বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউরোপে ক্ষেপনাস্ত্র মোতায়েনের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের, সমর্থনে ন্যাটোর বিবৃতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৯:৩৪ পিএম

রাশিয়াকে আগামী দুই মাসের মধ্যে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার আল্টিমেটাম দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আল্টিমেটাম মানা না হলে এই সময়সীমার পর যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে ১৯৮০ সালের মতো সামরিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে। জার্মানির নেতৃত্বে ন্যাটোর দেশগুলোর সাথে মঙ্গলবার ব্রাসেলসের এক বৈঠকে এই ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। খবর রয়টার্স।
এর আগে, গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি আইএনএফ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করছেন। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই মাঝারি পাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বা বাতিল হলে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন হয়ে জার্মানির নেতৃত্বে ন্যাটো দেশগুলো মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে। চুক্তি বাতিল করার ব্যাপারে নমনীয় হতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করার ফলে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়াকে দুই মাসের সময় দিল ওয়াশিংটন। প্রতিদানে, প্রথমবারের মতো ন্যাটোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা পম্পেওর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে যৌথ বিবৃতিতে সাক্ষর দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়া নতুন ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা উন্নয়ন ও স্থাপন করেছে, বস্তুগতভাবে যা আইএনএফ চুক্তি ভঙ্গ করেছে।’
মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, ইউরোপকে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র মুক্ত রাখার চুক্তির বিষয়ে স্বচ্ছ হতে রাশিয়াকে আহ্বান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার দাবি, রাশিয়া ‘কয়েক ব্যাটেলিয়ন এসএসসি-৮ ক্ষেপণাস্ত্র’ প্রস্তুত করেছে। ‘এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার কারনে এগুলো ইউরোপের জন্য সরাসরি হুমকি’, বলেন পম্পেও। এগুলোকে ৯এম৭২৯ নামেও ডাকা হয়। রাশিয়ার কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর জাতীয় নিরাপত্তাকে ব্যাপক হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পম্পেও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সাল থেকে রাশিয়ার কাছে বিষয়টি অন্তত ৩০ বার উত্থাপন করেছেন। কিন্তু রাশিয়া বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে বা উল্টো পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব তথ্যের ভিত্তিতে, রাশিয়া চুক্তি ভঙ্গ করেছে ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও এটি মেনে চলা বন্ধ করে দেবে। ৬০ দিনের মধ্যে রাশিয়া সম্পূর্ণ ও যাচাইযোগ্য ভাবে চুক্তি মেনে না নিলে এই ঘোষণা কার্যকর হবে।’
এদিকে, ন্যাটো’র মহাসচিব জেন্স স্টোল্টেনবার্গ, জানিয়েছেন তারা রাশিয়াকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ত্যাগ করতে সম্মত করার জন্য ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের দাবী প্রত্যাখান করে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে আঘাত হানতে সক্ষম এমন মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কোনও কার্যক্রম নেয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে শীতল যুদ্ধের সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান ও সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ আইএনএফ (ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি) চুক্তির শর্ত নির্ধারণ করেছিলেন। এর ফলে বিশ্বের বৃহত্তম পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ দুই দেশ দ্রুত পরমাণু হামলা চালানোয় তাদের সক্ষমতা কমিয়ে আনে। চুক্তির ফলে ব্রিটেন ও পশ্চিম জার্মানিতে মোতায়েন ইউএস ক্রুজ ও পার্শিং ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ইউরোপে আঘাত হানতে সক্ষম এসএস২০-গুলো সরিয়ে নেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। এই চুক্তিতে ৩১০ থেকে ৩,৪০০ মাইল পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র তৈরি না করতে সম্মত হয় দুই দেশ। সূত্র: সিএনবিসি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন