বাউফল (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ত্রৈ মাসিক পাঠ উন্নীত পরীক্ষার নামে বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে পাঠ উন্নীত পরীক্ষার নামে পরীক্ষা নিচ্ছেন শিক্ষকেরা। আর পরীক্ষার ফি ধরা হয়েছে দুইশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত। অভিভাবকদের অভিযোগ বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যই শিক্ষকরা এই পরীক্ষার নামে নতুন ফন্দি করেছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বছরে দুইটি পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশ রয়েছে। প্রথম পরীক্ষা জুন মাসের শেষের দিকে এবং শেষ (বার্ষিক) পরীক্ষা নভেম্বর শেষ সপ্তাহে, না হয় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। অথচ সরকারি ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাউফলে অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ত্রি বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছেন। সূত্রে জানা গেছে, ত্রৈ মাসিক পাঠ উন্নীত ওই পরীক্ষার জন্য ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ২০০, সপ্তম শ্রেণিতে ২৫০, অষ্টম শ্রেণিতে ২৮০, নবম ও দশম শ্রেণিতে ৩০০ টাকা করে ফি আদায় করা হয়। অসময়ে কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই গত শনিবার কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হলেও দশম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীরা ও অষ্টম-নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আংশিক পরীক্ষা বর্জন করে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এসএসসি পরীক্ষার সময় প্রায় একমাস পাঠদান হয়নি। তাছাড়া নির্ধারিত সিলেবাজ শেষ না করেই জোরপূর্বক পরীক্ষা নিতে চাচ্ছে। এ কারণে তারা পরীক্ষা না নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করে। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আবেদন না পড়েই ছিড়ে ফেলেন। ওই সময় সহকারী প্রধান শিক্ষক তাদেরকে গালাগাল দেন। এ কারণে তারা পরীক্ষা বর্জন করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পড়ালেখা না করিয়ে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীরা কি পরীক্ষা দিবে? আর এতে কি লাভ হবে? আসলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে এ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে বলে তারা দাবি করেন। এ বিষয়ে কালাইয়া হায়াতুন্নেচ্ছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘লেখাপড়ার মান উন্নয়নের জন্য এ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।’ তাহলে সরকার কি শিক্ষার্থীদের মানন্নোয়নের বিষয়টি চিন্তা না করেই দুইটি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এরকম পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল হক জানান, ‘এ ধরনের পরীক্ষা নেয়ার কোন নির্দেশ নেই।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন