শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাকশালের প্রেতাত্মা -সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:৩৫ এএম

সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাকশালের প্রেতাত্মা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মুখ বন্ধ করতে ও গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে ফেলতে বির্তকিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়েছে। সরকারের লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি ধামাচাপা দিতেই এই কালো আইন। গণমাধ্যমে অথবা যেকোন মাধ্যমইে যাতে দুর্নীতির কোন খবর প্রকাশিত না হয়, অথবা প্রকাশ করতে না পারেন সেজন্যই এই ন্যাক্কারজনক কালো আইন তৈরী করা হলো। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এই আইনে মানুষের সকল বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। দুর্নীতি ও মানবধিকার লঙ্ঘনের মত অপরাধের বিস্তার লাভ করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এটি সংবিধান বিরোধী একটি আইন। এই কালাকানুনের বিরুদ্ধে দেশবাসীসহ সকল গণমাধ্যমের কর্মী, মুক্ত চিন্তার মানুষদের রুখে দাঁড়ানোর আহবান বিএনপি›র এই নেতা।
রিজভী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবিধানের মূল চেতনা বিশেষ করে মুক্ত চিন্তা, বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে দেশের মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ল। কারণ আইন শৃঙ্খলাবাহিনী এখন বিনা ওয়ারেন্টে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের অফিস ঢুকে তল্লাশীর নামে তান্ডব চালাতে পারবে, কম্পিউটারসহ সকল কিছু সীজ করতে পারবে, যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে। সাধারণ মানুষও এই কালো আইনের থাবা থেকে রেহাই পাবে না। এ আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারা সংবিধান পরিপন্থি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঘিরে সরকার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে ফেলে রাখা হয়েছে। তাকে অন্যায়ভাবে বন্দির উদ্দেশ্য হলো রাজনীতির ময়দান শূণ্য করা। সরকার প্রধান বিরোধী মত ও প্রতিপক্ষকে রাখবেন না এজন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাবন্দি করা হয়েছে। অথচ তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তার কিছুই প্রমাণ করতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাকে দখল করে একাজ করেছেন। এজন্য যে কোন মূল্যে তার ক্ষমতা দরকার, কিন্তু নির্বাচন দরকার নেই, ভোট দরকার নেই। প্রতিপক্ষকে দমন, পর্যদস্ত করে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বন্দুকের নলের মুখে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েই সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় রায় দিয়ে কারাবন্দি করে এক নম্বর মিশন কার্যকর করার পর এখন দুই নম্বর মিশন কার্যকর করতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্টের মামলায় আগামী ১০ অক্টোবর রায় দেয়া হবে। ১৪ বছর ঝুলন্ত রাখার পর নির্বাচনের আগে রায়ের তারিখ ঘোষণা সুপরিকল্পিত নীলনকশারই অংশ। রায় প্রকাশের আগেই সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা নানা ধরণের বক্তব্য রাখছেন। বলছেন-এই রায় প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি বিপাকে পড়বে। তার মানে সরকার জানে কি রায় হতে যাচ্ছে অথবা সরকারই ২১ আগস্ট মামলার রায় লিখে দিচ্ছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তৈমুর আলম খন্দকার, আবুল খায়ের ভূইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন