ভোটের হাওয়ায় সরগরম আশুগঞ্জ-সরাইল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। কে পাচ্ছেন ধানের শীষের টিকিট এ নিয়ে সর্বত্র চলছে গুঞ্জন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চিঠি নিয়ে ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও দুইজনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। মাঠে রয়েছেন সাতজন প্রার্থী। তারা হলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এস এন তরুণ দে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্রদল নেতা আহসান উদ্দিন শিপন ও মো. মোবারক হোসেন।
এদিকে আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে করা পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কি-না তার কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় এবং বিএনপি নেতা আকতার হোসেন ঋণখেলাপি হওয়ায় কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এরা দুইজনেই নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন বলে জানা যায় ।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, কৌশলগত কারণে একটি আসনে একাধিক প্রার্থীকে চিঠি দিয়েছে বলে জানায় দলটি। মনোনয়নের চিঠি গ্রহণের সময় প্রত্যেক প্রার্থীই প্রত্যাহারপত্রে অগ্রিম স্বাক্ষর করে এসেছেন। নির্ধারিত তারিখে মূল প্রার্থী ছাড়া অন্যদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে বলেও জানা যায়। এদের মধ্যে কে ধানের শীষের আসল প্রার্থী, এ নিয়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। চলছে আলাপ-আলোচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ।
উল্লেখ্য, সরাইল ও আশুগঞ্জ দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। আশুগঞ্জ উপজেলায় আটটি এবং সরাইল উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন। দিন যত যাচ্ছে এতে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন সমীকরণ।
বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া বার্ধক্যজনিত কারণ ও এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর থেকে কিছু সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া ছাড়া দলের কোনো কর্মসূচিতে তার উপস্থিতি দেখা যায়নি। দীর্ঘ অনুপস্থিতির ফলে দলের নবীন নেতাকর্মী ও নতুন প্রজন্মের ভোটারদের সাথে তার তেমন যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। ভোটের মাঠে প্রতিযোগিতার দৌড়ে কতটা সফল হবেন তিনি? ভাবছেন দল ও জোটের অনেকেই।
অন্য দিকে বিএনপির হারনো দুর্গ পুনরুদ্ধারে মাঠে রয়েছেন সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম। কেন্দ্রীয় ছাত্র রাজনীতির নেতৃত্ব দেয়ার সুবাধে রাজধানী ঢাকার রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে তার অবদান রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে তিনি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এলাকায় গণসংযোগসহ মাঠে রয়েছেন। অনেক ধারণা, শামীমই পাবেন এই ধানের শীষ। তিনি পেলেই এই হারানো আসনটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। বিএনপির তৃণমূল্য নেতাকর্মীসহ নবীন নেতাকর্মী ও নতুন প্রজন্মের ভোটার নতুন নেতাদেরকে ভোটের মাঠে আগমনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এ ছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা এস এন তরুণ দে, বিএনপি কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক, জননন্দিত নেতা ভাষাসৈনিক অলি আহাদের মেয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদসহ আরো অনেকের নাম আলোচনায় রয়েছে। এ ছাড়া ধানের শীষের মার্কা নিয়ে নির্বাচন করার জন্য ২০ দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের প্রার্থী শাহ মফিজও জোটের কাছে দাবি করছেন আসনটি।
শেষ পর্যন্ত কে পাচ্ছেন ধানের শীষের টিকিট (সরাইল-আশুগঞ্জ-২) আসনে তৃণমূল নেতাকর্মী ও জনগণের দৃষ্টি এখন সেদিকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন