বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে লাইসেন্স করা অস্ত্রসহ মোট তিনটি দেশি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও তিনটি গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার রাতে পুলিশের একাধিক দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেফতার করে। তবে থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতা আনছার আলী দিহিদারসহ দুজন হত্যার ঘটনার পর দৈবজ্ঞহাটি বাজার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দৈবজ্ঞহাটি বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এবং মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. মশিউর রহমান বলেন, তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড নিহত শুকুর শেখের ময়না তদন্ত করে। নিহতের পিঠে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। যার মধ্যে তিনটি পিঠ থেকে ঢুকে সামনের পেট দিয়ে বের হয়েছে। এছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি দেশি তৈরি রিভলবার, একটি বিদেশি সর্টগান, একটি দেশি তৈরি ওয়ান স্যুটারগান, একটি কুড়াল এবং তিনটি গুলি। এরমধ্যে সর্টগানটি চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলামের লাইসেন্স করা।
নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, সোমবার বিকেলে হামলাকারীরা প্রথমে শুকর শেখ ও বাবলু শেখকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদারের বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ঘরের টিন কেটে ভেতরে ঢুকে তাকে অস্ত্রের মুখে টেনে হিচড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আনছারের স্ত্রী তাতে বাধা দেয়। এসময় তারা তাকে লোহার রড দিয়ে দুপা ভেঙে আনছার আলীকে তুলে নিয়ে যায়। তার বাড়িঘর ভাংচুর করে।
হামলায় আহত দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন তাঁতী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবলু শেখ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, দৈবজ্ঞহাটি ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুলের সাথে স্থানীয়ভাবে আমাদের রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধের জেরে সোমবার বিকেলে চেয়ারম্যান ফকির শহীদুল ইসলামের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা বাজার থেকে আমাদের জোর করে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আমাদের সবাইকে বোরকা পরায়। পরে আমাদের সবাইকে পরিষদ থেকে বাইরে নিয়ে এসে চেয়ারম্যান শহীদুল চিৎকার করে বলতে থাকে আমরা তাকে হত্যা করতে এসেছি। এসময় তার ক্যাডার বাহিনী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিেিসটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদে ডাবল মার্ডারের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে চেয়ারম্যান ও তার তিন সহযোগিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন