শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রক্তাক্ত মতিহার : শিক্ষাঙ্গন না রণাঙ্গন! ৩৭ বছরে ৪০ খুন

প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৪ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০১৬

নাছরুল ইসলাম নাবিল, রাবি : উত্তরবঙ্গ তথা দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বলা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে। ১৯৫৩ সালে পূর্ব বাংলার রাজশাহী শহরে পদ্মার বুক চিরে মতিহারের সবুজ চত্বরে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। দেশের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও উচ্চশিক্ষা বিস্তারে শিক্ষঙ্গনটির রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। তবে সময়ের পরিক্রমায় ছাত্ররাজনীতির অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে ক্যাম্পাসটি থেকেছে উত্তপ্ত। গত ৩৭ বছরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ছাত্ররাজনীতির করাল গ্রাসে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিণত হয়েছে বদ্ধভূমিতে। দিনকে দিন দীর্র্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। সর্বশেষ গত শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নগরীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাসার সামনে খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী। এর মাত্র একদিন আগে রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার এলাকায় নাইস ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলের নিজ কক্ষে খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান। এ নিয়ে মতিহারের সবুজ ক্যাম্পাসে গত ৩৭ বছরে ৪০ জন খুন হলেন। এদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের ১৬ জন, ছাত্রলীগের ৭জন, জাসদ ছাত্রলীগের ৩ জন, ছাত্রদলের ৩ জন, ছাত্র মৈত্রীর ২ জন, ছাত্র ইউনিয়নের ১ জন রয়েছে। রয়েছেন চার চারজন শিক্ষকও। এছাড়া নিহতদের তালিকায় আছে নিরীহ পত্রিকার হকার, রিক্সাচালক ও সাধারণ ছাত্র। এ সকল ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিলেও আঁধারেই রয়ে গেছে তদন্ত প্রতিবেদন। কোন কোন ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও দলীয় বিবেচনায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে দোষীদের। ফলে এখন পযর্ন্ত কোন ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পায়নি নিহতের পরিবার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতার পরবর্তী দশক ভালোই চলছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে ছাত্র সংঘর্ষে নিহতের সুত্রপাত হয় ১৯৮২ সালে। এরপর রাজনৈতিকভাবে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় ক্যাম্পাসে চলে অস্ত্রের প্রদর্শন। ফলে শিক্ষাঙ্গন রণাঙ্গণে পরিণত হয়। অবৈধ অস্ত্রের মহড়া, টেন্ডারবাজি ও লাশের সারি দীর্ঘ হতে থাকে ক্রমে ক্রমে।
সর্বশেষ গত শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে রাজশাহীর শালবাগানের বটতলা এলাকায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে নিজ বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর মাত্র একদিন আগে শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার এলাকায় নাইস ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলের নিজ কক্ষে খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষর্থী মিজানুর রহমান। এর আগে ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর বিকেল পৌনে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় খুন হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক প্রফেসর ড. শফিউল ইসলাম। শফিউল ইসলাম লালন ভক্ত ছিলেন। তিনি মুক্তমনা ও প্রগতিশীল আদর্শের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। ওই বছরেই এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের তৃতীয় ব্লকের ২৩০ নম্বর রুমে নিজ কক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রুস্তম আলী আকন্দ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চর্তুথ বর্ষের শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। হলে ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় তিনি নিহত হন বলে জানা গেছে। এর আগে ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. এস তাহের আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। পরে দুই দিন পর ৩ ফেব্রুয়ারি বাসার পেছনের সেফটিক ট্যাংক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ভোরে প্রাতঃভ্রমণে বের হলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুরের নিজ বাসভবনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আওয়ামীপন্থি অর্থনীতির প্রফেসর ড. ইউনুসকে হত্যা করা হয়।
২০০৩ সালের ১২ জানুয়ারি কাজলা গেটে আধিপত্য নিয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে সংঘর্ষে শিবির কর্মী সাইফুদ্দীন নিহত হন। ২০০৭ সালের আগস্ট বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে এক রিকশা চালকের মৃত্যু হয়।
২০০৯ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগ, শিবির ও বিনোদপুরের ব্যবসায়ীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান নোমানী নিহত হন।
২০১০ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে শিবির কর্মীরা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে। ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যাকা-ের পর পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে শিবির নেতা হাফিজুর রহমান শাহীন নিহত হয়েছে।
২০১০ সালের ১৫ আগস্ট দলীয় কর্মীদের হাতে ছাত্রলীগ কর্মী নাসরুল্লাহ নাসিম আহত হন। দলীয় কর্মীরা তাকে মারপিটের পর হলের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে একই বছরের ২৩ আগস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এরপর ২০১২ সালের ১৫ জুলাই পদ্মা সেতুর টাকা ভাগাভাগির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সভাপতি আহমেদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু গ্রুপের কর্মীদের বন্দুকযুদ্ধে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল হাসান সোহেল নিহত হন।
এর আগে ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ শিবিরের নবীনবরণ নিয়ে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষে চারজন শিবির কর্মী সাব্বির আহমদ, আব্দুল হামিদ, আইয়ুব আলী ও আব্দুল জব্বার এবং একজন ছাত্রলীগ নেতা মীর মোশতাক এলাহী নিহত হন। ১৯৮৮ সালের ৩১ মে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে শিবির কর্মীরা প্রকাশ্যে রগ কেটে ও খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ছাত্রমৈত্রীর নেতা জামিল আকতার রতনকে হত্যা করে। ১৯৮৮ সালের ১৭ নভেম্বর শিবির নেতা আসলাম হোসাইন নিহত হন। একই বছরের ২৮ নভেম্বর আজগর আলী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের হামলায় মারা যান। ১৯৮৯ সালের ১৮ এপ্রিল ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের হামলায় শিবির নেতা শফিকুল ইসলাম নিহত হন। জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্রপতি হিসাবে রাবি স্টেডিয়াম উদ্বোধন করতে ক্যাম্পাসে আসলে প্রতিবাদী ছাত্রদের সঙ্গে তৎকালীন বিডিআর সদস্যদের সংঘর্ষে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা শাজাহান সিরাজ ও একজন পত্রিকার হকার নিহত হন।
সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালের ২২ জুন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের হামলায় শিবির নেতা খলিলুর রহমান, ১৯৯২ সালের ১৭ মার্চ শিবিরের সাথে সংঘর্ষে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত পিটু, ছাত্রলীগ কর্মী মুহাম্মদ আলী নিহত হন। ওইদিন বুকে গুলিবিদ্ধ হন জাসদ ছাত্রলীগের মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার আলী রুশো। এছাড়া আইভি, নির্মল, লেমন, রুশো, জাফু, ফারুকের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির।
১৯৯২ সালের ১৭ মার্চের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন ৭ মে নতুন বুধপাড়ায় শিবির ক্যাডার মোজাম্মেলের বাড়িতে বোমা তৈরির সময় দলীয় ক্যাডার আজিবরসহ অজ্ঞাতনামা অন্তত চার শিবিরকর্মী নিহত হন। পরে স্থানীয় একটি ডোবা থেকে পুলিশ অনেকগুলো খ-িত হাত-পা উদ্ধার করে। ১৯৯২ সালের ১৯ জুন শিবিরের হামলায় বুধপাড়ার জাসদ নেতা মুকিম গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জুন মুকিমের মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে ছাত্রদল নিয়ন্ত্রিত সোহরাওয়ার্দী হল এবং শিবির নিয়ন্ত্রিত শহীদ শামসুজ্জোহা হলে সংঘর্ষে শিবির কর্মী মুহাম্মদ ইয়াহিয়া নিহত হন। এরপর ১৯৯৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য বনাম ছাত্রশিবির সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা বিশ্বজিৎ, নতুন ও ছাত্র ইউনিয়ন নেতা তপন এবং শিবির নেতা মুস্তাফিজুর রহমান ও রবিউল ইসলাম নিহত হন। একই বছর ১৯ সেপ্টেম্বর শের-ই-বাংলা হলের সামনে ছাত্রমৈত্রীর নেতা জুবায়ের চৌধুরী রিমুকে হাত-পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে শিবিরকর্মীরা। ১৯৯৪ সালে ছাত্রমৈত্রীর নেতা প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতী পরীক্ষা দিতে যাবার সময় তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনের রাস্তায় শিবির কর্মীরা তার হাতের কব্জি কেটে নিয়ে যায়। ১৯৯৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের সাথে সংঘর্ষে শিবির নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী মারা যান। পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী চৌদ্দপাই এলাকায় ঢাকাগামী বাস থেকে নামিয়ে কুপিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে ছাত্রমৈত্রীর নেতা দেবাশীষ ভট্টাচার্য রুপমকে হত্যা করে শিবির কর্মীরা।
১৯৯৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আমানুল¬াহ আমানকে শিবির কর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করে।
এ সকল হত্যাকা-ের তদন্ত প্রতিবেদন আঁধারেই থেকে যায়। এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত কোন হত্যাকা-ের বিচার হয়নি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মিজানউদ্দিন বলেন, ‘যে কোন হত্যাকা-ের সুষ্ঠ বিচার করার দায়িত্ব আদালতের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ অভিযুক্তদের বহিষ্কার করতে পারে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব বেশি করণীয় থাকে না।’
আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাস, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ড. রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রোববার সকাল থেকে শিক্ষক সমিতি, ইংরেজি বিভাগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করেন। বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা। এদিকে শিক্ষক হত্যা সন্দেহে শনিবার রাতে নগরীতে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার তমিজউদ্দিন সরদার আটক যুবককে মহানগর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা জানান। তবে তদন্তের স্বার্থে আটক যুবকের নাম পরিচয় জানাননি মহানগর ডিবি পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে নাম জানা না গেলেও বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে সন্দেহভাজন আটক ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান।
শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে রাবি শিক্ষক সমিতির ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে। রোববার ও সোমবার দুই দিনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের প্রথম দিন পালিত হয়। এর আগে শনিবার রাতে শিক্ষক সমিতির জরুরি মিটিংয়ে এই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষক নেতারা।
এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
মামলা ডিবিতে হস্তান্তর :
শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব বোয়ালিয়া থানা থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। রোববার সকালে ভিসির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার তমিজউদ্দিন সরদার। তিনি বলেন, ‘মামলাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভালভাবে তদন্তের জন্য তা এরই মধ্যে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জবিতে শিক্ষক সমিতির মানব বন্ধন
জবি সংবাদদাতা : অধ্যাপক ড.এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি উদ্যেগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সকাল ১২টার দিকে জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছে জাতির মেরুদ-। তাদের হত্যা করা মানে দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের পথে ধাবিত করার সমান। দেশে মানুষ হত্যা করা একটা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনার রূপ ধারণ করেছে।
খুবি ও কুয়েটে মানববন্ধন
খুলনা ব্যুরো জানায় : ড. এএসএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যার প্রতিবাদে গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ পৃথক ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন।


শাবিতে মানববন্ধন
শাবি সংবাদদাতা : ড. রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের প্রতিবাদে ও ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শাহজালাল বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। গতকাল দুপুর ১২টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।
বিএনপির মহাসচিবের নিন্দা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্কিীকে গতকাল সকালে তাঁর বাড়ির সামনে দুস্কৃতিকারীরা কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বরেন, দেশের ন্যায় বিচার সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় একের পর একহত্যাকা-ের ঘটনা ঘটছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হলো বিশ্ববিদ্যালয়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্ক্ষিকদেরও এখন প্রাণ কেড়ে নেয়া হচ্ছে। ইতোপূর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হত্যাকা-গুলোর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং হত্যার শাস্তি না হওয়ার কারনে দুস্কৃতিকারীরা একের পর এক শিক্ষকদেরকে খুন করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয় স্বার্থে ও বিরোধী দল দমনে ব্যবহার করার কারনে আজ দেশব্যাপী খুন, গুম, অপহরণ গুপ্তহত্যা ও বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ডের প্রকৌপ বৃদ্ধি পাওয়ায় গোটা দেশটাই এখন সহিংসত সন্ত্রাসকবলিত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন