের ঠিকানায় হোমিও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
বনিং হোসেন হোমিও ক্লিনিক
৩/১৬, আরামবাগ, (৫/১৮ পুরাতন)
মতিঝিল, ঢাকা ১০০০।
মোবাইল ০১৭৬১০৭৯৭২৯।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন