ভারতকে বিদেশী অস্ত্র কেনার আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে বোয়িং কোম্পানী। ফ্রান্সের কাছ থেকে ৩৬টি যুদ্ধ বিমান কেনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সরকার যখন তীব্র সমালোচনার মুখে, তখন এ আহ্বান জানালো বোয়িং।
ফিনান্সিয়ার টাইমসের সাথে এক সাক্ষাতকারে বোয়িং ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রত্যুষ কুমার বলেছেন, “বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ভারতের উচিত তাদের ক্রয় প্রক্রিয়া পুরোপুরি ঢেলে সাজানো।” তিনি বলেন, “বর্তমান প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল এবং নিজের জন্য ক্ষতিকর। তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেন যে, রিলায়েন্সের মতো কোম্পানির সাথে যে তথাকথিক ‘অফসেট চুক্তি’ করতে হয় তার জন্য ভারতের আইনি প্রকিয়া অনেকাংশে দায়ী। অফসেট কর্মসূচি কোন কাজ করেনি, কারণ এটার ব্যবস্থাপনা সঠিক হয়নি। আমরা মনে করি এটা ঢেলে সাজানো উচিত।”
বিশ্বের ৮২টি দেশ অফসেট কর্মসূচির মাধ্যমে বিদেশী প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোকে নিজেদের দেশে বিনিয়োগে বাধ্য করে। কোন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যখন সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রির চূড়ান্ত অনুমোদন পায়, তখন তাদেরকে অবশ্যই স্থানীয় একটি কোম্পানিকে সহকারী হিসেবে বেছে নিতে হবে, যাতে ক্রেতা দেশের অর্থনীতিতে সেটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
বিশ্বব্যাপী এই বাজারের আকার প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের মধ্যে এটা বেড়ে ৪২৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এগুলোর মধ্যে ৪০ শতাংশ চুক্তিই হয়েছে বিভিন্ন মার্কিন কোম্পানির সাথে।
কুমার বলেন, “এখানে চারটি সুনির্দিষ্ট সমস্যা রয়েছে – যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য পার্টনার কোম্পানি খুঁজে বের করা, তাদেরকে অফসেট পার্টনার হিসেবে উত্তীর্ণ হতে দুই বছরব্যাপী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, এটা নিশ্চিত করা যে তারা চুক্তির শর্ত পূরণ করতে পারবে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে সরকারের কাছ থেকে এর ব্যাপারে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া।” তিনি বলেন, “এখানে এত বেশি পেপারওয়ার্ক করতে হয় যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ সব দলিলপত্র বহনের জন্য আলাদা বিশেষ গাড়ি কিনতে হয়েছে।”
সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারার্সের ডিরেক্টর জেনারেল সুব্রত সাহা বলেন: “বিদেশী কোম্পানিগুলোর সমস্যা রয়েছে কারণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সময় দীর্ঘ সময় লাগে। তাদের এতদিনে অফসেট ক্রেডিট দিয়ে দেয়ার কথা কিন্তু অনেকগুলো স্বাক্ষরের অপেক্ষায় পড়ে আছে।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। যদিও স্থানীয় রিপোর্টে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে, সরকার তাদের আইন সংশোধনের জন্য কাজ করছে। এর অধীনে একটা তহবিল গঠন করা হবে যেখানে বিদেশী কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে। এজন্য তাদের আলাদা চুক্তি করতে হবে না। সূত্রঃ টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন