শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

মিঠুনের প্রেরণা তুষার-রাজ্জাক

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফুলঝুরি ছুটিয়ে টেস্ট দলে ফেরার দাবি জানিয়েছিলেন তুষার ইমরান। ‘জায়গার অভাব’ দেখিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্বাচকরা তাকে বিবেচনা না করে সুযোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুনকে। সেই মিঠুনই আবার বড় মঞ্চে টিকে থাকতে প্রেরণা নিচ্ছেন তুষারের কাছ থেকে! ব্যাটসম্যান মিঠুনের প্রেরণাদায়ক খুলনা দলের সতীর্থ আব্দুর রাজ্জাকের বোলিংও।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পাবার পর এবার টেস্ট ক্যাপ মাথায় তোলার পালা। সিলেটে সেটি পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। আগামী ৩ নভেম্বর প্রথমবারের মত টেস্ট গড়াবে সিলেট আন্তর্জতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। দেশের ৮ম ভেন্যু হিসেবে নাম লেখাবে ক্রিকেটের অভিজাত ক্লাবে। এমন একটি উপলক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়েও ভাবলেশহীন মিঠুন!

যদিও টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পাওয়াটা তার নিজের কাছেই ছিল বড় চমক। টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছেন আগেই। সবশেষ দুই সিরিজের যা পারফরম্যান্স, তাতে ওয়ানডে দলে জায়গাটা পাকা হতে চলেছে। সহসাই টেস্টে সুযোগ পাওয়ার ছবি আঁকা ছিল না তার মনে। চমক হয়ে আসা সুযোগটাই কাজে লাগাতে চান মিঠুন আরও বেশি তৃপ্তির খোঁজে, ‘(অনেকের মতো) আমারও স্বপ্ন ছিল টেস্ট খেলব। যদিও এখনই টেস্ট দলে ডাক পাব, এটা ভাবিনি। হঠাৎ করেই এসেছে। পত্রিকায় যখন এল, তখনও জানতাম না। পত্রিকা খুব একটা দেখা হয় না। একজন সাংবাদিকই আমাকে ফোন করে খবরটা দেন।’

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রায় ১২ বছর ধরে খেলছেন মিঠুন। ৮৮ ম্যাচ খেলার পর প্রথম ডাক পেলেন টেস্ট দলে, বাংলাদেশের বাস্তবতায় যা বেশ বিরল। ১২ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৪ হাজার ৭৭০। পোক্ত হয়ে টেস্টে আসায় তার নিজের জন্য ভালোই হয়েছে বলে মনে করেন ২৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান, ‘টেস্টে অভিজ্ঞতা অনেক বড় একটি ব্যাপার। টেস্ট খেলতে হলে অনেক অভিজ্ঞতা দরকার হয়। আমি অনেক বছর ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছি। অবশ্যই এটা কাজে দেবে। অন্যান্য দেশে দেখি অনেক অভিজ্ঞ হওয়ার পর টেস্টে আসে। আমারও সেই সুযোগ আসছে। আমি চেষ্টা করব এর যতটা ব্যবহার করা যায়।’

২০০৬ সাল থেকে প্রথম শ্রেণী ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশিরভাগ ম্যাচই খেলেছেন খুলনার হয়ে। তারকায় ঠাসা খুলনা দলে জায়গা পাওয়াও তখন বেশ কঠিন। তবে মিঠুনের জন্যে দিনশেষে এমন লড়াই-ই হয়েছে শেখার মঞ্চ, ‘আমি যখন শুরু করি তখন থেকেই আপনারা জানেন খুলনা দলে সবাই সুপারস্টার। জাতীয় দলের ছয়-সাতজন থাকে। একটা বড় প্লেয়ারের সঙ্গে খেললে অনেক কিছু শেখার থাকে। সেদিক থেকে আমি ভাগ্যবান যে খুলনা দলের হয়ে অনেকদিন থেকে খেলতে পারছি। ওটা অবশ্যই সাহায্য করবে টেস্টে।’

এই সময়ে সবচেয়ে বেশি শিখেছেন যাদের কাছ থেকে আলাদা করে নাম নিলেন তাদের। দেশের প্রথম শ্রেণীতে সবচেয়ে বেশি উইকেট রাজ্জাকের, সবচেয়ে বেশি রান তুষারের। উইকেট, প্রতিপক্ষ ইত্যাদির সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের হয়ত বিস্তর তফাত। কিন্তু প্রতিনিয়ত পারফর্ম করে যাওয়ার যে মানসিকতা তা শিক্ষণীয় মিঠুনের কাছে, ‘উনাদের কাছ থেকে একটা জিনিস শিখেছি। তাদের পারফর্ম করার যে তাগিদটা, প্রত্যেকটা ম্যাচেই। তুষার ভাই যখন ব্যাটিংয়ে নামে যত কঠিন পরিস্থিতি থাকুক উনি কোন না কোনভাবে মানিয়ে নেয়। রাজ ভাইও একই। বোলিংয়ে যেদিন সাহায্য পায় না (উইকেট থেকে) সেদিনও উনি চেষ্টা করে।’

নির্দিষ্ট দিনে রান পাবেন, এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। কিন্তু ভালো করার তাদিগটা সব সময় চূড়ায় রাখার গুণ তুষার-রাজ্জাকদের কাছ থেকে নিয়ে এগুতে চান মিঠুন, ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে শতভাগ চেষ্টা করাটা আমার হাতে আছে। সব সময় সফল হতে পারব সেটা হাতে নাই। একটা ভাল বলে আমি আউট হয়ে যেতে পারি। কাজেই উনাদের মধ্যে যে চেষ্টা দেখেছি ওটা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে।’

রঙিন পোশাকের একটি আকর্ষণ আছে। তবে সাদা পোশাকের আছে চিরন্তন মহিমা। অনেকের কাছে টেস্ট ক্রিকেটই আসল ক্রিকেট। এখানে যার পারফরম্যান্স রঙিন, তিনিই সত্যিকারের ক্রিকেটার। এই ভাবনার অনুসারী মোহাম্মদ মিঠুন। টেস্ট ক্রিকেটের স্বাদই কেবল পূর্ণতা দিতে পারে তার ক্যারিয়ারে। সেই স্বাদ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন টেস্ট দলে প্রথমবার জায়গা পাওয়া ব্যাটসম্যান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন