মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রক্ষণশীল বাণিজ্যনীতি গ্রহণের পরও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সেপ্টেম্বর মাসে দুদেশের মধ্যে পণ্য ও সেবাখাতে ঘাটতির পরিমাণ চার হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসন চীনের কয়েকশ পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করেছে। এতে চীনের হাজার হাজার কোটি ডলারের পণ্য আমেরিকার বাড়তি শুল্কের আওতায় আসে। ট্রাম্প প্রশাসনের এ নীতির কারণে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয় এবং চীনও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। এ যুদ্ধে কেউ কাউকে ছাড় দেয়নি বিন্দুমাত্র। বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার একে অপরের দেশের বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করেছে দেশ দুটি। এতে দুই দেশই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দাবি করে আসছিলেন যে, রফতানিশক্তি হিসেবে চীনের উত্থানের কারণে মার্কিন শ্রমিকরা ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন শুধু চীনা পণ্যের ওপর বাড়তি শূল্ক আরোপ করেনি বরং ইউরোপের বেশকিছু দেশ, কানাডা ও মেক্সিকোর বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নিয়েছে।
তবে, এই যুদ্ধে নিজেদের ক্ষতি বুঝতে পেরে সুর কিছুটা নরম করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিগগিরই আমরা একটা সমাধানে আসব। তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয় আমি চীনের সঙ্গে নতুন চুক্তিটা করতে পারবো এবং সেটা দুই পক্ষের জন্য ন্যায্য চুক্তি হবে।
এর আগে, ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ সহসা বন্ধ না হলে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এদিকে, বাণিজ্য যুদ্ধ বৃদ্ধির আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে ডলারের দর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ আরো বাড়তে পারে এমন আশঙ্কার কারণেই অন্তর্জাতিক অন্যান্য মুদ্রাগুলোর বিপরীতে চড়া হচ্ছে ডলারের বাজার।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চীন মার্কিন পণ্যের ওপর ৬০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রও চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০০ বিলিয়ন ডলারের শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। সূত্র: রয়টার্স।