বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন এরশাদ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাপার মহাসমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ক্ষমতাসীন দল ছাড়া অন্য দলগুলো প্রচারণার সুযোগ না পাওয়া এবং চলমান নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ রাজনীতি চর্চায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নেই। নিবাচন হবে কি হবে না আমরা জানি না। একটি দল ৭ দফা দিয়েছে।
বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী তা মানা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় আগামী দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কা তো থাকছেই। তবে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা চাই। সরকারকে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। গতকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত জাতীয় জোট আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনমুখী দল। ৩শ আসনে প্রার্থী দেব। সে ভাবেই নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। দলের ১৮ দফা কর্মসূচীকে সংস্কার করে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইসতেহারে প্রদেশ, নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা, সংখ্যালঘুদের জন্য আসন সংরক্ষণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, কৃষকের কল্যাণ সাধন, সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ নীতি গ্রহণ, ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা পদ্ধতির সংশোধন, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ, শান্তি ও সহাবস্থানের রাজনীতি প্রবর্তন, সড়ক নিরাপত্তা, গুচ্ছগ্রাম পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা, পল্লী রেশনিং চালু, শিল্প ও অর্থনীতির অগ্রগতি সাধন ইত্যাদি হবে আমাদের নির্বচনী ইসতেহার।
মূলত দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এরশাদের বক্তব্যের পর সমাবেশ শেষ হয়। এর আগে সকাল ৯টার আগে থেকেই বড় আকারের লাঙ্গল প্রতীক, এরশাদের প্রতিচ্ছবি, হাওলাদারসহ বিভিন্ন নেতার প্রতিচ্ছবি সম্বলিত পোষ্টার নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। কিছু কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতার ছবি সম্বলিত গেঞ্জি গায়েও কর্মীরা হাজির হন। একপর্যায়ে মাঠ ভরে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনের রাস্তা পর্যন্ত মানুষ ছড়িয়ে পড়ে। সমাবেশে বিভিন্ন এলাকার মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা মিছিলসহ যোগ দেন। কেউ কেউ রাস্তার মাঝখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে যানজটের সৃষ্টি করেন। সেলফি ও ছবি তোলেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন গৃহপালিত বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমি আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম, শেখ সিরাজুল ইসলাম, আজম খান, ফখরুল ইমাম, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জোট নেতা ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এমএ মান্নান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক প্রমুখ।
এইচ এম এরশাদ বলেন, ক্ষমতা ছাড়ার পর আমি যে অত্যাচার সহ্য করেছি তা আর কেউ করেনি। নব্বই সালের পর থেকে আমি একদিনও শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি জেলে যাওয়ার ভয়ে। কখন নাকি আমাকে জেলে যেতে হয়। আমি দেশের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পেীছেছি। এটাই আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। আমার জীবন দেশ ও জাতির জন্য উৎসর্গ করলাম। তিনি বলেন, আমরা প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা কায়েম করতে চাই। নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে চাই। উপজেলা পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ রূপ বাস্তবায়ন করতে চাই। সংখ্যালঘুদের সংসদে কোটা, ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই। শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিকে অন্ধকারে নিয়ে যাচ্ছে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, এ মাসের মধ্যে আমরা পার্লামেন্ট বোর্ড গঠন করবো। আমরা জোটগতভাবে তিনশ আসনেই প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিলেও তা হয়তো পরিবর্তন হতে পারে। সে জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। সামনে আমাদের সুযোগ। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি জয়ী হবে। সে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
চঞ্চল মাহমুদ ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ৩:২২ এএম says : 0
এই পরিস্তিতির জন্য আপনি দায়ি
Total Reply(0)
Syed Anwar Hossain ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:২৭ এএম says : 0
ধন্যবাদ এরশাদ সাহেব। আপনার অশঙ্খা সঠিক। জনগণ সংকিত আছে। তাই আপনাকে ঐক্যে যোগদান করে গণতন্ত্র পুররোদ্ধারে ভুমিক নিতে দেখতে চায় জনগণ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন