বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বাম্পার ফলনের পথে আমন

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম | আপডেট : ১২:২৬ এএম, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮

সারাদেশের মাঠে মাঠে এখন সবুজ আর সোনালীর ঢেউ। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন বাম্পার ফলনের পথে রোপা আমন। সব সমস্যা ও দুর্যোগ মোকাবিলা করে কর্মবীর কৃষকরা এখন অনেকটাই স্বস্তিবোধ করছেন। তাদের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক। দুশ্চিন্তা ছাপিয়ে ফিরে আসছে স্বস্তি। আর ক’দিন পরেই মাঠ থেকে রোপা আমন ধান উঠবে কৃষকের ঘরে। কিষাণ-কিষাণীদের প্রস্ততি চলছে উঠোনে উঠোনে। কৃষি কর্মকর্তাদের কথা, রোপা আমন নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় ছিলাম ভরা মৌসুমে আশ্বিনের শেষে ঘুর্ণিঝড় তিতলীর প্রভাবের কারণে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তিতলী রোপা আমনের জন্য অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ হয়েছে। সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা সেচ খরচের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন, ফলনও নিশ্চিত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ চন্ডিদাস কুন্ডু দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মাঠের ধানের চেহারা বলে দিচ্ছে রোপা আমনে এবার আশানুরূপ ফলন হবে। সবখানেই ধানের অবস্থা খুবই ভালো। আবার দেরিতে (নাবি) রোপনকৃত ধানের অবস্থাও ভালো। সবমিলিয়ে আর ক’দিন বাদেই ধান কাটা শুরু হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হয়ে আবাদ হয় ৫৩লাখ ৬০হাজার ২শ’ ১০ হেক্টরে। চাল উৎপাদনের টার্গেট করা হয়েছে ১ কোটি ৫০লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদন খরচ আমনে একেবারেই কম হবে বলে জানিয়েছেন মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। তারা জানান, কৃষকের সেচ ও সার খরচ লাগছে না বললেই চলে। কৃষকরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন ঠিকই তবে তারা জানান, একটা বিষয়ে তারা নিশ্চিত হতে পারছেন না। তা হলো উপযুক্ত মূল্য। কৃষকদের কথা, ‘আমরা তো ধান পাট ও অন্যান্য ফসল আবাদ করি। চাষাবাদে কোনরূপ ফাঁকির সুযোগ নেই। কিন্তু ফসল উৎপাদনের পর মূল্য নিয়ে বেশীরভাগই দুশ্চিন্তা করতে হয়। এবার পাটের ফলনে আমরা খুশি। কিন্তু বাজারে উঠানোর পর হাসি ম্লান হয়ে গেছে। রোপা আমনের ক্ষেত্রে যেন সেটি না হয় সেদিকে নজর দেয়ার জন্য কৃষকরা দাবি জানিয়েছেন। তাদের কথা, আমন আবাদের ব্যাপারে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা তৎপর ঠিকই কিন্তু অনেক এলাকার কোন কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সময়মতো মাঠে নেমে কৃষকদের সমস্যার সমাধানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে অমনোযোগীতার অভিযোগ রয়েছে। জেলা বা উপজেলা সদরে বসে মাঝেমধ্যে ডিউটি করেন, মাঠে নামেন না-এমন অভিযোগও করেছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান জানান, বরাবরই অক্টোবর মাসটা রোপা আমনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপুর্ণ থাকে। আমরা সতর্কতা অবলম্বন করেছি। অতিবৃষ্টি, অকাল বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাপারে আমাদের কোন হাত নেই। তবে রোপা আমনে এই সময়টাতে ‘নলি, বাদামী গাছ ফড়িং, ব্লাস্ট ছত্রাক রোগ হয়ে থাকে। কৃষকরা গত মৌসুমে রোপা আমনে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবার সেটি হয়নি। ফরিদপুরের কানাইডাঙ্গার আজরফ আলী, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কৃষক সমীর উদ্দীন, যশোরের শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের শালকোনা গ্রামের কৃষক মো. আলম ও জসিম উদ্দীসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানালেন, রোপা আমনে এবার ভালো লাভ হবে আশা করছি। এখন থেকেই সরকারকে ধানের বাজারের দিকে নজর দিতে হবে। তাহলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন