টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মাদ হাফিজ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান আবু ধাবি টেস্ট হতে যাচ্ছে সাদা পোষাকে ৩৮ বছর বয়সীর শেষ আন্তর্জাজিতক ক্রিকেট ম্যাচ। সংক্ষিপ্ত সংস্করনে বাড়তি মনোযোগ দিতেই তার এই ঘোষণা।
শেষের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি হাফিজের। গতকাল দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৩৯ রান। সেখানে হাফিজের কোন অবদান নেই। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের চতুর্থ বলে দ্বিতীয় স্লিপে বোল্টের শিকার হয়ে ফেরেন ‘দ্য প্রফেসর’ খ্যাত এই ব্যাটসম্যান। দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে পাকিস্তান পিছিয়ে ১৩৫ রানে। অবিচ্ছিন্ন ৫৪ রানের জুটিতে ক্রিজে আছেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আজহার আলি (৬২*) ও আসাদ শফিক (২৬*)। এর আগে হারিস সোহেলকে (৩৪) নিয়ে ৬৮ রানের জুটিতে ১৭ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কা সামাল দেন আজহার।
দিনের প্রথম সেশনে হাতের ৩ উইকেটে ৪৫ রান যোগ করে ২৭৪ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। সঙ্গীর অভাবে ৭৭ রানে অপরাজিত থেকে যান আগের দিন ব্যাটে নামা বিজে ওয়াটলিং। তিনটি উইকেটই নেন বিলাল আসিফ। আগের দিন নেন দুটি। গেল অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয়বারের মত ৫ উইকেট শিকার করলেন ২৪ বছর বয়সী স্পিন অলরাউন্ডার।
তার মানে দ্রুততম ২০০ উইকেট শিকারী হতে আরেকটু অপেক্ষা বাড়ল ইয়াসির শাহ’র। দ্বিতীয় ইনিংসে আর দুটি উইকেট পেলেই অনন্য এই রেকর্ড গড়বেন ডানহাতি লেগস্পিনার। পাকিস্তানও চাইবে ইয়াসির যেন দ্রুতই রেকর্ডটা নিজের করে নিতে পারেন। তাহলে যে হাফিজের বিদায়টা জয় দিয়ে রাঙাতে সহজ হয়। হাফিজের সামনেও সুযোগ দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো করে শেষটা স্বরণীয় করে রাখার।
হাফিজের টেস্ট ক্যারিয়ারটা বেশ দীর্ঘ। ২০০৩ সালে করাচিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচ করেন ২ ও ৫০ রান। এরপর দীর্ঘ দেড় দশক সময়ের বিবেচনায় অল্প সময়ই তাকে দেখা যেছে সাদা পোষাকে। মাত্র ৫৪ ম্যাচের পরিসংখ্যান তো তাই-ই বলে। তবে ৩৮-এর উপরে গড় আর ১০ সেঞ্চুরি একজন ওপেনারের সক্ষমতার জয়গানই গায়। একই সময়ে স্পিন বলেও নেন ৫৩ উইকেট।
দুই বছর পর গত অক্টোবরে দলে ফিরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন সেঞ্চুরি। এরপর সাত ইনিংসে কোন ত্রিশোর্ধো ইনিংস নেই। শেষটা হয়ত দেখে ফেলেছিলেন হাফিজ। যে কারণে হঠাৎ এই অবসরের ঘোষণা। গতকাল ম্যাচ শেষে অবসরের কারণটাও স্পষ্ট করেন হাফিজ, ‘আজ আমি টেস্ট ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি যেন সাদা বলের দিকে বাড়তি মনোযোগ দিতে পারি। আমার নজর আসছে বছর বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করার দিকে। ৫৫ ম্যাচে পাকিস্তানকে খেলোয়াড় ও অধিনায়ক হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত।’ আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের জন্য শুভকামনা ব্যক্ত করেন হাফিজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন