আর্শ্বিনের শুরুতেই নাটোরের লালপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস সংগ্রহের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে আগাম গাছ ঝুড়ার কাজ শুরু করেছেন গাছিরা। যদিও এই মধুবৃক্ষের রস ও গুড় তৈরি হয়ে থাকে শীতকালে। তবুও আগাম এই মধুবৃক্ষের রস ও গুড় তৈরি করতে ও অধিক দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে অনেক কৃষকই আগাম খেজুরের গাছ ঝুড়তে শুরু করেছেন।
সোমবার সকালে উপজেলার ওয়ালিয়া, ধুপইল, ফুলবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় অনেক গাছিই খেজুরের গাছ ঝুড়ছেন। এ সময় তাদের ব্যস্ততা দেখেও কথা বলতে চাইলে ওয়ালিয়া গ্রামের গাছি আবু বক্কর, রাজু আহম্মেদ, আলম হোসেন, আরিফ হোসেন বলেন, ‘সময় না হলেও আমরা একটু আগামই গাছ ঝুড়ছি। কারণ এ বছর আবহাওয়া টা অনুকূলেই রয়েছে। তা ছাড়াও আগাম রস নামাতে পারলে বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলার সম্ভাবনাময় লাভজনক এই খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে খাতটি বিলুপ্তির পথে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। সকাল থেকে শুরু হয় মধুবৃক্ষ খেজুরের গাছ ঝুড়ার কাজ। কয়েক দিন পরেই এ সকল গাছ থেকে শুরু হবে রস সংগ্রহ। এই মধুবৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে শুরু হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা-পুলি, ক্ষির ও পায়েস। আর কিছুদিন পর থেকে উপজেলার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করবে সুস্বাদু খেজুরের পাটালি গুড়। মধুবৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনে লালপুর উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ অঞ্চলের খেজুর গুড়ের পাটালি রাজশাহী, ঢাকা, চাঁপাই, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। কিছু অসাধু মুনাফালোভী গুড় উৎপাদনকারীর কারণে উপজেলার এই ঐতিহ্য ম্লান হতে চলেছে। বর্তমানে উপজেলার কয়েক হাজার পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল। সরকারের সুদৃষ্টির মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়ন আশা করেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন, ‘উপজেলায় কোনো অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল খেজুরের গুড় উৎপাদন করতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে আছে। পাশাপাশি ভেজাল গুড় উৎপাদন রোধে প্রয়োজনীয় মোবাইল কোর্ট পরিচাল কারা হবে বলে জানান তিনি। লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুল ইসলাম খাঁন বলেন, ‘খেজুরের গাছ এই উপজেলায় অন্যতম সম্পদ যা রক্ষার্তে কৃষি অফিস থেকে কৃষক পর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন