টঙ্গীর মাঠে হামলার দ্রুত বিচার ও কাকরাইল মসজিদের শূরার নিকট মাঠ হস্তান্তরের দাবিতে উলামায়ে কেরাম ও কাকরাইলের শূরা সদস্যগণের পক্ষ থেকে ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে গতকাল ঢাকাসহ সারাদেশের জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। রাজধানীতে কয়েক হাজার সাথী ভিক্টোরিয়া পার্কে সমাবেশ করে। সেখান থেকে কাকরাইলের মুরব্বী মুফতি আমানুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশ করে। স্মারকলিপিতে বলা হয় তাবলীগের কাজ শুরুর পর ১৯২৪ সাল থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত একাজে কোনো মতবিরোধ ছিলো না। তৃতীয় আমির হযরত এনামুল হাসান রহ. এর ইন্তেকালের পর একক আমির নিয়োগের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয় একাজে কোনো আমির থাকবে না। শূরা ও তাৎক্ষনিক ফয়সালার মাধ্যমে সকল কাজ সম্পাদিত হবে। হযরত এনামুল হাসান রহ. দশজনের যে তালিকা দিয়েছিলেন সে অনুযায়ী ১৯৯৫ থেকে গত বিশ বছর একাজ শূরার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। কিন্তু হঠাৎ মাওলানা সাদ নিজেকে আমির দাবী করায় এসংকট সৃষ্টি হয়েছে। অথচ কোনো পরামর্শ সভাতে তাকে আমির নিযুক্ত করা হয়নি। তাছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় কুরআন সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। এমতবস্থায় হকপন্থী সকল উলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত নেন, মাওলানা সাদ তার শরীয়ত বিরোধী বক্তব্য পত্যাহার ও দারুল উলুম দেওবন্দের আস্থা অর্জন না করা পর্যন্ত তাবলীগের কাজে তার কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না।
এছাড়া গতকাল ঢাকা মুহাম্মদপুরে উলামা ও তাবলীগের সাথীদের উদ্যোগে বাদ আছর মোহাম্মদপুর টাউন হল চত্তরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মাওলানা আবুল কালামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা উমর ফারুক, মুফতী মাহমুদুর রহমান। বক্তারা হামলাকারীদের বিচারসহ কাকরাইলের শূরার নিকট টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ হস্তান্তরের দাবী জানান।
যশোর ব্যুরো জানায়, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে নিরীহ তাবলীগের সার্থী ও উলামাদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে সকালে যশোরে সমাবেশ করছে ইমাম পরিষদ। দুপুরে শহরের দড়াটানায় তাবলীগী মারকাযের নেতা ও অনুসারীরা সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ শেষে যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
জেলা ইমাম পরিষদের সভপতি মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোরীর সভাপতিত্বে সমাবেশ বক্তব্য রাখেন জেলা ইমাম পরিষদের উপদেষ্ঠা মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আমানুলাহ, সদর উপজেলা শাখার ইজাদুল ইসলাম, যশোর জেলা ফতোয়া বোর্ডের সভাপতি মুফতী মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এজাজী, তাবলীগী মারকাযের জেলা শুরা সদস্য মাস্টার নজরুল ইসলাম, মসিহুর রহমান, লোকমান হোসেন, বকচর মাদরাসার নাজির উদ্দীন প্রমুখ।
আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে জানান, হাটহাজারীতে ওলামা মাশায়েক ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পৌর এলাকার ডাক-বাংলো চত্বর থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মুফতি মোহাম্মদ আলী, মুফতি জসিম উদ্দিন, মুফতি শিহাবুদ্দিন, হেফাজতের পৌর শাখার সভাপতি মাওলানা মীর ইদরিস, মাওলানা হাবিবুল্লাহ নদভী, মাওলানা কাজী শফিউল্লাহ, মাওলানা মাহামুদ হোসাইন, মাওলানা জাহাঙ্গীর মেহেদী, মাওলানা এমরান সিকদার ও মাওলানা কামরুল কাসেমী প্রমূখ। বিক্ষোভ মিছিলটি হাটহাজারী পৌরসভার প্রদান প্রদান সড়ক প্রদক্ষণিক করে পুনরাই ডাক বাংলা চত্বরে এসে শেষ হয়। এদিকে গতকাল সোমবার বেলা ১২টার দিকে হাটহাজারী ওলামা পরিষদ ও হাটহাজারীর ওলামা-কেরামরা ঢাকার এ ঘটনার সুষ্ট বিচারের দাবীসহ ৫ দফা দাবীতে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দাউদকান্দি উপজেলা আলমী শুরার উদ্দ্যোগে দাউদকান্দি পৌর সদরে এক প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, সন্ত্রাসীদের মুলহোতা ওয়াসিম, নাসিম, মোসারফ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ সহ সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের করতে হবে। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আনোয়ার উল্লাহ্ , মাওলানা আহ্শান উল্লাহ, মুফতি সোলায়মান, মাওলানা আবু ইউসুফ মুন্সি, মাওলানা নজরুল ইসলাম ফয়েজী, মাওলানা নজির আহমেদ, মাওলানা বদিউজামান, মাওলানা মোবারক হোসেন, মাওলানা আবুবকর জিহাদি, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ প্রমূখ।
ফেনী জেলা সংবাদদাতা জানান, হামলাকারীদের শাস্তি প্রদান ও টঙ্গী ময়দান ওলামায়ে কেরামের তত্তাবধানে বিশ্ব ইজতেমার জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার দাবিতে গতকাল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করেন ফেনী জেলা বাতিল প্রতিরোধ কমিটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন