তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধে’ লিপ্ত রয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া অর্থনৈতিক যুদ্ধ মোকাবেলা করছে তুরস্ক। একই সাথে তিনি তুর্কি জনগণের প্রতি মার্কিন ডলার এবং আই-ফোনের মত যুক্তরাষ্ট্রের সকল পণ্য বয়কট করার আহ্নবান জানান। তবে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী,এরদোগান প্রশাসন তুর্কি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াল স্ট্রীটের সাহায্য চেয়েছে। এরদোগানের জামাতা তুর্কি অর্থমন্ত্রী আলবাইরাক তুরস্কের অর্থনৈতিক মুদ্রাস্ফীতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মেকিনসে নামক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ভিত্তিক আর্থিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে তিন বছর মেয়াদী একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন। তুর্কি অর্থমন্ত্রীর এমন উদ্যোগে দেশটির এরদোগান বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলে ক্ষেপে উঠেছে। এমনকি সিএইচপি পার্টির ডেপুটি প্রধান ফাইক ওজটারক বলেন, আলবাইরাক রাজনৈতিক কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে সাহায্যের জন্য আমন্ত্রণ জানাননি। প্রসঙ্গত, গত ১৫ বছরের তুলনায় তুর্কি অর্থনীতি ১৮ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছে যা এযাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তুর্কি মুদ্রা লিরা ডলারের বিপরীতে ৪০ শতাংশ মান হারিয়েছিল। দেশটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর দাম দিন দিন বেড়ে চলছে যা তুর্কি অর্থনীতিতে একটি ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এরদোগান জনসম্মুখে তুর্কি অর্থনীতির এ অবস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দোষ দিয়ে থাকেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প যাজক ব্রান্সনকে নিয়ে উভয় দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়নের সূত্র ধরে তুর্কি ধাতু আমদানির উপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। গত মাসে এরদোগান তুর্কি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন- ‘এটি একটি জাতীয় যুদ্ধক্ষেত্র। এখন আমার জনগণের জন্য তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সময় যারা আমাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।’ এরদোগান যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যদি তাদের আই-ফোন থাকে,এখানে সামস্যাং রয়েছে। এমনকি আমাদের নিজস্ব মোবাইল ব্রান্ড রয়েছে।’ বার্তা সংস্থা সাবাহকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তুর্কি অর্থমন্ত্রী আলবাইরাক জানান- মেকিনসে তুর্কি সরকারের নেয়া নতুন আর্থিক প্রোগ্রাম ‘ণঊচ’ কে সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবে। তবে আলবাইরাক মেকিনসে নামক পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগের ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলেন নি। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মেকিনসের নিয়োগের ব্যাপারে এরকম খবর ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় যে- ব্যক্তিগত কোনো প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিলে তা তুর্কি অর্থনীতিকে ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে। এরদোগান আইন প্রণেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি আশা করেন ওয়াশিংটনের সাথে শিঘ্রই তার প্রশাসনের সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। তবে তিনি অক্টোবরের ১২ তারিখে শুনানি হতে যাওয়া ব্রান্সনের মামলাটি আদালতের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে বলেও জানান। এনবিসি নিউজ ডট কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন