বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ‘রাজনৈতিক’ -মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ২:০৩ পিএম, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়া হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্যের ক্ষুদ্র অংশের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে এ মামলা করা হয়েছে।
খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে, অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছে সরকার।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে স্বাভাবিক রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যাহত হলে অরাজনৈতিক উগ্রবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে।
ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করেছেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বক্তব্যে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হতে পারে এর লেশ মাত্র নেই। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হীন অপচেষ্টা। রাজনীতি থেকে খালেদাকে দূরে রাখতেই এ মামলা।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়াকে মোকাবেলা করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিয়েছে। সরকার তথা আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হওয়ায় এমন করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক রাখলে অরাজনৈতিক শক্তি প্রাধান্য বিস্তার করবে। কেউ ঠেকাতে পাবে না। কারো জন্য এটা শুভ হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, আমান উল্লাহ আমান, সহ দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার সকালে ঢাকার সিএমএম আদালতে খালেদার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামীপন্থী আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। তারপর বেলা ১১টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ তালুকদারের আদালতে শুনানি শুরু হয়। বাদীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়ে খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন।
এরপর, সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে মামলার শুনানি শেষে ৩ মার্চের মধ্যে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ তালুকদারের আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।
তবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে রাষ্ট্রদ্রোহের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ১২৪-এ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, খালেদা জিয়ার বক্তব্য এ সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। রাষ্ট্রদ্রোহ হয় যদি কেউ সরকার উৎখাতের চেষ্টা করে। যদি কেউ সরকারের প্রতি জনগণকে উসকে দেওয়ার জন্য বক্তৃতা দেয়, তাহলে সেটা রাষ্ট্রদ্রোহ। এখানে খালেদা জিয়া কোনো রাষ্ট্রদ্রোহ করেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন